গত সোমবার চরকিতে মুক্তি পেয়েছে ওয়েব ফিল্ম ‘উনিশ ২০’। মিজানুর রহমান আরিয়ান পরিচালিত এই ওয়েব ফিল্মে রুবিনা চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ। ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে এটি এই অভিনয়শিল্পীর মুক্তি পাওয়া প্রথম কোনো কাজ। ‘উনিশ ২০’-সহ অন্যান্য প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথা বলল ‘বিনোদন’।
রুবিনা চরিত্রে অভিনয়ে কী ভেবে রাজি হয়েছিলেন?
এর আগে এভাবে আমাকে দেখেননি দর্শক, এমন চরিত্র করা হয়নি বলেই আসলে চ্যালেঞ্জটা নেওয়া। করপোরেট লেডি চরিত্র আমি আসলে খুব কাছ থেকে দেখেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে-ওকে, আই ক্যান ডু ইট। সাধারণত যে চরিত্রটা আমরা দেখি না, ওটা ফুটিয়ে তোলা একটু কষ্টসাধ্য। গবেষণা করতে হয়।
মুক্তির পর কী মনে হয়েছে, সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল?
চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা ছিল। যাঁরা দেখেছেন, তাঁরাও সূক্ষ্মভাবে অনেক কিছু বলেছেন। কেউ বলেছেন, চরিত্রটা একদম ভিন্ন রকম লেগেছে। একদম আলাদা মনে হয়েছে। গেটআপ, ড্রেসআপ, অ্যাপিয়ারেন্স, পারফরম্যান্স-সবকিছু মিলিয়ে মনে হয়েছে, রুবিনা চরিত্রের সঙ্গে আমি মিলেমিশে গেছি। এই ব্যাপারটা আমার অনেক বড় পাওয়া। আমি খুব অল্প সময় শুটিং করার সুযোগ পেয়েছি।
কেন?
আমার দৃশ্য যা ছিল, পুরোটার শুটিং করেছি মাত্র এক দিনে। শিডিউল নেওয়া ছিল দু-তিন দিন কিন্তু আমার আবার আগে থেকেই অন্য শিডিউল নির্ধারিত ছিল। ওখান থেকে সময় বের করতে হয়েছে। আমাদের সবার চেষ্টা ছিল সুন্দরভাবে সব কটি দৃশ্য করার। খুব সকাল থেকে শুটিং শুরু করতাম। আমার অংশের শুটিং হয়েছে বনানী ও গুলশানে। কিছু দৃশ্য একদম সত্যিকারের লোকেশনে করা। হোটেল স্যুট ভাড়া করে করা হয়েছে। পরিচালক আরিয়ান খুব সুন্দরভাবে পরিকল্পনা করেছে। আমরা ধরে ধরে কাজটা করেছি।
আরিফিন শুভ কি আপনার সঙ্গে প্রথমবার পর্দা ভাগাভাগি করলেন?
একদম তা-ই। শুভ আমার অনেক কাছের একজন মানুষ। শুভ যখন র্যাম্প মডেল হিসেবে কাজ করে, তখন থেকে পরিচয়। এরপর আসিফ আকবরের মিউজিক ভিডিওতে আমার ডিরেকশনে মডেল হিসেবে কাজ করেছে। এখন তো শুভ অনেক ম্যাচিউরড। সহশিল্পী হিসেবে আমি চরিত্রের মধ্যে যতটা নিবেদিত থাকতে চেয়েছিলাম, শুভও তেমনটা ছিল। আমরা মহড়া করেছি। সংলাপও ক্যাজুয়াল করেছি, তাই মানুষও সহজে নিতে পেরেছেন।
‘উনিশ ২০’মুক্তির পর কোন কথাটা আপনাকে বেশি শুনতে হয়েছে?
কেউ কেউ যেমন বলেছেন, ‘আপনাকে অনেক সুন্দর লেগেছে। আবার গর্জিয়াস যেমন লেগেছে, তেমনি অভিনয়টাও ভিন্ন রকম মনে হয়েছে।’
এ সিনেমা দিয়েই কি ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে আপনার অভিষেক হলো?
ওটিটিতে চরকির সঙ্গে দ্বিতীয় কাজটাই প্রথমে মুক্তি পেল। হইচইয়ের জন্য একটি কাজ করেছি। চরকির সঙ্গে প্রথমবার কাজ করে আমার খুবই দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। সত্যিকারের শিল্পীর ভেতরগত একটা আকাঙ্ক্ষা থাকে। চরকি শুরু থেকে এত ভালো কাজ করছিল, ভাবতাম, ইশ্ আমিও যদি থাকতে পারতাম। অবশেষে অংশ হলাম। খুব সম্ভবত এত দিনের চরিত্রগুলোর সঙ্গে আমি যাচ্ছিলামও না। আবার অনেকের ভুল ধারণাও ছিল, আমি সব সময় যুক্তরাষ্ট্রে থাকি। অভিনয়ের জন্য ভাবলে আমাকে পাবেও না-এ রকম একটা প্রোপাগান্ডা ছিল। এ কারণে আমি অনেক ভালো কাজ থেকে ছিটকেও গেছি। যা-ই হোক, আমি চাইব যে ভালো কিছু কাজের অংশ হতে। আমি কিন্তু কোনো দিন কোনো কমিটমেন্ট ভাঙিনি। বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়টা নিয়ে একটা পীড়ার মধ্যে আছি।
তা কেমন?
সবাই ফোন করে শুরুতেই বলে, ‘আপনি কি দেশে, নাকি আমেরিকায়?’অথচ আমি অনেক দিন ধরে দেশেই আছি। আমার কিন্তু গ্রিন কার্ড হয়ে গেছে। ৬ মাস পরপর ২০-২৫ দিনের জন্য যাওয়া লাগে। এটা আমার অভিনয় ক্যারিয়ারে কোনো প্রতিবন্ধকতা হতে পারে না। আমি সব সময় কাজের প্রতি দায়বদ্ধ। কাজ করতে ভালোবাসি।
টেলিভিশন নাটক কম করছেন?
খুব যে কম করছি তা কিন্তু না। এখন এত টেলিভিশন চ্যানেল, সেটার একটা প্রভাব আছে। এমন সব চরিত্রের প্রস্তাব আসে, যা করতে আগ্রহ পাই না। ডেফিনেটলি আমি মা-খালার চরিত্রেও অভিনয় করব। কিন্তু চরিত্রের গুরুত্বও থাকতে হবে। চ্যালেঞ্জ থাকতে হবে। আমি চরিত্র হয়ে উঠতে চাই।
আপনি তো চলচ্চিত্র নির্মাণও করেছিলেন?
এখন অনেক ভালো ভালো নির্মাতা কাজ করছেন। তাঁদের সঙ্গে পাল্লা দিতে গেলে নিজেকে আরও তৈরি করে তারপর নামতে হবে। আমি নিজের মতো করে তা করছি। সামনে হয়তো নির্মাণে দেখা যাবে। এই মুহূর্তে অভিনয়ে বেশি মনোযোগী হতে চাই।