বিচ্ছেদের বছরখানেক পরে গত বুধবার সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। গতাকাল এসব নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বললেন তিনি।
বিচ্ছেদের এত দিন পর এ ধরনের অভিযোগ কেন সামনে আনলেন?
ইমোশনাল হয়ে লিখে ফেলেছিলাম। পরে বুঝলাম, ঠিক হয়নি। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি সম্মানের সঙ্গে সবকিছু শেষ করতে। অপুকে (হারুনুর রশীদ) ছোট করার জন্য আমি পোস্টটা দিইনি। দিয়েছি এটা বলার জন্য যে আমাদের সমাজ মেয়েদের সব সময় মানিয়ে নিতে শেখায়, শুধু মেয়েদেরই কম্প্রোমাইজ করতে বলে। অথচ শেখানো উচিত, যেখানে সম্মান নেই, সেখানে জোর করে থাকার কোনো মানে হয় না।
বিচ্ছেদের সময় যে সহনশীলতা দেখিয়েছিলেন, সেটা এত দ্রুত নষ্ট হয়ে গেল?
এক্স মানে এক্সপায়ার্ড, অর্থাৎ মেয়াদোত্তীর্ণ। সো অপুর সঙ্গে আমার যেকোনো ব্যাপার এখন মেয়াদোত্তীর্ণ। পুরোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করার কোনো ইচ্ছা নেই। আমরা দুজনই দুজনের লাইফে অনেক এগিয়ে গেছি।
সাবেক স্বামীর নির্যাতনে আপনার হাত ভাঙার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ফেসবুক পোস্টে। তিনি আমাদের কাছে সেটা অস্বীকার করেছেন।
এখানে অপুর স্বীকার-অস্বীকারের কী আছে? একটা নিউজ পড়ে খারাপ লেগেছিল বলে পোস্টটা করি। অপুকে নিয়ে পোস্টে কিছু ছিল না। আসলে পাবলিক প্লেসে আমার ওটা লেখাই উচিত হয়নি। পোস্টে মনে হয়েছে আমি তাঁর প্রতি অভিযোগ করেছি। অভিযোগটা আসলে ওর প্রতি না, অভিযোগটা আসলে সমাজের প্রতি। সমাজ ডিভোর্সকে এত বেশি খারাপ করে দেখে যে চাইলে অনেক কিছু করা যায় না। এখন অপু অস্বীকার করেছে, বিষয়টি এমন না। বিষয়টা এমন না যে, অপু চেয়েছিল আমার আঙুল ভেঙে যাক। আমাদের দুজনের অনেক রাগারাগি হয়েছিল, একটা পর্যায়ে হাতাহাতি। একটা পর্যায়ে আমার হাতটা ভেঙে যায়। আমি অপুর বিরুদ্ধে কোনো কমপ্লেইন করিনি। আমি ওই সময় বুঝেছিলাম, বিয়েটা টক্সিক হচ্ছে। কিন্তু আমি সমাজের ভয়ে মেনে নিয়েছি, এ জন্য আমাদের দুজনকে সাফার করতে হয়েছে। সোসাইটি যদি এ ব্যাপারে এত স্ট্রিক্ট না হতো, তাহলে আমাদের দুজনের লাইফের আড়াই বছর নষ্ট হতো না। আমার অভিযোগ ছিল এটা নিয়ে। কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে নয়। পুরোনো ঘটনা এখন ঘাঁটিয়ে লাভ নেই। অলরেডি আমি এত অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে আলোচনায় আছি, নতুন আর কিছু চাই না।
নতুন কাজের খবর কী?
অনেক দিন পর দুটি নতুন সিরিয়াল করছি। ফ্যামিলি ক্রাইসিস রিলোডেড এবং সুনীল গঙ্গোপধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে মা-বাবা ভাইবোন। তিনি আমার খুবই প্রিয় লেখক, তাঁর গল্পে কাজ করাটা আমার জন্য অনেক আনন্দের।
‘দেবী’র পরে আপনাকে আর সিনেমায় দেখা যাচ্ছে না কেন?
দেবীর পর সে রকম সিনেমার প্রস্তাব আসেনি। তবে মুন্সিগিরি নামে একটি ওয়েব ফিল্মে কাজ করেছিলাম। এই মাসে আরেকটা ওয়েব ফিল্মের কাজ করতে যাচ্ছি। আমি যে রকম সিনেমা করতে চাই, সে রকম আমার কাছে আসে না। আমি যদি পাঁচটা সিনেমায়ও অভিনয় করি, চেষ্টা থাকবে সব কটি যেন মানসম্মত হয়।
নতুন করে জীবন সাজানোর কথা ভাবছেন?
এটা বলতে গেলে তো কমপ্লিকেটেড হয়ে যায়। আমি চাই না আর কোনো ঝামেলা হোক। সবাই লাইফে সেটেল্ড হতে চায়, শান্তিতে থাকতে চায়। জানানোর পর্যায়ে এলে তখন আমিই সবাইকে জানাব। তার আগপর্যন্ত আমি আমার মতো করে বোঝার চেষ্টা করি।