আপাতত বিয়েশাদি নিয়ে চিন্তা নেই: নোবেল

গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেল
ছবি: প্রথম আলো
নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেল। ২০২১ সালে এক সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি করা হয় তাঁর নামে। একই বছর নির্যাতনের অভিযোগ এনে স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদও তাঁর বিরুদ্ধে বিচ্ছেদের আবেদন করেন। এরপর আলোচিত ও সমালোচিত এই গায়ক অনেক দিন ধরেই মিডিয়া থেকে দূরে। প্রায় এক বছর আগে প্রকাশিত তাঁর শেষ গান ‘অপর প্রান্তে’। বর্তমান স্টেজ শোর পাশাপাশি মৌলিক গান নিয়ে একটি অ্যালবাম তৈরির কাজ করছেন। এসব নানা প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথা বলল বিনোদন
প্রশ্ন

কতগুলো গান নিয়ে অ্যালবাম?

১৪টি গান নিয়ে, এর মধ্যে ৪টি গান করা হয়েছে। আরও ৬টির ডেমো প্রস্তুত করেছি। সময় নিয়ে কাজটি করছি। টাকা জমিয়ে জমিয়ে কাজ করছি। আশা করছি আগামী সেপ্টেম্বরে অ্যালবামটি বের করতে পারব। একটা বড় কনসার্ট করে অ্যালবামটির প্রকাশনা অনুষ্ঠান করব। সেখানে অ্যাসেস ও ফিডব্যাক ব্যান্ড গান করবে। তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। অ্যালবামটি প্রথমে আমার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করব। বার কোড দিয়ে স্ট্রিমিং করে ওয়েব থেকে গানগুলো শুনতে পারবেন শ্রোতারা। এ ছাড়া স্পটিফাই, অ্যামাজান মিউজিকে শোনা যাবে। এর মাস তিনেক পর ভিডিও আকারে ইউটিউবে ছাড়ব।

প্রশ্ন

এখন তো সবাই একক গান বের করেন। আপনি এতগুলো গান নিয়ে অ্যালবাম বের করতে আগ্রহী হলেন কেন?

অ্যালবাম না থাকলে ওই শিল্পীর জীবনের সার্থকতা নেই। একজন লেখকের যদি কোনো বই বের না হয়, তাহলে তিনি লেখকের পর্যায়ে পড়বেন কি না আমার জানা নেই। একজন কবি যদি একটি করে কবিতা লিখে বের করেন, কোনো বই বের না করেন, তাহলে তাঁকে কবিজীবনে সার্থক বলা যাবে কি না, সন্দেহ আছে। এখন যাঁরা এই সংগীত ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন, একটি করে গান বের করছেন, তাঁরা বের করতেই পারেন। তাঁদের প্রতি আমার কোনো অসম্মান নেই। তবে আমি অ্যালবামই করতে চাই, করব। কারণ, আমার আইডল জেমস ভাই, বাচ্চু ভাই, সাবিনা আপা, এন্ড্রু কিশোর দাদাদের অ্যালবাম কিনে কিনে, গান শুনে শুনে বড় হয়েছি, শিল্পী হওয়ার চেষ্টা করেছি। সে কারণেই আমার অ্যালবামের প্রতি আলাদা আগ্রহ।

আমি সারেগামাপা নোবেলকে ভুলে থাকতে চাই। এই রিয়েলিটি শোর ফ্রেমটা আমার জন্য ধার করা ফ্রেম মনে হয়। ওখান থেকে পরিচিতি এলেও এখন আর আমি ওই পরিচয়ে পরিচিত হতে চাই না। এটি ধার করা জনপ্রিয়তা। সে সময় আমি অন্য শিল্পীর গান গেয়ে গেয়ে জনপ্রিয় হয়েছি। এখন আত্মসম্মানে আঘাত করে এটা।
প্রশ্ন

অনেক দিন ধরে আপনি আড়ালে কেন?

আমি সারেগামাপা নোবেলকে ভুলে থাকতে চাই। এই রিয়েলিটি শোর ফ্রেমটা আমার জন্য ধার করা ফ্রেম মনে হয়। ওখান থেকে পরিচিতি এলেও এখন আর আমি ওই পরিচয়ে পরিচিত হতে চাই না। এটি ধার করা জনপ্রিয়তা। সে সময় আমি অন্য শিল্পীর গান গেয়ে গেয়ে জনপ্রিয় হয়েছি। এখন আত্মসম্মানে আঘাত করে এটা। আমি ভাবি, মানুষের গান দিয়ে পরিচিতি পেলেও দিন শেষে শিল্পীর পরিচয় থাকবে তাঁর নিজের গান দিয়ে। এরই মধ্যে আমার ১০টি মৌলিক গান প্রকাশিত হয়েছে। দু-একটি আলোচিত হয়েছে। ১৪টি গান নিয়ে করা অ্যালবাম থেকে যদি দুটি গানও হিট হয়, তাহলেও আমার অ্যালবাম সার্থক। মানুষ আমার আগের ভার্সনটা ভুলে যাক। আড়ালে থাকার অবশ্য আরও একটি কারণ আছে।

মাঈনুল আহসান নোবেল
প্রশ্ন

কী সেই কারণ?

কিছু কারণে আমার ওপর মানুষের রাগ, ক্ষোভ আছে। আমি চাই, আড়ালে থাকার কারণে মানুষ সেটা ভুলে যাবেন। শ্রোতাদের ভালো ভালো গান দিতে পারলে আমার প্রতি সব রাগ ভুলে যাবেন তাঁরা। প্রত্যেক শিল্পীই প্রচণ্ড রকম প্রেমিক হন। প্রেমে ছেঁকা খেলে মানুষের জীবন বিভীষিকা হয়ে যায়। আমি তো প্রেম করিনি। সরাসরি বিয়ে করেছি। আর বিয়েতে ছেঁকা খেলে মানুষের কী হয়, বুঝুন এবার।

প্রশ্ন

কয়েক দিন আগে সাবেক স্ত্রীকে নিয়ে উপহাসের ইঙ্গিতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন আপনি। এতে আবারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কের মুখে পড়তে পারেন কি?

স্ট্যাটাসটি আমি আমার আবেগের জায়গা থেকে দিয়েছি। আমার সাবেক স্ত্রী আমাকে নিয়ে সারাক্ষণ বিভিন্ন উপহাসমূলক কথাবার্তা বলেন, সেসব আমার কানে আসে। আমি এখানে কাউকে আঘাত দিয়ে কথা বলিনি। স্ট্যাটাসটা পড়লে বুঝতে পারবেন। বরং আমি নিজে আঘাত পেয়েছি বলেই কথাগুলো লিখেছি। আমার ও রকম কেউ নেই। মিডিয়া জগৎটা একটি একাকিত্বের জায়গা। সাধারণ মানুষেরা সেটা বোঝেন না। সবাই ভাবেন, তারকারা বাইরে বের হলে মানুষ ঘিরে ধরছেন, সেলফি তুলছেন, এটাই জীবন। আসলে তেমন নয়। আমার মনে হয়, মিডিয়ার মানুষগুলো দিন শেষে একা। এখানে যাঁরা আছেন, তাঁরা ঠিকই বোঝেন।

প্রশ্ন

আবার বিয়ে করবেন কবে?

আপাতত বিয়েশাদি নিয়ে চিন্তা নেই। এখন চিন্তা শুধুই অ্যালবাম নিয়ে। আগে ১৪টি গান বের করব। সাড়া পেলে ভালো, না পেলেও সমস্যা নেই। আবার ১৪টি গান নিয়ে আরেকটি অ্যালবাম করার চেষ্টা করব। এ মুহূর্তে আমার কাছে প্রায় ১০০ গান সংগ্রহ আছে।

মাঈনুল আহসান নোবেল
প্রশ্ন

স্টেজ শোর ব্যস্ততা কেমন?

স্টেজ শো নিয়মিতই করছি। কিন্তু আওয়াজ দিই না। ঈদের পর টানা পাঁচটি শো চূড়ান্ত আছে। আমি আগে শো বাবদ তিন লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিতাম। এখন সেটি কমিয়ে এক লাখ ষাট হাজার করেছি, যাতে বেশি শো করতে পারি। কারণ, অ্যালবামের জন্য অনেক টাকা লাগবে।