বাফটা ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড ২০২০

এখানেও লেগেছে বর্ণ ও লিঙ্গবৈষম্যের কালিমা

জোয়াকিন ফিনিক্স ও রেনে জেলওয়েগার
জোয়াকিন ফিনিক্স ও রেনে জেলওয়েগার

৭৩তম ব্রিটিশ ফিল্ম একাডেমি অ্যাওয়ার্ড (বাফটা) অনুষ্ঠিত হলো গত রোববার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে)। এবারের আয়োজনে সবচেয়ে বেশি বাফটা জিতে নিল স্যাম ম্যান্ডেস পরিচালিত ছবি ১৯১৭। এই একই ছবি সাড়া ফেলেছিল গোল্ডেন গ্লোব আসরেও। এ ছাড়া টড ফিলিপস পরিচালিত জোকার ছবিটিও ছিল বাফটা সন্ধ্যার অন্যতম আলোচিত ছবি। এই ছবির জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আয়োজকদের বেশ কড়া কথা শোনালেন জোয়াকিন ফিনিক্স। বললেন, পুরস্কারের মনোনয়ন প্রক্রিয়াটি এক ধরনের পদ্ধতিগত বৈষম্য ও নিপীড়নের দৃষ্টান্ত।

এ বছর গোল্ডেন গ্লোব, অস্কার ও বাফটা— প্রতিটি পুরস্কারের মনোনয়ন তালিকাই বৈষম্যের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। প্রতিটিতেই লেগেছে বর্ণ ও লিঙ্গবৈষম্যের কালিমা। কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পী, কুশলী ও নির্মাতারা পাননি বড় কোনো বিভাগে মনোনয়ন, সুযোগ পাননি নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও কুশলীরাও। বাফটার মঞ্চে উঠে এই বৈষম্যের ক্ষোভই ঝাড়লেন ‘জোকার’ চরিত্রের অভিনেতা ওয়াকিন ফিনিক্স। তিনি এই ছবির জন্য গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার জিতেছেন, পেয়েছেন সেরা অভিনেতা বিভাগে অস্কার মনোনয়নও।

সাধারণত বাফটা অ্যাওয়ার্ড হাতে পেলে শিল্পীরা আনন্দ আর খুশিতে ভুলে যান সব মান, অভিমান, রাগ ও ক্ষোভ। কিন্তু লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, অ্যাডাম ড্রাইভার, ট্যারন এগারটনের মতো অভিনেতাদের হারিয়ে বাফটা হাতে নিয়েও অনিয়মের কথা বলতে ভোলেননি জোয়াকিন।

তিনি পুরস্কার হাতে নিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের বদলে বলেন, ‘আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। কিন্তু একই সঙ্গে আমার এই অনুভূতি খুব সাংঘর্ষিক একটা অবস্থায় আছে। কারণ আমি যে সৌভাগ্য উপভোগ করতে পারছি, আমার চেয়েও অনেক মেধাবী অভিনেতা তা পারছেন না। ভিন্ন বর্ণের শিল্পী ও কুশলীদের আমরা খুব স্পষ্ট বার্তা দিয়ে দিচ্ছি যে এই ইন্ডাস্ট্রিতে তোমার মেধার কোনো জায়গা নেই, যতই তুমি মেধা ও শ্রম দিয়ে যাও না কেন।’ ক্ষোভ প্রকাশ করে ওয়াকিন আরও বলেন, ‘আমি লজ্জিত যে আমিও এই সমস্যার একটি অংশ। কারণ ইন্ডাস্ট্রির প্রতিটি অংশে যেন সমতা থাকে, এটা নিশ্চিত করার জন্য আমি কখনো প্রত্যক্ষভাবে কোনো অবস্থান নিইনি। কিন্তু এখন সময় এসেছে, এই পদ্ধতিগত বর্ণবৈষম্য ঠেকাতে আমাদের সবার তৎপর হওয়ার।’

একনজরে বিজয়ীরা
সেরা চলচ্চিত্র: ১৯১৭
সেরা ব্রিটিশ চলচ্চিত্র: ১৯১৭
সেরা অভিনেত্রী: রেনে জেলওয়েগার, জুডি
সেরা অভিনেতা: জোয়াকিন ফিনিক্স, জোকার
সেরা পার্শ্বচরিত্রের অভিনেতা: ব্র্যাড পিট, ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন হলিউড
সেরা পার্শ্বচরিত্রের অভিনেত্রী: লরা ডার্ন, ম্যারেজ স্টোরি
সেরা নির্মাতা: স্যাম ম্যান্ডেস, ১৯১৭
ইই রাইজিং স্টার অ্যাওয়ার্ড: মাইকেল ওয়ার্ড
সেরা ভিনদেশি চলচ্চিত্র: প্যারাসাইট
সেরা তথ্যচিত্র: ফর সামা
সেরা অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র: ক্লাউস
সেরা মৌলিক চিত্রনাট্য: প্যারাসাইট
সেরা চিত্রনাট্য (অ্যাডাপ্টেড): জোজো র‌্যাবিট
সেরা আবহ সংগীত: জোকার
সেরা চিত্রগ্রহণ: ১৯১৭
সেরা পোশাক–নকশা: লিটল ওম্যান
সেরা সম্পাদনা: লে ম্যানস ৬৬
সেরা শিল্পনির্দেশনা: ১৯১৭
সেরা রূপ ও কেশসজ্জা: বোম্বশেল
সেরা শব্দগ্রহণ: ১৯১৭
সেরা ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস: ১৯১৭
সেরা শিল্পীনির্বাচন: জোকার
চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদান: অ্যান্ডি সেরকিস