সোমবার দিবাগত রাতে হঠাৎ চিত্রনায়ক শরীফুল রাজের ফেসবুকে কয়েকটি স্থিরচিত্র ও ভিডিও প্রকাশ পায়। সেখানে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাজের সঙ্গে সুনেরাহর বন্ধুত্বপূর্ণ ও ‘অসংলগ্ন’ কিছু আলাপচারিতা চলছে। সেগুলো রাজের ফেসবুক থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয়েছে সমালোচনা। এ নিয়ে প্রথম আলোর বিনোদনের মুখোমুখি হলেন সুনেরাহ বিনতে কামাল।
আপনার কয়েকটি স্থিরচিত্র ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এটা নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?
আমার কথা হচ্ছে, আমি আসলে কিছুই করিনি। এটাই সত্য। যারা আমাকে চেনে, যারা সেই বাকি ব্যক্তিদের চেনে, তারা সবাই বুঝতে পারছে কী হচ্ছে? এটা আমার জন্য বিরক্তিকর সিচুয়েশন। বিব্রত হচ্ছি, বিরক্তও লাগছে।
ভিডিওগুলো কবেকার, দীর্ঘদিন পরে এগুলো কীভাবে প্রকাশ পেল, এ বিষয়ে কিছু জানতে পেরেছেন?
এগুলো পাঁচ বছর আগের। বন্ধুদের মজা করা, ফাজলামির মুহূর্তে আরেক বন্ধু এসব ভিডিও ধারণ করেছে। এখন আপনারা ফ্রেন্ডরা মিলে কী কী করেন বলেন? এগুলোই তো। আমরাও অনেক ফাজলামি করতাম। ‘ন ডরাই’ সিনেমার শুটিংয়ের আগে রিহার্সালের সময়ে এমন ফাজলামি বেশি হতো। তখন আমরা অনেক ভালগার শব্দ ব্যবহার করতাম। আমাদের গল্পের প্রয়োজনে এমন ভালগার শব্দ ব্যবহার করতে হতো। সিনেমাতেও এটা দেখতে পাবেন। তখন আমি চরিত্র ঠিকভাবে প্লে করার জন্য ওই লাইফ লিড করতাম।
নিশ্চয় এভাবে ভিডিও বা ছবিগুলো প্রকাশ পাওয়াটা অপ্রত্যাশিত ছিল?
বুঝতে পারছি। কিন্তু এখন কী করব বলেন? সকাল থেকে এই একই বিষয় নিয়ে একের পর এক ফোন রিসিভ করতে হচ্ছে। কথা বলতে হচ্ছে। প্রতিবার বিব্রত হচ্ছি।
ভিডিওগুলো ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। আইনগত ব্যবস্থার কথা বলেছিলেন...
আমি অলরেডি আইনের পথে হাঁটছি, ব্যবস্থা নিয়েছি। কে কী করেছে, এখন বাকিটা ওরা করবে, তারা খুঁজে বের করবে। আপনারা এটা নিয়ে রাজের সঙ্গে কথা বলেন।
আপনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘রাজের ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছে।’ কিন্তু রাজ বললেন, ‘তার ফেসবুক হ্যাক হয়নি।’
রাজের সঙ্গে পরে আমি কথা বলেছি। সে বলেছে, ওর ফোন দিয়ে আরেকজন এ কাজ করেছে। রাজের কাছে জানতে চেয়েছি, সেই আরেকজন কে?বোঝেন?
‘সেই আরেকজন কে’—জানতে চাওয়ার পর রাজ কী বলেছেন?
আমি রাজকে বলেছি, তুই এটা কী করেছিস! সে আমাকে বলল, ‘তোর মনে হয় আমি করেছি।’ বললাম, তাহলে বল কে করেছে, সেই একজন কে? সে বলল, ‘আমার ফোন নিয়ে কেউ করেছে।’ এতটুকু বলেছে। এখন তার কথা শুনে কী বুঝব? আপনারা কী বোঝেন?
আপনি এবং রাজ কবে থেকে বন্ধু?
আমরা ১০–১১ বছর আগে থেকে একে অন্যকে চিনি। আমরা একসঙ্গে মডেলিং করতাম। সিনেমার শুটিং করতে গিয়ে ভালো বন্ধুত্ব হয়।
আপনারা একসঙ্গে ‘ন ডরাই’ সিনেমায় অভিনয় করলেন, এর আগে ও পরে আপনাদের নিয়ে অন্য কোনো গুজব ছিল?
আমাদের নিয়ে কখনোই কোনো গুজবের প্রশ্নই ওঠে না। আমাদের কিছু নাই, কী নিয়ে গুজব থাকবে। ওর প্রতি আমার জিরো পয়েন্ট জিরো ইন্টারেস্টও নেই ওইভাবে। ও আমার ভালো বন্ধু। ও সব সময় আমাকে ছেলেদের মতো ট্রিট করে আসছে। ও আমাকে শুধু বলত, ‘তুই মেয়ে নাকি, তুই মেয়ে নাকি, তুই পোলা।’ সব সময় এভাবেই ট্রিট করছে। আমরা এমনই বন্ধু। ও যখন গালি দিত, আমিও ওকে ছেলেদের মতো করেই দু–একটা গালি দিতাম। আমরা ওই ধরনের বন্ধু ছিলাম। নাহিদসহ আরও অনেক বন্ধু আছে, যাদের সঙ্গে এভাবে কথা বলা হয়। এখানে অন্য কিছুর প্রশ্নই ওঠে না।
আপনাকে পরীমনি কি কিছু বলেছেন?
এগুলো নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। আপনারা সিনিয়র, আপনারা ওকে ভালো চেনেন। আমি তাকে নিয়ে কিছু বলতে পারছি না।
বন্ধু হিসেবে যখন রাজকে ফোনে ঘটনাটা বললেন, তখন তাঁর প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
আমি যখন ওকে ফোন দিই, সে তখন রাস্তায়। আমি জানতে চাইলাম, কই তুই? সে বলল, ‘রাস্তায় হাঁটতেছি।’ আমার সঙ্গে কথা বলার সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে রাজ কাঁদতেছিল। সে কিছুই জানে না। পরে বললাম, তুই মানুষের সামনে কথা বলবি না? তোর কথা বলা জরুরি। রাজ বলল, ‘আমি মেন্টালি ঠিক নেই সুনেরা। আমি ঠিক হয়ে কথা বলব।’ তার এ কথায় বোঝার মতো কিছুই ছিল না।