নওবা তাহিয়া। ছবি: অভিনেত্রীর সৌজন্যে
নওবা তাহিয়া। ছবি: অভিনেত্রীর সৌজন্যে

দর্শক নাটকে মন খারাপের গল্প দেখতে পছন্দ করেন

এনটিভির ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তির পর পথিক সাধনের ‘আমার ঠিকানা তুমি’ নিয়ে অন্তর্জালে চর্চা হয়েছে। নাটকের তরুণ অভিনেত্রী নওবা তাহিয়ার অভিনয়ও প্রশংসিত হয়েছে। এই নাটকসহ নানা প্রসঙ্গে গতকাল বিকেলে তরুণ এই অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন লতিফুল হক

প্রশ্ন

‘আমার ঠিকানা তুমি’ নাটকটি কেন দর্শকেরা পছন্দ করলেন?

নওবা তাহিয়া : নাটকটিতে সমসাময়িক সম্পর্কের গল্প উঠে এসেছে। নাটকটিতে যা দেখানো হয়েছে, সব সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা হয়তো হয় না, কিন্তু ইদানীং কিছু সম্পর্কে এ ধরনের বিষয় দেখা গেছে। এই প্রাসঙ্গিকতা হয়তো দর্শকেরা পছন্দ করেছেন। এখন মানুষ নাটকে মন খারাপের গল্প দেখতে পছন্দ করেন, যেখানে চরিত্রগুলোর একটা মনস্তাত্ত্বিক জার্নি থাকবে; এই নাটকে সেটা আছে।

নওবা তাহিয়া। ছবি: অভিনেত্রীর সৌজন্যে
প্রশ্ন

আপনি তো বেশির ভাগ সময় রোমান্টিক চরিত্র করেন। এই নাটকে অভিনীত চরিত্রটি আলাদা ছিল...

নওবা তাহিয়া : এটাও নাটকটি পছন্দ করার আরেকটি কারণ হতে পারে। এখানে আমি একটা সাইকোপ্যাথ টাইপ চরিত্রে অভিনয় করেছি, যে নিজেও জানে না জীবনের লক্ষ্য কী। সে ভবিষ্যতে কী হবে, সেসব ভাবে না, স্রোতের সঙ্গে চলে। চরিত্রটি দর্শকেরা পছন্দ করেছেন। অনেকে দেখলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি পোস্ট করলেও মন্তব্য করছেন, ‘আপনি তো ভালো মানুষ না, সাইকোপ্যাথ।’

নওবা তাহিয়া। ছবি: অভিনেত্রীর সৌজন্যে
প্রশ্ন

আপনি এখন নাটকে মূল নায়িকা বা প্রধান চরিত্র হিসেবে কাজ করছেন। এই চ্যালেঞ্জ কীভাবে সামলাচ্ছেন?

নওবা তাহিয়া : নাটক যখন শুরু করি, তখন প্রধান চরিত্রই করেছিলাম। পরে বেশ কিছু নাটকে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছি। তখন মনে হয়েছিল, যত কাজ করব, তত বিভিন্ন টিমের সঙ্গে পরিচিতি বাড়বে। এখন প্রধান চরিত্রে দর্শক আমাকে পছন্দ করছেন, প্রচুর প্রস্তাব পাচ্ছি। বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ বেড়েছে। তবে আগের চেয়ে বেশি চাপ তৈরি হয়েছে। এখন চরিত্র থেকে চরিত্র কীভাবে আলাদা করব, বৈচিত্র্য নিয়ে আসব, সেটা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে।

নওবা তাহিয়া। অভিনেত্রীর সৌজন্যে
প্রশ্ন

বৈচিত্র্য নিয়ে আসার জন্য কী করেন?

নওবা তাহিয়া : নিজেকে ভাঙার জন্য সব রকম চেষ্টাই করি। পরপর দুটো শহুরে তরুণীর চরিত্রে অভিনয় করলেও ভিন্নতা আনার চেষ্টা করি। চরিত্রের মেজাজ-মর্জি বুঝে হয়তো মুদ্রাদোষ যোগ করি, হাঁটাচলা বা কথা বলার ভঙ্গিতে বদল আনি। শুটিংয়ের আগে পরিচালকের সঙ্গে কথা বলি। চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য, পোশাক ইত্যাদি সম্পর্কে জেনে নিয়ে নিজের মতো প্রস্তুতি নিই। দর্শকের একঘেয়েমি কাটাতে চেষ্টা করি। হয়তো চরিত্রের সঙ্গে বাস্তবে বা সিনেমায় দেখা অন্য কোনো চরিত্রের সঙ্গে মিল পাই, তখন সেখান থেকে প্রেরণা নিই।

নওবা তাহিয়া
প্রশ্ন

তরুণ অভিনেত্রী হিসেবে টিভি নাটকে কাজের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?

নওবা তাহিয়া : আমাদের নাট্যজগতের কাজগুলো আরও গোছানো হলে ভালো হতো। এতে আমাদের সবারই দায় আছে। আমরা শিল্পীরাই অনেক সময় কল টাইম মেনে চলতে পারি না। অনেক সময় দেখা যায়, রাত দুইটা-তিনটা পর্যন্ত শুটিং করতে হয়, আবার সকাল ছয়টায় গিয়ে কল টাইম ধরতে হয়। এ ছাড়া নারী শিল্পীদের কিছু সমস্যা হয়।

প্রশ্ন

কী সেটা?

নওবা তাহিয়া : আমাদের প্রোডাকশনে নারী কর্মীর সংখ্যা কম। অনেক সময় দেখা যায়, পুরো ইউনিটে আমিই একমাত্র নারী। এতে পোশাক বদল করা হোক বা অন্য কোনো ব্যাপার হোক, শুটিং সেটে সাপোর্ট পাই না। আমাকে ব্যক্তিগতভাবে সহকারী হিসেবে কাউকে নিয়ে যেতে হয়। বাইরে কোথাও শুটিং হলে নারী শিল্পীরা কোথায় পোশাক বদল করবেন, সেটা ভাবা হয় না। দেখা যায়, গাড়িতে পোশাক বদলের জন্য আমাকে কভার কিনতে হয়েছে। আমরা এসব মানিয়ে নিচ্ছি। তবে এগুলো বদলানো দরকার।

প্রশ্ন

এর মধ্যে দেখা কোন কাজগুলো ভালো লেগেছে?

নওবা তাহিয়া : এখন নেটফ্লিক্সে ‘ইউ’ সিরিজটি দেখছি, সাইকোলজিক্যাল-মিস্ট্রি। সিরিজটি মূলত এক সাইকোপ্যাথ জো গোলবার্গের গল্প। এ ধরনের কাজ খুব ভালো লাগে। আমি মার্ভেল ফ্যান, কিছুদিন আগে ‘ডেডপুল অ্যান্ড উলভারিন’ দেখলাম; খুব ভালো লেগেছে। ছবিটির অ্যাকশন ছাড়াও কমিক রিলিফ দারুণ ছিল। এ ছাড়া চরকিতে ‘ফরগেট মি নট’ও ভালো লেগেছে।