কিছুদিন আগে দেবের বিপরীতে পশ্চিমবঙ্গের নতুন সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তাসনিয়া ফারিণ। নতুন সিনেমা, দেশের চলমান পরিস্থিতিসহ নানা বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন অভিনেত্রী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শফিক আল মামুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নিয়েছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আপনার মত জানতে চাই?
তাসনিয়া ফারিণ : পরিস্থিতির এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এখন দেশ কোন দিকে যাচ্ছে, কী হবে—এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বা দেশের বাইরে অনেক জানাশোনা নীতিনির্ধারক ও অর্থনীতিবিদের মতামত অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা আন্দোলন করেছেন, তাঁরা রাজনৈতিক বিষয়ে হয়তো অতটা পরিপক্ব না। এখন তাঁদের আন্দোলনের সফল বাস্তবায়নের জন্য ভালো অভিভাবক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপাতত এতটুকুই বলতে চাই।
আপনি নাকি দেবের বিপরীতে কলকাতার নতুন ছবিতে অভিনয় করছেন?
তাসনিয়া ফারিণ : হ্যাঁ, দেবের বিপরীতে ‘প্রতীক্ষা’ নামে একটি ছবিতে কাজ চূড়ান্ত হয়েছে। অভিজিৎ সেনের পরিচালনায় ছবিটির শুটিং করার কথা আগামী নভেম্বর থেকে; কিন্তু আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণ ভারত সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে। এ নিয়ে একটু দুশ্চিন্তা হচ্ছে। কারণ এখন থেকেই ছবিটির প্রি–প্রোডাকশনের কাজ শুরু হওয়ার কথা। এ জন্য শিগগির কলকাতায় যেতে হবে; কিন্তু আবার কবে ভিসা দেওয়া শুরু করবে, তা তো জানি না। এ কারণে ছবিটির কাজের বিষয়টিও অনেকটাই অনিশ্চিত। আমার কপালটাই খারাপ। গত বছর বিপ্লব গোস্বামীর পরিচালনায় ‘পাত্র চাই’ নামের একটি ছবির কাজও আটকে গেছে। এবারও মনে হচ্ছে তাই-ই হতে চলেছে।
আপনার কাছে কেন মনে হচ্ছে ছবিটির কাজ অনিশ্চিত?
তাসনিয়া ফারিণ : কারণ প্রি–প্রোডাকশনের কাজ শেষ করে নভেম্বরের মধ্যেই ছবির কাজ শুরু করা না গেলে ছবিটি আর না–ও করা হতে পারে। কারণ ওই সময়ে শুটিং শুরু না হলে ছবির মূল শিল্পী মিঠুন চক্রবর্তী ও দেবের শিডিউল পাওয়া যাবে না। এরপর থেকে টানা এক বছর তাঁর অন্য সিনেমার কাজে ব্যস্ত থাকবেন। এ কারণে শুটিং পেছনেও যাবে না। তা ছাড়া এ ছবিটির কলকাতা ও যুক্তরাজ্যে শুটিং হওয়ার কথা আছে। তাই ভিসা যদি সঠিক সময় না পাই, তাহলে এ কাজ ছেড়ে দিতে হবে।
দেবের বিপরীতে এ কাজটিতে সুযোগ হলো কীভাবে?
তাসনিয়া ফারিণ : অতনু ঘোষের ‘আরও এক পৃথিবী’ নামে কলকাতার একটি ছবিতে কাজ করেছি। ওই ছবিতে অভিনয় করে দর্শক প্রশংসা পেয়েছি। চলতি বছরের মার্চ মাসে এই সিনেমার জন্য পশ্চিমবঙ্গের ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসে সেরা নবাগত অভিনেত্রীর পুরস্কারও পেয়েছি। ওই সময়ই প্রযোজকের সঙ্গে এ কাজটি নিয়ে কথা হয়েছিল। গল্প শুনে তখনই কাজটি চূড়ান্ত করে এসেছিলাম।
আপনার অভিনীত প্রথম বাংলাদেশি সিনেমা ‘ফাতিমা’ গত মে মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়...
তাসনিয়া ফারিণ : শুধু সিনেপ্লেক্সেই মুক্তি পেয়েছিল। এটি তো আর বাণিজ্যিক ঘরানার ছবি না। এ ধরনের ছবিতে আমাদের দর্শক কম। তবে যাঁরাই ছবিটি দেখেছেন, তাঁদের মুখে প্রশংসা শুনছি। এই ছবি তৈরি হওয়া নিয়েও কাহিনি আছে। প্রায় ছয় বছর আগে ছবিটির শুটিং শুরু হয়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। একসময় ছবিটি হওয়ারই কথা ছিল না।
যুক্তরাজ্যে ‘২৫তম রেইনবো আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ তো ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছে?
তাসনিয়া ফারিণ : হ্যাঁ। পুরস্কারও তো জিতেছে। উৎসবের সমাপনী দিনে ‘ফাতিমা’ প্রদর্শিত হয়। উৎসবে সেরা ছবির পুরস্কার জিতেছে এ ছবি। আমি ছবির নামভূমিকায় অভিনয় করেছি। এটি আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। এর আগেও ইরানে ফজর চলচ্চিত্র উৎসবেও ছবিটিতে অভিনয়ের জন্য ‘আউটস্ট্যান্ডিং পারফরম্যান্স’ পুরস্কার পেয়েছি। আরও বেশ কয়েকটি উৎসবে অংশ নেবে সিনেমাটি।
নতুন কাজে কবে ফিরছেন?
তাসনিয়া ফারিণ : আপাতত ‘প্রতীক্ষা’ নিয়েই প্রস্তুতি চলছে। অন্য কোনো কাজ চূড়ান্ত করিনি। তবে এর মধ্যে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ব্রিঞ্জে ভিকি জাহেদের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘একটি খোলা জানালা’ মুক্তি পাওয়ার কথা। এটি গত মাসে মুক্তির কথা ছিল; কিন্তু দেশের পরিস্থিতির কারণে পিছিয়ে যায়।