বাংলা সিনেমার একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা আমিন খান। সিনেমা যাঁকে ভক্তদের কাছে জনপ্রিয় করেছে, সেই সিনেমায় এখন আর নিয়মিত নন। তবে পছন্দমতো চরিত্র পেলে তাঁকে পর্দায় দেখা যায়। ভালো গল্প পেলে নিয়মিত হতে বাধা নেই। গতকাল রোববার ছিল তাঁর জন্মদিন। জন্মদিনে ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিগত নানা প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে কথা বলল বিনোদনের মনজুরুল আলম
শুভ জন্মদিন, কেমন আছেন?
ধন্যবাদ। দিনটা মাশা আল্লাহ অনেক ভালো যাচ্ছে। জন্মদিন উপলক্ষেই বাইরে যাচ্ছি।
কোথায় যাচ্ছেন?
একটু বাইরে এসেছি। পরিবারের সঙ্গে দিনটা কাটে। তারাই সঙ্গে রয়েছে। আমার দুই ছেলে রয়েছে, আমার স্ত্রী। সবাই একসঙ্গে ডিনার করব। সেখানেই এসেছি। আসলে আমার পরিবারের সবাই সারপ্রাইজ দিয়েছে।
কে কী সারপ্রাইজ দিয়েছে?
ডিনার পার্টির আয়োজন করেছে আমার স্ত্রী। বড় একটা আয়োজন, বড় সারপ্রাইজ। রাতে আমার সন্তানেরা সারপ্রাইজ দিয়েছে। তারা টাকা জমিয়ে কেক কিনেছে—এটা আমাকে অবাক করেছে। সব মিলিয়ে পরিবারের সঙ্গে দিনটি দারুণ কাটছে।
আপনার স্ত্রী এত বড় একটা সারপ্রাইজ দিয়েছেন, দীর্ঘ সংসারজীবনে এমন কি কোনো কথা আছে, যা স্ত্রীকে বলা হয়নি? আজকে বলতে পারেন?
আমাদের মধ্যে এমন কোনো কিছু না বলা নেই। আমাদের ২৬ বছরের সংসার, সব কথাই স্ত্রীকে বলেছি। আর কিছুই বাকি নেই। অনেক আগে থেকেই আমাদের বোঝাপড়া।
আপনার সন্তানেরা কী করেন?
আমার দুই ছেলে। একজন ক্লাস টেনে পড়ে। ছোট ছেলে ক্লাস টুতে পড়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভক্তরা শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন...
এটা আমার চোখে পড়েছে। অনেকে অতীতের কথা লিখেছেন এবং আগের ছবি পোস্ট করেছেন। এগুলো ভালো লেগেছে। আমার মনে হয়, এটাই একজন শিল্পীর প্রাপ্তি। মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি, এটা তারই প্রতিফলন।
এখন তো অভিনয় থেকে দূরে রয়েছেন, মাঝে বলেছিলেন আবার ফিরবেন।
আমি তো অভিনয় ছেড়ে যাইনি, তাই ব্যাক করার প্রশ্নই এখানে আসে না। আমি অভিনয় থেকে চলে গেলে ব্যাক করতাম। দূরে যাইনি। হয়তো সে রকম চরিত্র পাচ্ছি না, যে কারণে কাজ কম হচ্ছে, কখনো করা হচ্ছে না। আর এটা তো করপোরেট জব না যে ৯টা–৫টা রেগুলার করতে হবে। যখন তেমন চরিত্র পাব, তখন কাজ করব।
কিন্তু একটা সময় ছিল, দিনের পর দিন টানা অভিনয় করে গিয়েছেন...
ক্যারিয়ার তো সব সময় একরকম থাকবে না। কখনো কমবে, কখনো বাড়বে—এটা স্বাভাবিক। এটা অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই।
ব্যস্ত সেই দিনগুলোতে জন্মদিন কেমন কাটত?
তখন জন্মদিন সেভাবে উদ্যাপন করাই হতো না। এখন ভালোভাবে উদ্যাপন করি। এখন পরিবার, ফ্রেন্ড সার্কেল—সবাই একসঙ্গে সময় কাটাতে পারি। তখন কাজের ব্যস্ততায় ঢাকার বাইরে থাকা হতো, অনেক সময় কেক সেই অর্থে কাটা হতো না। এখন ভালোভাবে দিনটি কাটে।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পেছনে তাকালে কোনো আফসোস বা অভিমান হয়?
শুধু ক্যারিয়ার না, আমার কোনো বিষয় নিয়েই আফসোস নেই। আমি আফসোস করি না। কারণ, যেটা ঘটার, সেটা ঘটবে। আমি সব সময় চেষ্টা করি বর্তমান সময়কে উপভোগ করার। অতীতকে নিয়ে চিন্তা করলে বর্তমান সময়টা নষ্ট হবে। সামনে কী হবে, সেটা আমরা–আপনারা কেউ জানি না। তাই বর্তমানটাকে উপভোগ করাই আমার নীতি।
জীবনকে কীভাবে দেখেন, কী আপনাকে ভাবায়?
আমি সব সময় একটা জিনিসই ভাবি, বি প্র্যাকটিক্যাল। আর জীবন একটাই, তাই আফসোসের কিছু নেই। কোনো কিছু নেই বলে আপনি আফসোসে মারা যাবেন, এটা মানুষকে ভুল পথে চালিত করে। একজন যেটা ডিজার্ভ করে, সেটাই তার জন্য দেওয়া আছে—এটা আমি মনে করি। যা আছে, যা পেয়েছি, তাতেই আমি সুখী। আমার কাছে মনে হয়, প্রতিটি জিনিসের মধ্যে আনন্দ ও সুখ লুকিয়ে আছে, সেটা খুঁজে বের করলেই পাওয়া যাবে।