চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তমা মির্জা অর্জন করেছেন জাতীয় পুরস্কারও। বড় পর্দার এই অভিনেত্রীকে তিন বছর পর প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাবে। এরই মধ্যে ঈদে মুক্তি প্রতীক্ষিত সুড়ঙ্গ ছবিটির টিজার, ফার্স্টলুক ও পূর্বাভাস ফেসবুক আর ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে। এসবের পর আলোচনায় আছেন অভিনয়শিল্পী তমা মির্জা। গত বুধবার দুপুরে তাঁর সঙ্গে কথা বলল ‘বিনোদন’
সুড়ঙ্গ ছবির টিজার, ফার্স্টলুক এরপর এবার পূর্বাভাস-ও তো প্রকাশ পেল।
সবার ভালো লেগেছে। সবার কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি। এসব প্রতিক্রিয়া ভীষণ উৎসাহের ও অনুপ্রেরণার। আজ (বুধবার) ছবিটির শেষ দিনের ডাবিং করছি।
পরিচালক রায়হান রাফীর সঙ্গে এটা আপনার কততম কাজ?
তিন কিংবা চার...ওহ না না, পাঁচ নম্বর কাজ। এই ছবির পরিসর অনেক বড়। ধরে ধরে ফ্রেমিং করছিল যখন, তখনই বোঝা যাচ্ছিল, আমরা পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার ছবির শুটিং করছি। তবে রাফীর ক্ষেত্রে বিষয়টা এমন না যে সে ফিল্মের ডিরেকশন দেয় একরকম, আবার যখন ওটিটির দেয় সেটা আরেক রকম। কাজের ধারাবাহিকতা সব জায়গায় একই রকম, কোথাও কোনো ছাড় দেয় না। এই ছবির ক্ষেত্রে বড় ব্যাপার হচ্ছে, আফরান নিশো ভাইয়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা, এটা ভীষণ ভালো। তিনি এত ভালো একজন অভিনেতা, তাঁর জায়গায় তো তিনি স্টার, এত অভিজ্ঞ একজন অভিনেতার সঙ্গে কাজ করছি, তাঁর মধ্যে সেই গাম্ভীর্য, জড়তা কিছুই পাইনি, যদিও তাঁর সঙ্গে প্রথম কাজ।
আপনার কাছে কী মনে হয়, সাধারণত বড় তারকারা ভাবগাম্ভীর্য নিয়ে চলে?
না না, তা বলছি না। আসলে নিশোর সঙ্গে যেহেতু আমার আগে কখনো কাজ হয়নি, সেই জায়গা থেকে একটা চিন্তাভাবনা মনের মধ্যে দাঁড় করা ছিল, হয়তো একটু গম্ভীর হবে...। কিন্তু দেখলাম, তিনি অসম্ভব ভালো ও সহযোগিতাপরায়ণ। প্রতিটা ফ্রেমে ফ্রেমে আলোচনা করেছেন। রাফী দেখিয়ে দিল, এরপরও দেখা গেল, নিশো ভাই আলাদা করে আলোচনা করছেন, “কী করবা তুমি? আচ্ছা ঠিক আছে, তাহলে এভাবে করছি আমরা।” এই যে একটা সহশিল্পীর সাপোর্ট—এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটাই এই ছবির বেস্ট পার্ট। সে কারণেই ছবিটা অন্য ছবির চেয়ে আলাদা হবে।
ছবির কাজ শেষ, এখন মুক্তির অপেক্ষা। এই ছবির কী ঘটনা মনে থাকবে।
সুড়ঙ্গ ছবিতে আমরা দুজন মাসুদ ও ময়না চরিত্রে অভিনয় করেছি। পর্দার মাসুদ ও ময়না হয়ে ওঠার যে জার্নি, এটা সারা জীবন মনে থাকবে।
কেন?
এটা জানার জন্য দর্শকদের ছবিটা দেখতে হবে। ছবি দেখলেই দর্শক বুঝতে পারবে, এই জার্নি কেন আলাদা। একটা কথা স্ট্রংলি বলতে চাই, সবকিছু মিলিয়ে ছবিটা আমার জীবনে বিশেষ হয়ে থাকবে।
কয়েক বছর পর ঈদে আপনার ছবি মুক্তি পাচ্ছে। এই ঈদে আরও বেশ কয়েকটি ছবি মুক্তি ঘোষণা শোনা যাচ্ছে। বিরতির পর ফিরে আসার ঈদ কেমন হবে মনে হচ্ছে?
২০১৯ সালে ‘গহীনের গান’ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল। এরপর ওটিটির জন্য বেশি কাজ করা হয়েছে। বিরতির পর ঈদে ফেরাটা খুব ভালো কিছুই হবে। আমি এবারের ঈদের প্রতিটি ছবি নিয়ে ভীষণ আশাবাদী। এখন পর্যন্ত যেসব ছবি মুক্তির কথা এসেছে, কখনো এটা ভাবি না, শুধু আমার ছবিটাই ভালো যেতে হবে। শুধু ঈদে নয়, ঈদের আগে–পরে যেসব ছবি মুক্তি পাবে, সব ভালো যেতে হবে বলে মনে করছি। সব ছবি যখন ভালো চলবে, ব্যবসা করবে, তখনই আমরা আরও আগ্রহ পাব। আমাদের মনোবলও অনেক বেড়ে যাবে।
বলছিলেন, ডাবিং করছিলেন। ডাবিংয়ের পর্দায় নিজেকে দেখে কেমন লাগছে?
পর্দার ময়নাকে দেখে কখনো হাসি পাচ্ছে, কখনো রাগ হচ্ছে, কখনো চরিত্রটা ইন্টারেস্টিং লাগছে। তবে আমি ডাবিংয়ে খুবই উপভোগ করছি।
কেন হাসি পাচ্ছে, কেন রাগ হচ্ছে?
দর্শক হিসেবে দেখছি তো, কিছু দৃশ্য দেখে এমনটা হচ্ছে। আমার মনে হয় দর্শকেরও একই অনুভূতি হবে।
পরিচালক রায়হান রাফীর সঙ্গে চমৎকার বন্ধুত্বের ব্যাপারটি সবাই জানেন। এই বন্ধুত্বে কাজের সুবিধা হয় নাকি...
একটা তো ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং থাকে। ডিরেক্টরের ভাষা বুঝতে অনেক সহজ হয়। অনেক বেশি ব্রিফিং দিতে হয় না। পরিচালকও তাঁর ভাবনাচিন্তা নির্বিঘ্নে শেয়ার করতে পারে। আমি কিন্তু শুটিং সেটে প্রচুর বকা খাই।
বন্ধুর কাছ থেকেও বকা খেতে হয়?
যখন সেটে থাকি, তখন সে আমার পরিচালক, আমি তাঁর আর্টিস্ট। একদমই আমরা কেউ কাউকে চিনতে চাই না, চিনিও না। আমাদের সেটে যাঁরা শিল্পী থাকেন, তাঁরাও এটা বোঝেন।
বকা খেয়ে কি কখনো কান্না পায়?
অনেক অনেক। এই ছবিতে বকা খেয়ে অনেক মন খারাপ হয়েছে। চোখের কোণে জলও এসেছে। মুখ গোমরা করেও বসে ছিলাম। পরে যখন দৃশ্য দেখেছি, মনে হয়েছে, বকা খাওয়াটা দরকার ছিল।