ছটকু আহমেদের ‘চেতনা’ ছবির মধ্য দিয়ে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু হয় অমিত হাসানের। নায়ক কিংবা খলনায়ক দুই চরিত্রেই সমান জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। ১৯৬৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দিনে টাঙ্গাইলের আদালতপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন এই ঢালিউড অভিনেতা। জন্মদিনে সিনেমা, ক্যারিয়ার ব্যক্তিগত নানা প্রসঙ্গে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।
শুভ জন্মদিন...
ধন্যবাদ (হাসি)
বিশেষ এই দিনটা কেমন কাটছে?
সব সময় জন্মদিনে আমার মা থাকে টাঙ্গাইলে। এবার আমার পাশেই আছে। এবার এটা আমার সবচেয়ে বড় গিফট। বিশেষ কোনো আয়োজন নেই, ফ্যামিলির সঙ্গে ঘরোয়াভাবে উদ্যাপন করব। বড় কোনো পরিকল্পনা নেই। কিন্তু অনেকেই ফেসবুক আমার জন্মদিন নিয়ে অনেক কিছু লিখছেন, শুভ কামনা জানাচ্ছেন, এটা অনেক ভালো লাগছে। সব মিলিয়ে ভালো কাটছে দিনটি।
দীর্ঘ ক্যারিয়ার পেছনে তাকালে কী মনে হয়?
আমি একজন অভিনেতা। সেই জায়গাটায় আমি সফল। যখন নায়ক হিসেবে অভিনয় করেছি তখনো চেষ্টা করেছি সেরাটা দেওয়ার। আবার ভিলেন হিসেবেও সর্বোচ্চটা দিয়েছি। তাই দর্শক আমাকে পছন্দও করেছে। আর দর্শকের ভালোবাসাই আমার চলার সঙ্গী। প্রাপ্তি অনেক আছে তার মধ্যে দর্শকের ভালোবাসাটাই বেশি পেয়েছি।
কখনো কী কোনো অপ্রাপ্তি কথা মনে এসেছে?
অনেক দর্শকপ্রিয় ছবি রয়েছে। সেই সিনেমাগুলো আমি নিজের মতো করে, জীবনের সেরাটা দিয়ে অভিনয় করেছি। কিন্তু অপ্রাপ্তি হচ্ছে প্রায় তিন, চার শ ছবি করে একটা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পাইনি। এত বছর ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করে যাচ্ছি, কিন্তু জাতীয় স্বীকৃতি মেলেনি, এই না পাওয়াটা সত্যই অনেক কষ্টের, বেদনার। দর্শকের ভালোবাসার মাঝে যে সুখ আছে সেই সুখের মাঝেও প্রায়ই দুঃখ নড়েচড়ে ওঠে। এখনো অভিনয় করে যাচ্ছি যদি ভাগ্যে থাকে ভালো কাজ করি আশা রাখি সামনে জাতীয় পুরস্কার পাব।
এক সময় তো প্রযোজনাও করেছিলেন, মাঝে ঘোষণাও দিয়েছিলেন প্রযোজনায় যুক্ত হতে পারেন, পরিকল্পনাটা কত দূর?
আপাতত প্রযোজনা করছি না, কোনো ইচ্ছাও নেই। এখন অভিনয় নিয়েই থাকতে চাই। তার পরও শেষ বলে কথা নেই। তবে ভালো কিছু পেলে আবার প্রযোজনা করার ইচ্ছা আছে।
ইদানীং একটি চল শুরু হয়েছে, ঢালিউডের অনেক অভিনয়শিল্পীদের দেখা যায় সহকর্মীদের একে অপরকে কটাক্ষ করে কথা বলছেন এই চর্চা টাকে কীভাবে দেখেন?
এই বিষয়টা একদম ভালো চোখে দেখি না। কারণ দর্শকের কাছে, ছবির বাইরের মানুষের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। আমার একটা কথা থাকবে যারা এ ধরনের একে অপরকে কটাক্ষ করে কথা করছে তারা এই কাজগুলো থেকে বিরত থাকলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্যই মঙ্গল হবে। আমাদের ভাবমূর্তিও নষ্ট হবে না।
সংসার কেমন চলছে? এর আগে বলেছিলেন, পরিচিতজনেরা আপনাদের দম্পতিকে শাহরুখ-গৌরীর মতো ভাবেন?
হা হা। ভালো চলছে আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের বিয়ের অনেক আগেই শাহরুখ খানদের বিয়ে হয়। তাঁদের একটি স্ট্রাগলিং জীবন আমরা দুজনই দেখেছি। সেটা ছিল তরুণ-তরুণীদের কাছে অনেক শেখার মতো। আমরা দুজই ছিলাম তাঁদের ভক্ত। বিয়ের পরে তাঁদের আমরা অনুসরণ করতাম। আগে পত্রপত্রিকা দেখতাম, এখন ইন্টারনেটে তাঁদের সাক্ষাৎকার দেখি। তাঁদের জীবনবোধ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। এ কারণে আমাদের পরিচিতজনেরা আমাদের শাহরুখ-গৌরীর মতো ভাবেন।
শুরু থেকেই দেখা যায় শুটিং বা কোনো আয়োজনে আপনার সঙ্গে স্ত্রী সব সময় থাকেন? এর কি বিশেষ কোনো কারণ আছে?
আমার বিয়ের পর থেকে আমার কর্মক্ষেত্রের সহকর্মী, পরিচালক, প্রযোজক সবার সঙ্গে আমার স্ত্রী লাবণ্যকে (লাবনী হাসান) পরিচয় করিয়ে দিই। আমি কোন জায়গায় কাজ করি, সেটা জানাতে চেয়েছি। এমনকি আমি যদি কোনো পার্টিতে যাই সেখানেও নিয়ে যাই।
অমিত হাসান এখনো শারীরিক ফিটনেস ধরে রেখেছে, এর রহস্য কী?
অনেক যত্ন নিতে হয়। খাবার, ব্যায়াম নিয়ম করে মেনটেইন করতে হয়। আমার স্ত্রী নিজে থেকেই বলে, এটা খাওয়া যাবে না, ওটা বেশি খাওয়া নিষেধ, আমার চেয়ে সে বেশি সচেতন। তার চাওয়া যেহেতু ফিল্মে কাজ করি সে জন্য আমাকে সব সময় পারফেক্ট শরীরে থাকতে হবে। শাহরুখ খানের স্ত্রী গৌরীর মতো সে-ও আমার সব বিষয়ে সচেতন। এসব কারণে শাহরুখ-গৌরীর সঙ্গে আমাদের তুলনা করা হয়।
বর্তমানে কী কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
এখন তিন ছবির কাজ চলছে— ‘বিট্রে’, ‘জলরঙ’, ‘ইয়েস ম্যাডাম’। আরও কিছু কিছু কাজের কথা হচ্ছে। চূড়ান্ত হলেই জানাব।