‘মধ্যরাতে মদ্যপ, এটা পুরোটাই মিথ্যা কথা’

ছুটির দিন শুক্রবারে একটি খবর রটে, রাজধানীতে মধ্যরাতে বেপরোয়া গতিতে চালানো গাড়ি থেকে মদ্যপ অবস্থায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন মডেল-অভিনয়শিল্পী অর্চিতা স্পর্শিয়া ও তাঁর বন্ধু প্রাঙ্গণ দত্ত অর্ঘ্য। পুলিশের দাবি, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে পথ আটকানোর পর সড়কেই ঘণ্টাখানেক মাতলামি করেন তাঁরা। পরে তাঁদের ধানমন্ডি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে রাতেই মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান তাঁরা। আসলে কী ঘটেছিল, তা–ই জানার চেষ্টা করা হয় স্পর্শিয়ার সঙ্গে কথা বলে।

অর্চিতা স্পর্শিয়া
প্রথম আলো
প্রশ্ন

বৃহস্পতিবার রাতে আসলে কী ঘটেছিল?

বনানীতে একটা দাওয়াত থেকে ধানমন্ডিতে আমার বাসায় আসছিলাম। আমি সামনের সিটে বসেছিলাম। পাশেই বসে ড্রাইভ করছিল আমার বন্ধু। আমাদের গাড়ি ৬০ কিমি গতিতে চলছিল, এটা তো খুব বেশি নয়। কোনো অ্যাক্সিডেন্ট হয়নি, ওই রাস্তায় কোনো স্পিড লিমিটও ছিল না। সাতমসজিদ রোডে টার্ন নেওয়ার পর পুলিশ এসে বলছে, ‘আপনারা যেভাবে টার্ন নিলেন, তাতে সিএনজিতে লেগে যেতে পারত।’ আমরা বললাম, সিএনজিতে তো লাগেনি। আমরা কাউকে ডিস্টার্ব করছি না, শুধু শুধু কেন আমাদের থামাচ্ছেন? এটা তাদের গায়ে লেগে গেছে। গাড়ির কাগজপত্রও কিন্তু ঠিক ছিল, গাড়িও ঠিক ছিল, তারপরও কেন আমাদের আটক করা হলো বুঝলাম না। আমাদের অনেকক্ষণ ধরে রাস্তায় বসিয়ে রাখল। আমি তো গাড়িতেই বসে ছিলাম। বিষয়টা এমন, কেন আমি গাড়ি থেকে নামছি না। একসময় আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মতো হয়ে গেলে, আমি রেগে গাড়ি থেকে নেমে যাই। পুলিশদের বলেছি, আমরা কোনো আইন ভঙ্গ করিনি, গাড়ির স্পিডও বেশি ছিল না, কাগজও ঠিক আছে। তাহলে কেন আপনারা গাড়ি আটকে রাখছেন। এটা নিয়ে রাগারাগি করি। রাগারাগি করাতে তারা বিষয়টাকে ক্যাশ করে।

অর্চিতা স্পর্শিয়া
প্রশ্ন

থানায় গিয়েছিলেন?

একটা সময় পর আমাকে চলে যেতে বলে আর আমার বন্ধুকে থানায় নিয়ে যেতে চায়। আমি বলেছি, আমার বন্ধু যদি থানায় যায়, আমিও যাব। আমিও সঙ্গে গেলাম। আমাকে থানার একজন বলেছে, আপনি এসেছেন কেন? আপনি চলে যান। আমি বলেছি, আমার বন্ধুকে না নিয়ে তো যাব না। পরে কি জানি কি কথা বলেছে, জানিও না। আমি বাইরে বসে ছিলাম। ভেতরে বসতেও দেয়নি। ভেতরে কথা বলতে গেছি, বলে যে আপনার সঙ্গে তো কোনো ইস্যু নেই।

প্রশ্ন

পুলিশ বলছে, আপনারা নাকি মদ্যপ ছিলেন। আপনার বন্ধু তো থানায় মুচলেকাও দিয়ে এসেছেন। সেখানে স্বীকারও করেছেন, তিনি মদ পান করেছেন?

না না, এটা তো হতেই পারে না। তবে থানায় মুচলেকায় কী লিখেছে, তা আমি জানি না। আমি শুধু জানি যে এসব কিছুই নয়। এটা একটা হ্যারাজমেন্ট ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ ছাড়া বসিয়ে রাখাতে আমি টেম্পার লুজ করেছি। আমার যে বন্ধু গাড়ি চালাচ্ছিল, আটকানোর পর সে পুলিশকে এ–ও বলেছে, আমার যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে, তাহলে সরি, আমাকে বাসায় যেতে দিন। এরপরও পুলিশ আমাদের দিকে তাকিয়েই আছে, তাকিয়েই আছে। এমনভাবে তাকিয়ে আছে, যেন আমরা বিশাল অপরাধ করে ফেলেছি! একসময় বিরক্ত হয়ে আমরা যদি টেম্পার লুজ করি, সেটা তো অন্যায় হয়নি। এমনিতে রাস্তায় বসিয়ে রেখেছে। প্রথমত, কোনো কারণ ছাড়া রাস্তায় গাড়ি ওভাবে দাঁড় করানোর কোনো কারণই তো দেখি না। আমরা যে দাওয়াতে ছিলাম, সেখানে কোনো ড্রিং ট্রিংক কিছুই হয়নি। আমরা দুজনের একজনও ড্রাংক ছিলাম না, এটা আমি প্রমাণ করতে পারব। নানা মাধ্যমে যে লেখা হচ্ছে, মধ্যরাতে মদ্যপ, এটা পুরোটাই মিথ্যা কথা। বলা হচ্ছে, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো হয়েছে, সেটাও ঠিক নয়।

অর্চিতা স্পর্শিয়া
প্রশ্ন

আপনারা যখন বাসায় ফিরছিলেন, তখন রাত কয়টা?

পুলিশ আমাদের যখন আটক করে, তখন রাত সাড়ে ১১টা হবে। থানায় যখন যাই, আনুমানিক রাত সাড়ে ১২টা কিংবা বেশিও হতে পারে।

প্রশ্ন

আপনাদের কত দিনের পরিচয়...

ওর সঙ্গে দেড় বছরের পরিচয়। এখন আমরা অনেক ক্লোজ ফ্রেন্ড।

প্রশ্ন

তিনি কি শুধুই আপনার বন্ধু?

(হাসি) অর্ঘ্য আমার বন্ধু। সে ব্যবসা করে। তবে বন্ধুর চেয়ে একটু বেশিও বলতে পারেন। তবে এই মুহূর্তে বলার মতো কিছুই হয়নি। আরেকটু সময় যাক, তারপর চিন্তাভাবনা করব, দেখি।

অর্চিতা স্পর্শিয়া
প্রশ্ন

আপনারা কি বিয়ের চিন্তাভাবনা করছেন?

আমি দু–এক বছরের মধ্যে বিয়ের কথা ভাবছি না।