‘শান’ ছবির কাজ এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যেই ‘বিশ্ব সুন্দরী’ ছবির কাজ শুরু করেছেন সিয়াম আহমেদ। ছবিতে সিয়ামের বিপরীতে অভিনয় করছেন পরীমনি। নরসিংদীতে কাজ শেষ করে এখন ঢাকার লোকেশনে চলছে ছবিটির শুটিং। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা, সহশিল্পী পরীমনি আর নিজের আগামী কিছু কাজের ব্যাপারে কথা বলেছেন সিয়াম।
‘বিশ্ব সুন্দরী’ ছবির শুটিং কেমন হচ্ছে?
ভালো। কোনো ঝামেলা ছাড়াই ভালো কাজ হচ্ছে। ১৫ থেকে ২০ জুলাই নরসিংদীর শিবপুরে শুটিং করেছি। এখন ঢাকার দিয়াবাড়িতে শুটিং করছি। এখানে হয়তো আরও সাত-আট দিন শুটিং হবে।
‘বিশ্ব সুন্দরী’ ছবিতে আপনার চরিত্র নিয়ে কথা বলা যাবে?
বলে দিলে তো দর্শকের কাছে চরিত্রের আকর্ষণ কমে যাবে। প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখার মজাটা আর থাকবে না। আমার চরিত্রের নাম স্বাধীন। এ সময়ের সহজ সরল শিক্ষিত একটি ছেলে। ভদ্র ও নরম প্রকৃতির। স্বাধীন চরিত্রটি এ সময়কে উপস্থাপন করে। স্বাধীনের জীবনে একটা গল্প আছে। প্রেক্ষাগৃহে বসে এ সময়ের তরুণদের অনেকের সঙ্গে স্বাধীনের গল্প মিলে যাবে।
পরীমনির সঙ্গে কাজ করছেন। কেমন লাগছে?
অবশ্যই ভালো লাগছে। সে কারণে কাজও ভালো হচ্ছে। আর তাঁর সঙ্গে এটি প্রথম কাজ, কিন্তু কাজ করতে এসে তা মনে হচ্ছে না। পরীমনির কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পাচ্ছি। কাজ শুরুর কয়েক দিনের মাথায় পরীমনির সঙ্গে চমৎকার রসায়ন তৈরি হয়েছে। প্রতিদিনই সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে। আমাদের কাজ দেখে পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীও বেশ খুশি।
প্রথম ছবি ‘পোড়ামন ২’, এরপর ‘দহন’। এখন ‘শান’ ও ‘বিশ্ব সুন্দরী’ ছবির শুটিং চলছে। চার ছবিতে চার ধরনের চরিত্র।
এ সময়ের অনেক কাজ নিয়ে দর্শক খুব বিরক্ত। একই ধরনের গল্প আর একই ধরনের চরিত্র করলে দর্শক আরও বিরক্ত হবে। ‘পোড়ামন ২’ ছবিতে আমি গ্রামের ছেলে, সিনেমার নায়ক হতে চাই; ‘দহন’ ছবিতে শহরের নেশাগ্রস্ত একটি যুবক, ‘শান’ ছবিতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবার ‘বিশ্ব সুন্দরী’ ছবিতে সহজ সরল এক যুবক। যখন আমার কাছে কাজ আসে, তখন ছবির গল্প আর চরিত্রের ভিন্নতা আছে কি না, তা আগে জেনে নিই, বুঝে নিই। যদি গল্পে কাজ করার সুযোগ থাকে, চরিত্রের ভিন্নতা দেখানোর সুযোগ থাকে, তাহলে কাজটি করতে রাজি হয়। প্রতিটি ছবিতে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের মধ্য দিয়ে নিজেকে আবিষ্কার করতে চাই।
‘শান’ অ্যাকশনধর্মী ছবি। আবার ‘বিশ্ব সুন্দরী’ সামাজিক প্রেমের ছবি। এক ছবির শুটিং শেষ না করে আরেক ছবির কাজ করছেন। তাতে চরিত্র নিয়ে সমস্যা হয়?
অবশ্যই হয়। আমি সব সময় চাই, এক চরিত্রের মধ্যে থেকেই পুরো ছবির কাজ শেষ করতে। এক ছবির চরিত্র শেষ না করে আরেকটি ছবির চরিত্রে ঢুকতে সমস্যা হয়। শেষে দুই ধরনের চরিত্রে এর প্রভাব পড়ে। কারণ চরিত্র থেকে বের হওয়া যেমন কঠিন, তেমনি চরিত্রে ঢোকাও কঠিন। এক চরিত্রের কাজ শেষ করে মাথা থেকে চরিত্রটি ফেলে দিয়ে নতুন চরিত্রে, নতুন উদ্যমে কাজ ভালো হয়।
নতুন আর কী কী কাজ করছেন?
আপাতত ‘শান’ আর ‘বিশ্ব সুন্দরী’ নিয়েই আছি। তবে এ বছর আরও চার-পাঁচটি কাজ করব। চিত্রনাট্য হাতে আছে। এই দুটি ছবির কাজ শেষ করে নতুন ছবির শিডিউল দেব।
চলচ্চিত্রের অনেকেই তো ওয়েব সিরিজ করছেন। আপনি?
ওয়েব মানেই ফিল্ম। এর দর্শক পৃথিবীজুড়ে। সুতরাং নাটকের মতো করে ওয়েব করলে তো হবে না। আর আমি ওই ধরনের ওয়েব সিরিজে কাজ করতে চাই না। উপযুক্ত বাজেট, উপযুক্ত পারিশ্রমিকের ওয়েব সিরিজে কাজ করব আমি।
আপনার ফেসবুক পেজে কয়েকটি ভিডিও দেখেছি। তাতে দেখা যাচ্ছে, নরসিংদীর শিবপুরে আপনাকে দেখতে শত শত মানুষ বাড়ির চারপাশে ভিড় করেছেন। আপনাকে দেখে ‘সিয়াম সিয়াম’ বলে চিৎকার করছেন।
যে বাড়িতে শুটিং হতো, সেখানে অনেক দূর থেকে আমার ভক্ত আর দর্শকেরা ছুটে আসতেন। সকাল ৯টা থেকে রাত পর্যন্ত আমাকে দেখার জন্য বাড়ির চারপাশে ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকতেন। যত দিন গেছে, ততই ভিড় বেড়েছে। কাজের ফাঁকে প্রতিদিন বাড়ির ছাদে উঠে তাঁদের সঙ্গে দূর থেকে কথা বলার চেষ্টা করেছি। কোনো কোনো সময় নিচে নেমে সীমানাপ্রাচীরে মধ্যে থেকে কারও কারও সঙ্গে হাত মিলিয়েছি, অটোগ্রাফ দিয়েছি, সেলফি তুলেছি। কোনো কোনো ভক্ত তাঁদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রান্না করে খাওয়াতে চেয়েছেন। এত অল্প সময়ে সেখানে দর্শকের কাছ থেকে এত এত ভালোবাসা পেয়ে আমি অভিভূত। আমার আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই।