‘প্রেম ও ছলনার গল্প’ নাটকে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন নিদ্রা দে নেহা। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে ‘শরতের জবা’, ‘নীল জোছনা’, ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’ প্রভৃতি চলচ্চিত্র ও সিরিজ। তরুণ এই অভিনেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন মকফুল হোসেন
‘প্রেম ও ছলনার গল্প’ তো আপনার প্রথম নাটক। কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
নিদ্রা দে নেহা: কাজের অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। আমার বিপরীতে ইয়াশ রোহান ভাইয়া ছিলেন। আরেক শিল্পী রিয়া ঘোষ আমার বিভাগের (চারুকলা) বড় আপু। ২০২২ সাল থেকেই নাটকের প্রস্তাব পাচ্ছিলাম। কিন্তু সময় নিচ্ছিলাম। ফিকশনে আমার শুরুটা ওটিটি দিয়ে। মাঝখানে চলচ্চিত্র, বিজ্ঞাপনও করেছি। নাটকে ভালো গল্পের অপেক্ষায় ছিলাম। পথিক সাধন দাদা বলছেন, একটা প্যারালাল চরিত্র আছে। সব মিলিয়ে চরিত্রটা খুব মজার মনে হয়েছে।
বিয়ের পর প্রান্তর দস্তিদার ও নিদ্রা দে নেহাকে ‘শখের নারী’তে আবার জুটি হিসেবে পাওয়া যাবে...
নিদ্রা দে নেহা: আমার ও প্রান্তরের একসঙ্গে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে পছন্দের একটি কাজ শখের নারী। চরকির ‘আন্তঃনগর’ দিয়ে আমাদের জুটি শুরু। এরপর বিয়ে করেছি। বিয়ের পর অনেকগুলো বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেছি। ‘শখের নারী’ কাজটা আমার কাছে বিশেষ। এটার প্রিভিউ কপিটা দেখেছি। একদম মনের মতো একটা কাজ হয়েছে। এটি মুক্তি পেলে সবাই দেখবেন। আমাদের কেমিস্ট্রি ক্যামেরার পেছনে যেমন, সামনেও তেমন। কোনো পার্থক্য হয় না।
ওর সঙ্গে কাজ করতে আমার খুবই বেশি ভালো লাগে। আমাদের জন্য ক্যামেরার সামনে কিংবা পেছনে বলে কোনো রসায়ন নেই। আমাদের কেমিস্ট্রিটা আসলে আমাদেরই।
বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার পর অভিনয়ে নাম লিখিয়েছেন, নিয়মিত কাজ করছেন। অভিনয় নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
নিদ্রা দে নেহা: ২০২০ সালের ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’ দিয়ে আমার মডেলিংয়ের শুরু। কখনো অভিনয় শিখিনি। তবে ছোটবেলায় নাচ করতাম। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ভাইয়ের আমার বাংলাদেশ-এ কাজ করেছি।
নিজেকে সব সময় অভিনয়শিল্পী হিসেবেই দেখতে চাই। অভিনয়টা খুব ভালোবাসি। আমি যখন অভিনয় করি, তখন নিদ্রা থাকি না, একেকটা চরিত্র হয়ে উঠি। চরিত্রে থাকলে আমার জীবনের কোনো চিন্তা মাথায় রাখতে হয় না। একেক সময় একেক চরিত্র ধারণ, ওই চরিত্রের মধ্যে থাকা, এটা খুবই উপভোগ করি। আজীবন অভিনয়শিল্পী হিসেবে কাজ করতে চাই। অভিনয়ের ওপর কিংবা চলচ্চিত্রের ওপর মাস্টার্স করতে চাই। অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনার সঙ্গেও থাকতে চাই।
ওটিটি ও নাটকের বাইরে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ‘শরতের জবা’, ‘নীল জোছনা’ চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন...
নিদ্রা দে নেহা: ‘শরতের জবা’ আমার প্রথম সিনেমা। এই সিনেমায় কুসুম শিকদার আপু, ইয়াশ রোহান ভাইয়ার মতো সহশিল্পী পেয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমার সঙ্গে জুটি ছিলেন জিতু আহসান ভাই, যাঁকে আমরা ছোটবেলা থেকে দেখেছি। ওনাদের কাছে আমি খুবই নগণ্য। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সিনেমাটি শিগগিরই মুক্তি পাবে।
আর ‘নীল জোছনা’ সিনেমায় নির্বাচিত হওয়ার পর জানতে পারি যে ওপার বাংলার অভিনেত্রী পাওলি দামের সঙ্গে অভিনয় করছি। ছবিটি পরিচালনা করছেন ফাখরুল আরেফীন খান। এতে বাংলাদেশের গুণী শিল্পীরা আছেন, মেহের আফরোজ শাওন আপা, পার্থ বড়ুয়া দাদা, এফ এস নাঈম ভাই, ইন্তেখাব দিনার ভাই আছেন। আমার বিপরীতে আছেন নাফিস ভাইয়া। এত এত গুণী মানুষের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার ছিল।
আমার ফিকশনের ক্যারিয়ার চরকি দিয়েই শুরু। চরকির সঙ্গে ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’ নামে আরেকটি ওয়েব সিরিজে কাজ করেছি। এতে মোশাররফ করিম ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করেছি। ওনার কাছে অনেক কিছু শিখেছি। সিরিজটি নির্মাণ করেছেন কাজী আসাদ।
শোবিজে এলেন কীভাবে?
নিদ্রা দে নেহা: ছোটবেলা থেকেই নাচ করতাম। ফ্যাশন করে ছবি তুলতাম। মা খুব চাইত, লাক্স–চ্যানেল আই সুপারস্টারে যাই। ঢাকায় আসার পর মনে হলো, মায়ের স্বপ্নটা নিয়ে আবার ভাবা যায়। ফ্যাশন ফটোগ্রাফার সৈকত রাইয়ান ভাইয়ের কথা না বললেই নয়। উনি না থাকলে আমার শোবিজে আসা হতো না। উনি বললেন, ‘তুমি চেষ্টা করতে পারো।’ এর মধ্যে মিস ইউনিভার্সে অংশ নিই। টপ টেনে চলে আসি। এভাবেই শোবিজে আসা।
স্বপ্ন এটাই যে অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমাকে যেন সবাই মনে রাখতে পারেন; সে ধরনের কিছু কাজ করে যেতে চাই। নিদ্রা হিসেবে স্মরণ রাখার দরকার নেই, আমার কাজ দিয়ে যেন মনে রাখতে পারেন।
আপনার জন্ম, বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা কোথায়?
নিদ্রা দে নেহা: আমার জন্ম ভোলার চরফ্যাশন থানায়। মফস্সল জায়গা, সেখান থেকে আমি আমার স্বপ্নের জায়গায় আসতে পেরেছি, এর জন্য পরিবারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। মফস্সলে থাকলেও নাচ, গানের মধ্যে বেড়ে উঠেছি।
এসএসসির পর ঢাকায় আইডিয়াল কলেজে পড়েছি। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা থেকে অনার্স করেছি। ছবি আঁকার অভিজ্ঞতাটা অভিনয়ে খুব কাজে লাগছে।