আজাদ আবুল কালামের নির্দেশনায় আজ সন্ধ্যায় মঞ্চে আসছে ‘আগুনযাত্রা’; এতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন শাহেদ আলী। নাটকটিসহ নানা বিষয়ে বিনোদন–এর সঙ্গে কথা বললেন অভিনেতা।
‘আগুনযাত্রা’র সঙ্গে যাত্রা করেছেন কবে?
গত অক্টোবরে নাটকটা শুরু করেছি, ডিসেম্বরে প্রথম প্রদর্শনী হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৭টায় মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে প্রদর্শিত হবে নাটকটি, একই মঞ্চে আগামীকালও প্রদর্শনী রয়েছে। প্রাচ্যনাটের ২৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। মহেশ দত্তানি রচিত নাটকটি অনুবাদ করেছেন শহীদুল মামুন, নির্দেশনার পাশাপাশি রূপান্তরও করেছেন আজাদ আবুল কালাম।
নাটকে একটি তৃতীয় লিঙ্গের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আপনি। চরিত্রটি ধারণ করা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল?
‘আনারকলি’ নামে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি চরিত্রে অভিনয় করছি। চরিত্রটি ধারণের চ্যালেঞ্জ শেষ হয়ে যায়নি, এখনো আছে। এমন নয় যে মঞ্চে নেমে গেছে মানে চ্যালেঞ্জ শেষ হয়ে গেছে। আমি এখনো গল্পের সঙ্গে, চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে আবিষ্কারের চেষ্টা করছি।
আপনি টিভি নাটক, চলচ্চিত্র, ওয়েব সিরিজের সঙ্গে মঞ্চনাটকেও কাজ করেন, মঞ্চের বহু শিল্পীকে টিভিতে ব্যস্ততার অজুহাতে মঞ্চে দেখা যায় না। আপনি সময় ব্যবস্থাপনা কীভাবে করেন?
কোন মাধ্যমকে গুরুত্ব দিচ্ছেন, সেটা একটা বিষয়। আমি যখন কোথাও অভিনেতা হিসেবে গ্রাহ্যতা পেতাম না, মঞ্চের চরিত্রগুলোর কারণেই তখন নিজেকে অভিনেতা হিসেবে উপলব্ধি করেছি। মঞ্চের চরিত্রের সঙ্গে আমার বসবাস। আমার মতো করে করার চেষ্টা করি। কখনোই আমি কোনো থিয়েটারের শো মিস করি না। নাটকের মহড়াও সর্বোচ্চটা দিয়ে করার চেষ্টা করি। মঞ্চ, ওয়েব কিংবা টিভি, যেখানেই কাজ করি না কেন, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে করি।
শিল্পীদের টিভি, সিনেমা কিংবা ওয়েবে আগ্রহের পেছনে বাণিজ্যনির্ভরতাকে সামনে আনেন অনেকে।
এটা আমি বলতে পারব না। একেকজনের প্রেক্ষাপট, বাস্তবতা আলাদা। কে কোন কারণে করতে পারছেন না কিংবা করছেন, সেটা নিজের মতো করে বিবেচনা করে বলে দিতে পারব না। বিশ্বাস করি, যে যেভাবে করছেন কিংবা করছেন না, তার নিজস্ব ব্যাখ্যা আছে।
মঞ্চে আপনাকে নির্দেশনা দিতেও দেখা গেছে, আগামীতে দেখা যাবে না?
সুযোগ পেলে অবশ্যই করব।
ক্যারিয়ারের শুরুতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন, টিভি নাটক কিংবা চলচ্চিত্র নির্মাণের ইচ্ছা আছে?
নিকট ভবিষ্যতে সম্ভাবনা কম, নিজের মধ্যেও আগ্রহ দেখি না। মঞ্চে ঠিকঠাক একটা গল্প নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।
মঞ্চের বাইরে আর কী কী কাজ করলেন?
সাইফুল হাফিজ খানের ‘লোডশেডিং’, মোহন আহমেদের ‘ফিদা’ নাটকে কাজ করেছি। ওটিটিতে আশফাক নিপুণ, মাসুম শাহরিয়ারের দুটি সিরিজে কাজ করছি। এর বাইরে ভিকি জাহেদ, কায়সার আহমেদ ও গোলাম সোহরাব দোদুলের সিরিয়াল করছি। অপু বিশ্বাসের প্রযোজনায় ‘লাল শাড়ি’ সিনেমার দৃশ্যধারণ শেষ করেছি। হোসনে মোবারকের ‘অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া’ সিনেমার দৃশ্যধারণ অল্প কিছু বাকি আছে। জাজ মাল্টিমিডিয়ার একটি সিনেমায় কাজের কথাবার্তা চলছে।
আপনার কয়েকটি ওয়েব সিরিজ আলোচিত হয়েছে। অনেকে বলছেন, দেশে ওটিটি মাধ্যমের উত্থান হচ্ছে। এই মাধ্যম নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
পেশাদারত্ব গড়ে না উঠলে খুব বেশি আশার কিছু দেখি না। কাজে পরিপক্বতার ঘাটতি রয়েছে। প্রযোজনাব্যবস্থাটা গড়ে ওঠেনি, প্রযোজক ছাড়া নতুন মাধ্যম প্রতিষ্ঠা পাওয়া কঠিন। একটা–দুইটা কাজ করে সফলতা পেতে পারেন, কিন্তু নিয়মিত করার জন্য সুনির্দিষ্ট কাঠামো দরকার। আগাগোড়াই পেশাদারত্ব দরকার, সেটা এখনো গড়ে ওঠেনি।