বিরতির পর কাজে ফিরেছেন সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল। গানের বাইরে নতুন খবর দিয়েছেন, ওয়েব ফিল্মে অভিনয় করবেন তিনি। ক্যারিয়ার, ব্যক্তিগত জীবনসহ এসব প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথা বলল বিনোদন।
কত দিন পর গানে ফিরলেন?
নোবেল : এক বছরের বেশি সময় হয়েছে। তারও আগে থেকেই গানে অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলাম। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে দুটি ওয়েব ফিল্মের গানের কাজ শুরু করেছি। দুটির গানেরই ডামি তৈরি করেছি। তা ছাড়া শো করছি।
কেন বিরতি নিয়েছিলেন?
নোবেল : নিজের কারণেই বিরতি নিতে হয়েছে। আপনারা হয়তো জানেন, মাঝখানে আমি মানসিকভাবে সুস্থ ছিলাম না, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলাম। গত বছরের ২০ নভেম্বর থেকে প্রায় ৩ মাস মাদক নিরাময় কেন্দ্র ভর্তি ছিলাম। ওখান থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় বাসায় আরও কয়েক মাস বিশ্রাম নিতে বলেছিলেন চিকিৎসক। সেইটুকু সময় কাটিয়ে কাজে ফিরলাম। আমি চাই, আমার মতো এমন ভুল পথে আর কেউ পা না বাড়াক। আর কারও জীবন ধ্বংস না হোক।
নতুন কাজ পাচ্ছেন?
নোবেল : এখনো অনেকেই আমার ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না। অনেকেই হয়তো ভাবছেন, এখনো আমার আচরণ আগের মতোই আছে। আমাকে নিলে হয়তো শেষ করা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে। বিগত দিনে আমার আচরণ তো এমনই ছিল। এ কারণে বিশ্বাস করে কেউ কাজ দিচ্ছেন না, আমার পেছনে বিনিয়োগ করছেন না। আমার চাচাতো ভাই নতুন একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। সেখান থেকেই আপাতত কাজ শুরু করেছি। এভাবে পাঁচ-ছয় মাস কাজ করি। আগে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে কাজ করে একটা বিশ্বাসের জায়গা তৈরি করি, ইন্ডাস্ট্রির ফিডব্যাক দেখি। বিশ্বাসের জায়গা তৈরি হলে অন্যরা তখন এগিয়ে আসবেন।
আপনার প্রতি আস্থার জায়গাটি নষ্ট হলো কীভাবে?
নোবেল : গত কয়েক বছর অনেকগুলো ঘটনা ঘটিয়েছি। আগেই বলেছি, এর জন্য আমি নিজেই দায়ী। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ ছিল না। একজন শিল্পী হিসেবে যেটি আমি করেছি, ঠিক হয়নি। যে সব কাজ করেছি মানুষের সেটি পছন্দ হয়নি। এখন আমার মনে হয় আমার কাছে যদি টাইম মেশিন থাকত, তাহলে অতীতে ফিরে গিয়ে নিজেকে সংশোধন করতাম। সেটি তো আর সম্ভব নয়। ব্যক্তিজীবন, ক্যারিয়ার জীবনে অনেক কিছুই হারিয়ে ফেলেছি।
‘সারেগামার নোবেল’-এর কথা মনে করে আফসোস হয় না?
নোবেল : অবশ্যই আফসোস হয়। নিজের ওপর রাগ হয়, ঘৃণা হয়। কিন্তু জীবনে যা ঘটে গেছে, সেসব আর নতুন করে যেন না ঘটে, সেদিকে খেয়াল থাকবে। ক্যারিয়ারের সেই আগের জায়গায় যেতে পারব কি না জানি না, তবে চেষ্টা থাকবে আগের অবস্থানের কাছাকাছি হলেও যেন ফিরতে পারি।
আপনার জনপ্রিয়তা কি কমেছে?
নোবেল : অবশ্যই কমেছে। কমবে না কেন? কয়েক বছর তো আমার কোনো নামগন্ধই ছিল না। গান নয়, আমার বাজে আচরণের খবরগুলোই প্রকাশিত হয়েছে। আগে প্রতি মাসেই নতুন নতুন গান, শোর খবর ছিল। কিন্তু পরে নানা ধরনের আচরণের জন্য আমার প্রতি দর্শকের একটা বাজে ধারণা তৈরি হয়েছে। আমি সেখান থেকে ফিরতে চাই, আবার শ্রোতাদের ‘নোবেল’ হতে চাই।
শুনলাম আপনি অভিনয় করবেন?
নোবেল : আমার চাচাতো ভাই মিনহাজ ‘সুপ্রিয় বস ড্যাডি’ ও ‘ডার্ক শ্যাডো’ নামে দুটি ওয়েব ফিল্ম নির্মাণ করতে যাচ্ছেন। আগামী ৫ অক্টোবর ‘ডার্ক শ্যাডো’র শুটিং। দুটি ফিল্মেই আমি দুটি ছোট চরিত্র করব, পরিচালকের অনুরোধই করছি। ‘ডার্ক শ্যাডো’র দ্বিতীয় কিস্তি তৈরি হবে, যদি প্রথমটিতে ভালো করতে পারি, দর্শক পছন্দ করেন, তাহলে দ্বিতীয় কিস্তিতে মূল খলনায়কের চরিত্রটি করব। দুই ছবির দুটি গানেরও প্লেব্যাক করব।
অভিনয়ের প্রতি আগে থেকেই আগ্রহ ছিল?
নোবেল : হ্যাঁ। ছোটবেলায় মঞ্চনাটক করেছি। আমার বাবা, চাচা দুজনই করতেন। তবে ছোটবেলা থেকে খলনায়ক চরিত্র নিয়ে আলাদা আগ্রহ ছিল। ভাবতাম, বড় হয়ে কোনো দিন অভিনয় করলে ভিলেনের চরিত্র করব।