কয়েক দিন আগে ‘লাল শাড়ি’ নামে নতুন একটা ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হলেন দিলরুবা দোয়েল। আজ শনিবার ঢাকার বনানীর একটি হোটেলে সরকারি অনুদানের ছবিটির মহরতের আয়োজন করেছেন প্রযোজক ও অভিনয়শিল্পী অপু বিশ্বাস। নতুন ছবিসহ তাঁর অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বললেন দোয়েল
‘লাল শাড়ি’তে আপনাকে কোন ধরনের চরিত্রে দেখা যাবে?
আমার চরিত্রটির নাম মুনিয়া, তাঁতি পরিবারের মেয়ে। অভাব–অনটনের জীবন। অন্য কোনো কাজের সুযোগ থাকলেও বংশপরম্পরায় এই তাঁতশিল্পকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায় মুনিয়ারা। ছবির গল্পে দেখানো হচ্ছে, ঐতিহ্যের তাঁতশিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। তারপরও শিল্পটাকে ধরে রেখেছেন কিছু তাঁতি। তাঁতশিল্পের প্রতি আবেগ, ভালোবাসার গল্প নিয়েই এই সিনেমা। সেই গল্পে এমন একটি চরিত্র করতে নিজেরও ভালো লাগছে।
‘আলফা’, ‘চন্দ্রাবতী কথা’, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’, কিংবা ‘আজব কারখানা’। সব সময় আপনাকে একটু ভিন্ন ধরনের চলচ্চিত্রে দেখা গেছে। মূলধারার বাণিজ্যিক ছবিতে কাজের আগ্রহ নেই?
আগ্রহ নেই, তা বলব না। আমি আগে যে ধরনের কাজ করেছি, সেই ধরনের কাজের প্রস্তাব বেশি আসে। হয়তো অনেকেই ভাবেন, নাচ–গানওয়ালা ধুমধাড়াক্কা ছবিতে কাজ করব না। কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়। ভালো গল্প, অভিনয় করার মতো চরিত্রের সব কাজই করতে চাই। এফডিসিকেন্দ্রিক দু-একটি কাজের প্রস্তাব এসেছিল, পছন্দ হয়নি। তবে লাল শাড়ি তো এফডিসিকেন্দ্রিক ছবিই। কারণ, প্রযোজক অপু বিশ্বাস, পরিচালক বন্ধন বিশ্বাস মূলধারার বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রেরই মানুষ।
আপনি নাসির উদ্দীন ইউসুফ, এন রাশেদ চৌধুরী, নূরুল আলম আতিকদের মতো গুণী নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। কেমন অভিজ্ঞতা হয়েছে?
সত্যি কথা কি, সিনেমায় কাজ শুরুর আগে অভিনয়ে আমার কোনো অভিজ্ঞতাই ছিল না। প্রথম (নাসির উদ্দীন ইউসুফ) বাচ্চু ভাইয়ের আলফায় অভিনয় করি। এরপর আতিক ভাইয়ের লাল মোরগের ঝুঁটি, তারপর রাশেদ ভাইয়ের চন্দ্রাবতী কথা, শবনম ফেরদৌসীর আজব কারখানাসহ বেশ কয়েকটি ছবিতে কাজ করেছি। এসব ছবিতে অভিনয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমার কাছে মনে হয়েছে, এসব পরিচালকের সঙ্গে কাজের সময় আমি অভিনয়ের স্কুলে ছিলাম। তাঁরা আমার অভিনয়ের শিক্ষক ছিলেন। এসব ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ না পেলে আমার সিনেমায় কাজ করা হতো কি না, জানি না।
আপনার ‘আজব কারখানা’র মুক্তি অনেক দিন থেকে আটকে আছে। কেন?
২০১৯ সালে শুটিং শেষ হয়। এরপর ২০২০ সালে ডাবিংসহ সব কাজ শেষ হয়েছে। এরপর তো করোনা চলে এল। ছবির প্রযোজক ও পরিচালকের কাছ থেকে শুনেছিলাম চলতি বছরের শুরুর দিকেই মুক্তি পাবে। সে সময় ছবির পোস্টারও প্রকাশিত হয়। তা ছাড়া ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটির প্রদর্শনী হয়েছে। এখন কী কারণে আটকে আছে, কবে মুক্তি পাবে, কিছুই বলতে পারছি না।
আপনি ওয়েব সিরিজ, টেলিভিশন নাটকেও অভিনয় করেন। কোন মাধ্যম বেশি পছন্দ?
কয়েকটি ধারাবাহিক নাটকে কাজ করেছি, করছি। এক ঘণ্টার নাটক তো করা হয় না। ওটিটির কাজও হাতে গোনা। তবে ওটিটি ও বড় পর্দার কাজ আমাকে বেশি টানে। কারণ, এখানে গল্প বলার জায়গাটা মজবুত থাকে। নিজের চরিত্রও স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে করা যায়।
অভিনয়ের শুরুটা হয়েছিল কীভাবে?
আমার বড় বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জার্নালিজমে পড়তেন। আমার বোন ও দুলাভাইয়ের সুবাদে অনেক সংবাদকর্মীর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। ২০১৪ সালের ঘটনা, একটি শাড়ির বিজ্ঞাপনে প্রথম আলোর ‘নকশা’ পাতায় মডেল হওয়ার সুযোগ হয়। ছবি ছাপার কয়েক দিনের মাথায় ডেইলি স্টার, ক্যানভাস, আইস টুডে পত্রিকা থেকে মডেল হতে ডাক আসে। এই সব পত্রিকায় মডেল হিসেবে আমার ছবি ছাপে। আস্তে আস্তে মডেলিংয়ে কাজ বাড়ে। ওই বছরই আলফা ছবিতে কাজের জন্য বাচ্চু ভাইয়ের টিম থেকে ডাক আসে। গেলাম, স্ক্রিন টেস্ট হলো। কয়েক দিনের মধ্যেই আমাকে সিনেমায় যুক্ত করলেন। এভাবেই অভিনয়ে চলে এলাম।