মুক্তির অপেক্ষায় থাকা হইচইয়ের ওয়েব সিরিজ ‘বুকের মধ্যে আগুন’ প্রয়াত চিত্রতারকা সালমান শাহকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে কি না, তা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই সিরিজের নির্মাতাকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে সালমানের পরিবার। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী।
আপনার ভাই আলমগীর কুমকুমের পাঠানো নোটিশে দাবি করা হয়েছে, সিরিজটি সালমান শাহকে নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। আপনারা কীভাবে নিশ্চিত হলেন?
পত্র-পত্রিকার খবরে জেনেছি, সিরিজটি সালমান শাহকে নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। সিরিজের নামটাও সালমানের সিনেমার নাম থেকে নেওয়া হয়েছে। সালমান শাহকে নিয়ে ২৭ বছর ধরে মামলাটা চলছে, এখনো কোনো রায় হয়নি। এর মধ্যে সিরিজটি নির্মাণ করা হচ্ছে কেন? মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটনের নামে তামাশা করা যায় না। বিষয়টি নিয়ে আমাদের সঙ্গে তারা কোনো আলোচনাও করেনি।
আইনি নোটিশ পাঠানোর পর সিরিজের নির্মাতা তানিম রহমান আপনাকে ফোন করেছিলেন বলে গণমাধ্যমে খবরে এসেছে; তাঁর সঙ্গে আপনার কী কথা হলো?
হ্যাঁ, তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমাকে বলেছে, ‘আন্টি, সিরিজে ওসব কিছু নেই।’ তখন আমি বললাম, ‘তাহলে আমার ছেলের ছবি ব্যবহার করলে কেন? বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করে নিতে পারতে। সালমান খুন হয়েছে, খুনের মামলা নিয়ে তামাশা করা যায় না।’ তানিম বলেছে, সাংবাদিকেরা নিজেদের লাভের জন্য সালমান শাহর ছবি দিয়ে সংবাদ করেছেন, ইউটিউবাররা ভিডিও বানিয়েছেন। তখন আমি বললাম, ‘তাহলে তুমি আপত্তি করোনি কেন? সিরিজের বিজ্ঞাপনের জন্য আমাকে ব্যবহার করতে পারো না।’
পরিচালক তানিম রহমান প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, সিরিজের সঙ্গে সালমান শাহর কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রতিবেদনটি আমি পড়েছি। সেখানে পরিচালক বলেছেন, নব্বইয়ের দশকের পাশাপাশি ২০১৯ সালের গল্প আছে। আমার প্রশ্ন হলো, ২০১৯ সালের গল্প হলে সালমানের ছবি ব্যবহার করা হলো কেন? তার নাম ব্যবহার করলে অবশ্যই আমরা আপত্তি করব। আমাদের পারিবারিক মানসম্মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অন্য শিল্পীদের নিয়ে সিরিজ করে না, শুধু সালমান শাহকে নিয়ে কেন। তারা আগে ক্ষমা চাক। তারা সংবাদ সম্মেলন করে বলুক, এটা সালমান শাহর কাহিনি নয়।
পরিচালক বলছেন, তাঁরা কোথাও সালমান শাহর নাম ব্যবহার করেননি।
নাম উল্লেখ না করলে প্রচারণায় তো সালমান শাহর ছবি ব্যবহার করছে। আর সিরিজে বলছে, মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটন করবেন গোলাম মামুন। আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে, হত্যারহস্য না বলে মৃত্যুরহস্য বলা হচ্ছে। আমার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ। চিকিৎসা নিচ্ছি। আমার মৃত্যু হলে এই ঘটনা দায়ী থাকবে।
আপনি এখন কোথায় আছেন, কী অবস্থায় আছেন?
আমি এখন লন্ডনে আছে। কিছুক্ষণ পর বাসায় চিকিৎসক আসবেন। এই ঘটনা শোনার পর খুব বিস্মিত হয়েছি। আমি খুবই বিরক্ত। আমার হার্ট অ্যাটাক হলে হলে তাঁরা দায়ী থাকবেন। ২৭ বছর ধরে আমি মামলাটা টানছি। আমি ঘুমাতে পারি না। কারও সিরিজের চিত্রনাট্য হওয়ার জন্য মামলা টানছি না।
আইনি নোটিশের উত্তর আপনারা পেয়েছেন?
না, এখনো নোটিশের উত্তর আমরা পাইনি। আমরা উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছি। সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা আছে। সিরিজ প্রচার বন্ধ না করলে আইনি ব্যবস্থা নেব।