কলকাতার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ‘জেকে-১৯৭১’ সাড়া ফেলেছে। আজ সোমবার বিকেল চারটায় নন্দন-২ প্রেক্ষাগৃহে চলচ্চিত্র দেখানো হয়। ইংরেজি ভাষায় নির্মিত ৮১ মিনিটের এই চলচ্চিত্রের কাহিনি গড়ে উঠেছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোকে নিয়ে। একটি সত্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলচ্চিত্রের কাহিনি গড়ে উঠেছে। এ ছবিই হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ইংরেজি ছবি। আজ সেই চলচ্চিত্র প্রথম প্রদর্শিত হলো।
‘জেকে-১৯৭১’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন বাংলাদেশের তরুণ পরিচালক ফাখরুল আরেফিন খান। এটি ফাখরুলের তৃতীয় ছবি হলেও বিদেশের মাটিতে এটি তাঁর প্রথম ছবির প্রদর্শন।
‘জেকে-১৯৭১’ প্রদর্শনের পর পরিচালক ফাখরুল আবেদিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি খুশি; আমি মুগ্ধ, আনন্দিত। কলকাতার মানুষের এত সাড়া পেয়েছি যে আজ বহু মানুষই প্রেক্ষাগৃহে ঢুকতে পারেনি। ছিল প্রচণ্ড ভিড়। অনেককে প্রেক্ষাগৃহের মেঝেতে বসেও ছবি দেখতে হয়েছে।’
পরিচালক ফাখরুল আরেফিন আরও বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ের একটি সত্য ঘটনাকে নিয়ে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ২৮ বছরের এক ফরাসি যুবক জ্যঁ কুয়ে প্যারিসের ওরলি এয়ারপোর্টে একটি পাকিস্তানি বিমান সংস্থা পিআইএর একটি বিমান ছিনতাই করেন। কুয়ে দাবি করেন, কলকাতার শরণার্থী ক্যাম্পে বাংলাদেশের লাখো লাখো শিশু চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর মুখে পড়েছে। তাঁদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে শিশুদের ২০ টন ওষুধ পাঠাতে হবে। কিন্তু ফরাসি যুবকের বিমান ছিনতাই ঘটনা সফলতা পায়নি। বরং তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিচারে তাঁর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু এ ঘটনার পর ফরাসি সরকার অবশ্য ভারতের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরের অসুস্থ শিশুদের জন্য নিউমোনিয়ার ছয় লাখ ডোজ ওষুধ পাঠায়। আর তাতে অসুস্থ পাঁচ লাখ শিশু প্রাণে বেঁচে যায়। এ সত্য ঘটনাকে নিয়ে তৈরি হয়েছে ছবিটি।
এ ছবির মূল চরিত্র চারটি। এতে ছিনতাইয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সৌরভ শুভ্র দাস, দোভাষীর ভূমিকায় ফারাজ, পাইলটের ভূমিকায় সব্যসাচী এবং কো-পাইলটের ভূমিকায় অভিষেক। এ ছাড়া উড়োজাহাজের এয়ার হোস্টেসের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন চারজন। ছবিটির বেশির ভাগ শুটিং হয়েছে কলকাতায়। ডাবিং হয়েছেও কলকাতায়।