‘দ্য কুইন’স গ্যাম্বিট’, বাংলা করলে দাঁড়ায় রানির প্যাঁচ। যা দাবা খেলার একটা বিশেষ চাল। ২৪ অক্টোবর সাত পর্বের এই মিনি সিরিজ মুক্তি পায় নেটফ্লিক্সে। আর মাত্র এক মাসে অন্তত ৬ কোটি ২০ লাখ নেটফ্লিক্স ব্যবহারকারী দেখে ফেলেছেন এই সিরিজ। বিশ্বের ৬৩টি দেশে এই সিরিজ রয়েছে নেটফ্লিক্সে সবচেয়ে বেশি দেখা কনটেন্টের ভেতর এক নম্বর অবস্থানে। কুইন’স গ্যাম্বিটের সফলতা নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা।
ওয়েব সিরিজটি মার্কিন লেখক ওয়াল্টার টেভিসের একই নামের ১৯৮৩ সালের উপন্যাস থেকে নেওয়া। এই উপন্যাসের মূল চরিত্র বেথ হারমন। গাড়ি দুর্ঘটনায় মায়ের মৃত্যুর পর ৯ বছরের বেথ বেড়ে ওঠে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে। সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে দাবা খেলা শেখে বেথ। একসময় সে-ই হয়ে ওঠে বিশ্বের সেরা দাবাড়ু। এই দুইয়ের মাঝে রয়েছে মাদকাসক্তিসহ নানা প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে বেথের যুদ্ধ আর উত্থান-পতনের গল্প। সেই গল্পে শক্ত করে বেথের হাত ধরে রেখেছিল পালিত মা।
বেথ হারমনের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া আর্জেন্টাইন-ব্রিটিশ অভিনেত্রী অ্যানা টেইলর জয়। মিয়ামিতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মা ও ‘পাওয়ারবোট রেসার’ বাবার ঘরে জন্ম নেন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট অ্যানা। তিনি যখন খুব ছোট, তখন তাঁর পরিবার বুয়েনস এইরেসে চলে যায়। ৬ বছর বয়সে থিতু হয় লন্ডনে।
‘চিত্রনাট্য পড়ে মনে হলো, আমি বেথ চরিত্রের একাকিত্ব অনুভব করি। তাঁর সংগ্রাম, তাঁর সফলতা—এসব কিছু ছাপিয়ে বেথের নীরবতা, নিঃসঙ্গতা আমাকে স্পর্শ করছিল। আর যখন দুটো মানুষ একই রকম অনুভব করে, তখন কেউ আর একা থাকে না। সেই নিঃসঙ্গতায় বেথের আশ্রয় ছিল দাবা। আর আমার আশ্রয় অভিনয়।’অ্যানা টেইলর জয়
১৬ বছর বয়সে মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও মাত্র এক দশকের মাথায়, এই মুহূর্তে তিনি বিশ্বের অন্যতম আলোচিত অভিনেত্রী। ২৬ বছর বয়সী অ্যানা সিরিজে তাঁর চরিত্রটি সম্পর্কে বলেন, ‘চিত্রনাট্য পড়ে মনে হলো, আমি বেথ চরিত্রের একাকিত্ব অনুভব করি। তাঁর সংগ্রাম, তাঁর সফলতা—এসব কিছু ছাপিয়ে বেথের নীরবতা, নিঃসঙ্গতা আমাকে স্পর্শ করছিল। আর যখন দুটো মানুষ একই রকম অনুভব করে, তখন কেউ আর একা থাকে না। সেই নিঃসঙ্গতায় বেথের আশ্রয় ছিল দাবা। আর আমার আশ্রয় অভিনয়।’
সিরিজটি বানিয়েছেন স্কট ফ্র্যাঙ্ক আর অ্যালান স্কট। এর আগে ‘আউট অব সাইট’ ও ‘লোগান’ ছবির জন্য চিত্রনাট্যকার হিসেবে দুটি অস্কার জিতেছেন স্কট ফ্র্যাঙ্ক। এই চিত্রনাট্যও তাঁরই লেখা। সিরিজের প্রেক্ষাপট ১৯৫০ থেকে ১৯৬০-এর দশক। তখন নারীদের দাবা খেলার চল ছিল না বললেই চলে। ইতিমধ্যে এই সিরিজের একটি দৃশ্য ছোট ও বড় পর্দার স্পোর্টস ড্রামা বিভাগে ‘সেরা খেলার দৃশ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।