ঈদে মুক্তি পাবে মুমতাহিনা টয়া অভিনীত ওয়েব সিরিজ ইনফিনিটি ২। একাধিক নতুন নাটকেও এই লাক্স-চ্যানেল আই তারকাকে দেখা যাবে। এসবের বাইরে এবারই প্রথম কোরীয় কোনো সিরিজের বাংলা ডাবে কণ্ঠ দিলেন তিনি। এসব নিয়ে তাঁর সঙ্গে গত শুক্রবার বিকেলে কথা বলল ‘বিনোদন’
ঈদের আগে সবাই তো শুটিং-ডাবিং নিয়ে ব্যস্ত। আপনার কী অবস্থা?
আমি তো জ্বর বাঁধিয়ে বাসায় শুয়ে–বসে কাটাচ্ছি। ডাবিং ছিল আজকে। জ্বরের কারণে বাতিল করেছি।
কিসের ডাবিং?
আমি কোরীয় একটা সিরিজের ডাবিং করছি। মি. কুইন নামের নেটফ্লিক্সের সিরিজটি বাংলা ভাষায় বায়োস্কোপে মুক্তি দেওয়া হবে। প্রথমবার নিজের কনটেন্টের বাইরে ডাবিং করছি।
কোরীয় সিরিজ কি আপনার পছন্দ?
তা কি বলতে হয়। আমার খুব পছন্দের। অনেক দেখি। এখন যে সিরিজটার ডাবিং করছি, এটাও আমার খুব পছন্দের। পাঁচ-ছয় মাস আগে একদিন বাসায় যখন সিরিজটি দেখছিলাম, সেদিনই আমার কাছে ফোন আসে, প্রস্তাব দেওয়া হয় এই সিরিজের বাংলা ডাবিংয়ের। বলল, এটা আপনাকে নিয়ে করতে চাই। কাকতালীয় ঘটনাও বলতে পারেন। আমার ভালো লেগেছে। কারণ, সিরিজের প্রধান চরিত্র আমার মতোই। আমি যে ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে মজা পাই, এটা তেমনই। তিন মাস ধরে ডাবিং করছি।
পছন্দের সিরিজের ডাবিং করতে পারার আনন্দ কেমন?
এখানে রানির চরিত্রের ডাবিং আমি করছি। মজা লাগছে। মি. কুইন পৌরাণিক গল্প। ওই গল্পে অনেক সিনেমা হয়েছে। এটা একদম লেটেস্ট বানানো সিরিজ। আমার কাছে মজা লাগল। ফ্যান্টাসি আছে, ভিন্ন রকম গল্প—সাধারণত আমরা যা করে অভ্যস্ত নই। আর এই সিরিজের রাজা চরিত্রের ডাবিং করছে শাওন। আমরা জামাই-বউ দুজনে ২০০ বছরের পুরোনো রাজা-রানি হয়ে আছি। ডাবিংরুমে যতক্ষণ থাকি, ততক্ষণ রাজা-রানি অনুভব করি। আর বের হওয়ার পর বাংলাদেশের একজন গরিব আর্টিস্ট টয়া। গরিব আর্টিস্টের গরিব স্বামী অভিনয়শিল্পী শাওন। (হাসি)
ঈদে তো ইনফিনিটি ২ মুক্তি পাচ্ছে...
এর মধ্যে টিজার, ট্রেলার ও গান প্রকাশিত হয়েছে। সবকিছু মিলে মনে হয়েছে, গত সিজনের চেয়ে এবারেরটা টেকনিক্যাল জায়গা থেকে অনেক ভালো। যেহেতু আমাদের দেশে সিনেমা ছাড়া অ্যাকশননির্ভর কাজ খুব একটা করা হয় না। তা ছাড়া অ্যাকশননির্ভর কাজে প্রচুর পরিমাণ বাজেটও লাগে। বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এই সিরিজ যা বানিয়েছে, আমি তো বলব দারুণ।
শুটিং কোথায় করেছেন।
পুরান ঢাকা, আফতাবনগর, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গাজীপুরসহ বেশ কটি লোকেশনে। অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি শুটিং করেছি।
কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
প্রথম সিরিজের চেয়ে এবার অনেক বেশি ফাইটিং করতে হয়েছে। প্রথমবার সেভাবে প্রস্তুতিও নিতে পারিনি। তবে দ্বিতীয় সিজনে অনেক প্রস্তুতি নিয়েছি। ২০ দিনের শর্ট কোর্সও করেছি, যাতে শরীরের ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়ে। লুক ও ফিজিক ওয়াইজ সবার জন্য কস্টিউম বানানো হয়েছে। আমাদের জায়গা থেকে সময় দিয়েছি। চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস, দর্শক প্রথম সিজন যতখানি পছন্দ করছে, এটা তার চেয়ে বেশি করবে।
কাজের ক্ষেত্রে আপনার কোন ধাঁচ বেশি পছন্দ?
সব ধরনের কাজই ভালো লাগে। যেকোনো জনরার সঙ্গে নিজেকে খুব সহজে ব্লেন্ড করতে পারি—এটা আমার ব্যক্তিগত ধারণা। আমার মধ্যে টম বয় ব্যাপার আছে। মারামারি–কাটাকাটি করতেও ভালো লাগে। ফেমিনিন ব্যাপারও আছে। আবার কমেডিও ভালো লাগে। দুঃখের কাজ করতে কষ্ট হয়। অনেক দুঃখ, অনেক কষ্ট, অনেক স্ট্রাগল, কেটে যাচ্ছে, পুড়ে যাচ্ছে জীবন—এ ধরনের কাজ বেশি কষ্টের লাগে।
কেন এমনটি হয়?
কারণ, আমি মানুষটা হাসিখুশি তো, একটু বেশ প্রফুল্ল থাকি। ওই জায়গা থেকে দুঃখ–কষ্টের ব্যাপারগুলো এলে আমার নিজেরই কষ্ট লাগে। মনে হয়, এর চেয়ে বেশি কষ্ট মানুষ কীভাবে পেতে পারে। এ জন্য আমি হাসিখুশির কাজগুলো করতে পারি।
শাওন জামানেরও কি এ রকম হয়?
আমার স্বামী তো একেবারে বিপরীত। খুঁজে খুঁজে ও সেই ধরনের কাজগুলো নেয়, যেখানে অনেক কষ্ট, স্ট্রাগল করতে হয়। ওরও আবার কমেডি করতে ভালো লাগে। কিন্তু প্রাধান্য দেয় কষ্ট আছে এ ধরনের চরিত্র।
এবার ঈদে নতুন কাজ আসবে?
দুটি নাটক নিশ্চিত। এর বাইরেও আসতে পারে।
একটি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। এরপর আর দেখা যায়নি।
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য আমি পুরোপুরি প্রস্তুত। আমাকে নিয়ে ভাবা উচিত। নাটক, টেলিফিল্ম ও ওয়েব সিরিজে অনেক ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছি। চলচ্চিত্রে বড় চরিত্রের জন্য আমাকে নিয়ে যদি ভাবে, কাউকে নিরাশ করব না। সব ধরনের চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে চাই।
ঈদ কোথায় করবেন?
ঢাকায় থাকব। ঈদের পরদিন আমরা বড় একটা টিম থাইল্যান্ডে বেড়াতে যাব। বন্ধুরা মিলে। ১০-১২ দিনের ট্যুর। আমাদের এই টিমে আছে সাফা কবির, তামিম মৃধা, তৌসিফ, জোভান, সিয়াম, শবনম ফারিয়া ও সারিকা সাবাহ। প্রতিবার এসব মানুষের কয়েকজন মিলে নাটক বা টেলিছবির শুটিংয়ে গেছি। কখনো দু-তিনজন মিলে ঘুরতে গেছি। এবারই প্রথম সবাই মিলে ঘুরতে বের হচ্ছি।