অভিনয়শিল্পী জ্যোতিকা জ্যোতি নতুন পরিচয়ে আসছেন। সরকারি অনুদান পেতে পাণ্ডুলিপি জমা দিয়েছেন। চালু করেছেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষিজাত পণ্য সংগ্রহের মিশনে নেমেছেন। মাছ, মধু, শর্ষে, তেল সংগ্রহ করছেন। ‘লিজ’ নিয়েছেন নদী। কী কারণে এসব করছেন, তা জানতে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।
অভিনয় কি কমিয়ে দিলেন?
এখন আমি কৃষিকাজ নিয়ে ব্যস্ত আছি। আগামী পয়লা বৈশাখে আমার কৃষিপণ্যের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। প্রতিষ্ঠানের লোগো উন্মোচনও হবে। এর মধ্যে সিনেমা নিয়ে ভাবছি।
কী ভাবছেন?
সরকারি অনুদান পেতে একটি ছবির চিত্রনাট্য জমা দিয়েছি। আমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে ছবিটি তৈরি হবে। এই ছবির জন্য একধরনের কঠিন প্রস্তুতিও আছে।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চালু করলেন কবে? কী নাম?
বেশ কিছুদিন আগে। এখনই প্রযোজনা সংস্থার নাম বলতে চাই না। যদি অনুদান পাই, তখন ঘটা করে প্রতিষ্ঠানের নামটা বলতে চাই।
এই প্রতিষ্ঠান থেকে নাটক বানানো হবে কি?
নাটক বানানো নিয়ে আমার কোনো পরিকল্পনা নেই। আমার প্রতিষ্ঠান থেকে ডিজিটাল প্রিন্টিং, ইভেন্টের কাজ করছিলাম। কিছুদিন ধরে ভাবলাম, ছবিও বানাব। দুটি সিনেমা ডিস্ট্রিবিউটর করার প্রক্রিয়াও চলছে। চূড়ান্ত হলে তাও বলতে পারব।
হঠাৎ সিনেমার প্রযোজক এবং পরিবেশক হতে চাইলেন কেন?
আমি আসলে আমার ইচ্ছার মধ্যে বেঁচে থাকতে চাই। নিজের ভালো লাগার কাজ করতে হলে নিজের একটা প্রতিষ্ঠান থাকা জরুরি মনে করেছি। কারণ, নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থাকলে মনের মতো সিনেমা বানানো সম্ভব হবে। একই সঙ্গে অসাধারণ কিছু ছবির পরিবেশনাও করতে চাই। দ্রুত এসব ঠিক করে ফেলতে পারলে অভিনয় মন দিয়ে করতে পারব।
সরকারি অনুদান না পেলে ছবি বানাবেন কি?
নিশ্চয় বানাব, কেন নয়। অনুদান পেলে এই যাত্রায় কিছুটা এগিয়ে যাব, এই আরকি। তা না হলে ভিন্নভাবে ভাবতে হবে। বিনিয়োগকারী খুঁজতে হবে। তখন কাজটা একটু পিছিয়ে যাবে। তাই এই মুহূর্তে অভিনয়ের চেয়ে কৃষিতে মনোযোগ দিচ্ছি। এরই মধ্যে বেচাকেনা শুরুও হচ্ছে।
কৃষির দিকে ঝুঁকলেন, অভিনয়ের কী হবে?
এটা খুবই অযৌক্তিক প্রশ্ন। অভিনয়ের সঙ্গে কৃষির কোনো বিরোধিতা নেই।
বিরোধিতা বলিনি। অভিনয় এবং কৃষি দুটোকে সমন্বয় করবেন কীভাবে?
বুঝতে পারছি। এই প্রশ্নটার সম্মুখীন আমাকে হরহামেশাই হতে হচ্ছে। অনেকে এ-ও বলেন, আরে, জ্যোতি তো অভিনয় ছেড়ে দিয়েছে। কৃষিকাজ করছে। সবাইকে বলতে চাই, অভিনয়ের পর যে সময়টা থাকে, তখনই কৃষিতে মনোযোগ দিয়েছি। যেহেতু গ্রাম এবং কৃষির প্রতি আগে থেকে আগ্রহ, তাই করোনার সময় কৃষি নিয়ে ভেবেছি। এই কাজে আমার সঙ্গে ভাইয়েরাও যুক্ত হয়েছেন।
কোন কোন পণ্য নিয়ে কাজ করছেন?
প্রাকৃতিক এবং অরগানিক পণ্য নিয়ে বেশি কাজ করছি। নদীর মাছ, দেশি হাঁস-মুরগি, হাঁসের ডিম, দেশি নানা সবজিসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে কাজ করছি। কোনো হাইব্রিড কিছু নিয়ে ভাবছি না। কারণ, আমি মনে করি, আমার দেশের আবহাওয়া ও মাটির সঙ্গে ন্যাচারাল সবই ভালো। করোনার মধ্যেই এই পরিকল্পনা মাথায় এসেছে, তাই মানুষের স্বাস্থ্যের ব্যাপারটা নিয়েও ভাবছি। খাঁটি পণ্য আউটসোর্সিং করছি। দেশি সব ধরনের মৌসুমি ফলও থাকবে।
এত বড় পরিসরে মাছ চাষ করতে পুকুর লাগে। আপনার কি নিজের পুকুর আছে?
না। আমরা নদীর মাছ নিয়ে ভাবছি। সবজি আমার নিজের জমিতে চাষাবাদ করছি। শুধু মাছের জন্য একটা নদী লিজ নিয়েছি। গৌরীপুরের জলবুরুঙ্গা নদীর মাছের সুনাম আছে। এই নদীর মাছের স্বাদই আলাদা। বোয়াল তো বিখ্যাত।
নতুন কোনো সিনেমায় অভিনয়ের ব্যাপারে কারও সঙ্গে আলাপ হয়েছে?
সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছি। রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত ছবির পরে আমি সিনেমায় অভিনয় নিয়ে অনেক বেশি ভাবছি। এখন আমার পছন্দের বাইরে কোনো কাজ করব না।
বিয়েশাদি করবেন কবে?
বাসা থেকে বিয়ের কথা বলতে বলতে ক্লান্ত। আমার এই মুহূর্তে ইচ্ছা নেই। তবে পছন্দসই পাত্র পেলে বিয়ে করব।
কেমন পাত্র প্রত্যাশা করেন?
আমার কাজের সহযোগী হতে হবে। কাজের পাশাপাশি আমার প্রতিও সম্মান থাকতে হবে।