চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিনে আজ শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে গাজী রাকায়েত পরিচালিত ‘গোর’ সিনেমা। বাংলা ও ইংরেজি—দুই ভাষায় মুক্তি পাবে ছবিটি। নতুন বছরের শুরুতে ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্স আর যমুনা ব্লকবাস্টারসেও মুক্তি পাবে ছবিটি। ছবিটিসহ অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।
মাত্র একটি প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে?
একটি প্রেক্ষাগৃহে হলেও সিলভার স্ক্রিনের দুই পর্দায় দুই ভাষায় দেখানো হবে ছবিটি। একটিতে বাংলা, অন্যটিতে ইংরেজি। এরপর আগামী ১৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসেও ছবিটি প্রদর্শনের ব্যাপারে কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়েছে। ওখানকার একটি আন্তর্জাতিক পরিবেশক প্রতিষ্ঠান ছবিটি পছন্দ করেছে।
ছবিটি কি বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতে নির্মাণ করেছেন?
হ্যাঁ, দুটি ভাষাতেই তৈরি হয়েছে। একই গল্প, একই অভিনয়শিল্পী দিয়ে আলাদাভাবে দুই ভাষাতে ছবিটির শুটিং করা হয়েছে।
দুই ভাষায় নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন ভাবনা কাজ করেছে?
দুটি কারণে কাজটি করতে উৎসাহিত হয়েছি। প্রথমত, আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছবিটি মুক্তি দিতে চেয়েছি। দ্বিতীয়ত, বিশ্বদরবারে বাংলাদেশি ছবির অবস্থা নিচের দিকে। বাংলাদেশি সিনেমাকে আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেখতে চাই। হলিউড, বলিউডের শতকোটি টাকা বাজেটের ছবির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পারব না আমরা। তবে আমাদের গল্প খুব সুন্দর। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশক প্রতিষ্ঠান ‘গোর’ ছবির গল্প পছন্দ করেছে। এরপর ওখানে প্রদর্শনীর আগ্রহ দেখিয়েছে। তা ছাড়া এখন বিভিন্ন দেশে একই গল্পে একই অভিনয়শিল্পী নিয়ে দুই ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে। ভারত অনেক আগেই শুরু করেছে। আমরা এবার শুরু করলাম।
আলাদা করে দুই ভাষায় শুটিং কত দিন সময় লেগেছে?
শুটিং শুরুর এক বছর আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছি। শুটিংয়ের আগে মেকআপ ও কস্টিউম কেমন হবে, তা নিয়ে গবেষণা করতে হয়েছে। এরপর শুটিং শুরু করেছি। শুটিং শেষ করতে টানা দুই মাস লেগেছে। আমার গ্রামের বাড়ি দোহারের শাইনপুকুর এলাকায় একটি পরিত্যক্ত জঙ্গলের সন্ধান পাই। সেটি পরিষ্কার করে আস্ত বাড়ির সেট বানান উত্তম গুহ। পাশাপাশি ওখানে পদ্মার চরের সেট বানানো হয়। জলোচ্ছ্বাসের দৃশ্যও তৈরি করা হয়েছিল। খুব পরিকল্পনা করে কাজটি শেষ করেছি।
‘মৃত্তিকা মায়া’ ছবিটি সাত বছর আগে বানিয়েছিলেন। এরপর এত সময় নিলেন কেন?
বাংলাদেশের সিনেমা, সিনেমা হলের অবস্থা—সবকিছু পিছিয়ে পড়েছে। তা ছাড়া একটি ভালো গল্পের চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য যে ধরনের বাজেট দরকার, আমাদের এখানে তা পাওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। কারণ, দিন দিন পেশাদার প্রযোজক কমেই চলছে। আমি তো আর সিনেমা নির্মাণের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে পারব না।
‘গোর’ নামে এক ঘণ্টার নাটক বানিয়েছিলেন। সিনেমা বানালেন কেন?
এটি ১৯৯৮ সালে বিটিভিতে প্রচারিত হয়েছিল। সেই সময় বিভিন্ন বিভাগে মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারও পেয়েছিল নাটকটি। ওই সময় আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম, পরবর্তী সময়ে ‘গোর’ নিয়ে সিনেমা বানাব। আমি মনে করি, এক ঘণ্টার কাহিনিচিত্র ফিল্মের জন্য অনুপ্রেরণার। তাই ২০ পর এসে ‘গোর’ গল্প নিয়ে সিনেমা বানালাম।
ছবিটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কেমন?
প্রত্যাশা ভালো। পাঁচ মিনিট দেখার পর পুরো ছবিটি দেখতে দর্শক আগ্রহী হয়ে উঠবে। ‘গোর’ শব্দটি শুনলে যতটা ভারী লাগে, গল্প মোটেও তেমন নয়। এটি বিনোদনধর্মী গল্পের ছবি। দর্শক উপভোগ করবে। এই ছবির গল্পটাই এখানে তারকা।
নতুন ছবি নিয়ে কিছু ভেবেছেন?
কাজ তো করব। আপাতত ‘গোর’ নিয়ে ব্যস্ত আছি। ছবিটির প্রচারণা করছি। দেশের বাইরেও যেহেতু ছবিটি দেখানো হবে, সে ব্যাপারেও কাজ করছি।