‘আন্তঃনগর’ দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক। চরকিতে মুক্তি পাওয়া ছবিটিতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে গত শনিবার ‘বিনোদন’–এর সঙ্গে কথা বলেন নিদ্রা নেহা।
অনেক দিন ধরেই বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করছেন। অভিনয় শুরু করতে এত দেরি কেন?
সিনেমা দিয়ে শুরু করেছি। নাটকের অনেক প্রস্তাব পেয়েছি, ওটিটির প্রস্তাবও পেয়েছিলাম। কোনোটির চিত্রনাট্য পছন্দ হয়নি, কোনোটি অন্য নানা কারণে হয়নি। প্রধান চরিত্রেই অভিনয় করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। আমার কাছে চিত্রনাট্য, নিজের চরিত্রের বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ।
‘আন্তঃনগর’-এর পূর্ণিমা হতে রাজি হলেন কেন?
চিত্রনাট্য পছন্দ হলো, গৌতম (কৈরি)দারও আমাকে পছন্দ হলো। আমার মনে হয়, আমাদের দেশের প্রত্যেক মেয়ের পূর্ণিমার মতো হওয়া উচিত। ছবিতে ওর সঙ্গে যে ঘটনা ঘটে, এ পরিস্থিতিতে দেশের অনেক মেয়েই মুখ খুলতে পারে না। কিন্তু পূর্ণিমা প্রতিশোধ নেয়, প্রত্যেক মেয়ের মধ্যে এই স্পৃহা থাকা উচিত।
অভিনয়ে আসার আগে বিশেষ কোনো প্রস্তুতি নিয়েছেন?
সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। তবে চেষ্টা করতাম, আগে মুক্তি পাওয়া কাজগুলোয় (বিজ্ঞাপনচিত্র) নিজের দুর্বলতা বিশ্লেষণ করতে। আগের কাজের চেয়ে সব সময় ভালো করতে চেয়েছি। এভাবে এগোতে এগোতে একটা সময় মনে হলো, আমি প্রস্তুত।
‘আন্তঃনগর’-এ আপনার যাত্রাটা কেমন?
খুবই ভালো। প্রথম সিনেমা নিয়ে অন্য রকম একটা উত্তেজনা ছিল। একটু অস্বস্তিতে ছিলাম খুনের দৃশ্য নিয়ে, শুটিংয়ের দ্বিতীয় কিস্তি শুরুই হয় এটি দিয়ে। বিজ্ঞাপনচিত্রে তো বেশির ভাগ সময়ই হাস্যোজ্জ্বল থাকতে হয়েছে, অল্প সময়ে অভিনয়ের খুব একটা সুযোগ থাকত না। অডিশনের সময় পরিচালককে বলেছিলাম, আমি দৃশ্যটি পারব কি না। উনি আশ্বস্ত করে বলেন, ‘যেহেতু নিচ্ছি, আমার ওপর সেই ভরসা রাখতে হবে।’ সবচেয়ে ভালো লেগেছে, পরিচালক সেভাবে চাপ দেন না। শটের আগে বলেন, ‘তুই তোর মতো কর।’ আমার দৃশ্যগুলোয় থাকা সহশিল্পীদের মধ্যে প্রান্তর দস্তিদার, জয়রাজদা সবাই সহযোগিতা করেছেন।
প্রথম অভিনীত কাজ। কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?
ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি। গত শুক্রবার ছবির প্রচারে একটা ইভেন্টে গিয়েছিলাম। সেখানেও একজন বললেন যে আমার কাজ ভালো লেগেছে। নতুন হিসেবে অভিনয় নিয়ে ভয় বা জড়তা ছিল, কিন্তু অনেকের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় মনে হচ্ছে, হয়তো বা দর্শককে ভালো কিছু দিতে পেরেছি।
কেউ যদি সমালোচনা করেন!
কোনো অসুবিধা নেই। একটা সিনেমা আমার কাছে এক রকম লাগবে, দশজনের কাছে হয়তো অন্য রকম লাগবে, এটা খুবই স্বাভাবিক। আমি তো তাঁর দেখার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে পারব না। কেউ যদি আমার কাজের দুর্বলতা ধরিয়ে দেন, চেষ্টা করব শুধরে নেওয়ার।
সামনে আর কী কাজ আসছে?
পিকলু চৌধুরী, সুমন ধরের দুটি সিনেমায় অভিনয় করেছি। একটি সরকারি অনুদানের, অন্যটি চ্যানেল আইয়ের। চলতি বছরই এগুলো প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার কথা।
পুরোপুরি বাণিজ্যিক ধারার সিনেমা করবেন?
সব রকম কাজই করতে চাই, ব্যাপার হচ্ছে সিনেমায় আমার চরিত্রটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলায় পড়ছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ চালিয়ে যেতে সমস্যা হয় না?
দুটো সামাল দেওয়া মুশকিল। চারুকলায় প্রতি সপ্তাহেই প্রজেক্ট জমা দিতে হয়। তবে চারুকলার পড়াশোনা আমাকে অভিনয়ে সাহায্য করেছে। আমরা পার্সপেকটিভ, লাইট নিয়ে পড়েছি। এসব আমাকে ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল, লাইট, শ্যাডো বুঝতে সাহায্য করে।