শিশুশিল্পী হিসেবে শোবিজে যাত্রা শুরু। একসময় সিনেমায়ও কাজ করেছেন অভিনয়শিল্পী আইশা খান, দেড় বছর আগে ওটিটি মাধ্যমে পদার্পণের পর ‘কন্ট্রাক্ট’, ‘কাইজার’-এর মতো আলোচিত সিরিজে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন তিনি। নানা বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
ওটিটি প্ল্যাটফর্মে পদার্পণের দেড় বছরের মধ্যে ‘কন্ট্রাক্ট’, ‘কাইজার’-এর মতো আলোচিত ওয়েব সিরিজে কাজ করেছেন আপনি। দর্শকদের প্রতিক্রিয়া কেমন পেয়েছেন?
কন্ট্রাক্ট-এর প্রতিক্রিয়া ভালো ছিল। সিরিজে অনেক বড় অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে কাজ করেছি। আরিফিন শুভ, শ্যামল মওলা, মমর মতো অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করার সুযোগ পেয়েছি। দর্শকেরা আমাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। এ এমন পরিচয় সিরিজে মঞ্চকাঁপানো অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েছি। অভিনয়ের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে রোজী সিদ্দিকী আন্টি, শ্যামল মওলার কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পেয়েছি। কাইজার সিরিজের সাবা চরিত্রের সঙ্গে ব্যক্তি আইশার আকাশ-পাতাল ফারাক আছে। সেই চরিত্রেও দর্শকেরা আমাকে গ্রহণ করেছে। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।
আপনার ক্যারিয়ারের বাঁকবদলে ওটিটি মাধ্যমের কেমন ভূমিকা দেখছেন?
আমার ক্যারিয়ারের জন্য ৭৫ ভাগ ভাগ্য আর বাকিটা আমার প্রচেষ্টার ওপর নির্ভর করে বলে মনে করি। সিরিজগুলোতে এতগুলো চরিত্রের মধ্যে আমাকে দর্শকেরা আমাকে নিতে পারবে কি না, তা নিয়ে দ্বিধা ছিল। কিন্তু পরে দেখলাম, দর্শকেরা আমাকে গ্রহণ করেছে। এ এমন পরিচয় সিরিজে আমাকে ঘিরে কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। যদি চরিত্রের সঙ্গে মিশে যেতে পারি, তাহলে শুধু ওটিটিতে নয়, যেকোনো মাধ্যমে আমি অ্যাকসেপ্টেবল।
‘আহত ফুলের গল্প’ নামে একটি সিনেমায় দেখা গেছে আপনাকে, সিনেমা নিয়ে কী ভাবছেন?
যে সিনেমাগুলো বিভিন্ন উৎসবে পাঠানো হয়, সে ধরনের সিনেমাগুলোতে কাজের আমার খুব ইচ্ছা ছিল। মাঝে ভালো কয়েকজন নির্মাতার কাছ থেকে সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছি। তাদের কাছ থেকে সময় চেয়ে নিয়েছি। আপাতত সিনেমায় কাজ করতে পারব বলে মনে হয় না। পড়াশোনার চাপ আছে। পড়াশোনার চাপ থেকে বের হওয়ার পর ভালো চিত্রনাট্য, ভালো নির্মাতা পেলে কাজ করব।
কোথায় পড়াশোনা করছেন?
২০২০ সালে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের ফার্মাসি বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছি। কাজের জন্য স্নাতকোত্তর শেষ করতে পারছি না।
অভিনয়ের পাশাপাশি আপনাকে তো উপস্থাপনায়ও দেখা যায়...
২০১৭ সালে মাছরাঙা টেলিভিশনে ‘বিনোদন সারাদিন’-এ উপস্থাপনা শুরু করি। খুব টাইট শিডিউলের মধ্যে আমি কাজটা করি, ফলে অন্য কোথাও কাজ করতে পারছি না। অনুষ্ঠানটি আমি ও মৌসুমী মৌ আপু করি। এখন মাছরাঙা টেলিভিশনের বাইরে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। যদিও দুটি চ্যানেলের সঙ্গে কাজ হচ্ছে। সবকিছু মিলে গেলে হয়তো রিয়েলিটি শো উপস্থাপনা করতে পারি। কিন্তু মনে হয় না কাজ করার সুযোগ হবে। তিন থেকে পাঁচ মাসের চুক্তিভিত্তিক কাজ হলে হয়তো করতে পারব।
ক্যারিয়ার নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
আর বলবেন না ভাই। আ’ম আ ভেরি ব্যাড প্লানার। আমি যখনই পরিকল্পনা করে কোনো কাজ করতে যাই, তখনই অনেক অবস্ট্যাকলস সামনে আসতে থাকে। আমি বুঝে গেছি, পুরো পরিকল্পনা স্রষ্টার হাতে ছেড়ে দিতে হবে। আমি শুধু সিদ্ধান্তটা নিতে পারি। আমি অপেক্ষা করি। যখন কোনো সুযোগ আসে, তখন আমি সিদ্ধান্ত নিই, কাজটা করব কি করব না। তিন বছর ধরে একটা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্চে আমাকে, ‘উপস্থাপনা নাকি অভিনয়, নিজেকে কোথায় দেখতে চাও?’ আমি দুই জায়গাতেই নিজেকে দেখতে চাই, কিন্তু একই সঙ্গে নয়।
শোবিজে আপনার যাত্রা শুরু কীভাবে?
শৈশবে নাচের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। শিশুশিল্পী হিসেবে সাড়ে ৭২ ঘণ্টা নাটকে কাজ করেছিলাম। সেই শুরু, বেশ কয়েকটি নাটকে কাজ করেছি। পরে কলেজ ভর্তির পর আর চালিয়ে যাওয়া হয়নি। কলেজে অভিনয় না করলেও নাচ করতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর আহত ফুলের গল্প সিনেমায় কাজ করেছি। টানা ১৫ দিন কাজ করেছি। এর মাঝে ২০১৬ সালে একটি বিজ্ঞাপন করেছি। ২০২০ সালে ‘ক্লোজআপ কাছে আসার গল্প’তে কাজের মধ্য দিয়ে ফিকশনে যুক্ত হলাম। এরপর কন্ট্রাক্ট দিয়ে ওটিটি মাধ্যমে যাত্রা করেছি।