প্রথমবারের মতো একটি ধারাবাহিক নাটকে যুক্ত হতে যাচ্ছেন। চরকিতে প্রকাশিত ইকোলজিক্যাল থ্রিলার ‘তিথির অসুখ’ হয়েছে বেশ প্রশংসিত। এসব নিয়েই কথা বললেন তাসনিয়া ফারিণ।
প্রথমবারের মতো টিভি ধারাবাহিকে যুক্ত হচ্ছেন শুনলাম। এত দিন করেননি কেন?
এত দিন মনের মতো গল্প পাচ্ছিলাম না। যেসব পেয়েছি, সেসবের অংশ হতে চাইনি। সিঙ্গেল বা ধারাবাহিকের চেয়ে আমার কাছে জরুরি হলো গল্প। এবার একটা মনের মতো গল্প পেয়েছি। শুনে মনে হলো, আমি এই গল্পের অংশ হতে চাই।
গল্পের ভালো-মন্দ বাছাই করেন কী করে?
ভালো-মন্দ আসলে আপেক্ষিক। আমার কাছে যেটা ভালো লাগবে, অন্য কারও কাছে ভালো না–ও লাগতে পারে। আমি যেটা করি, গল্পটা পড়ে আমার আগ্রহ তৈরি হচ্ছে কি না, চরিত্রটায় নিজেকে কল্পনা করতে পারছি কি না—এসব দেখি। মোটকথা, নিজের রুচি মেনেই কাজ করি বেশির ভাগ সময়।
এমনিতে অভিনয়জীবন কেমন লাগছে?
২০১৯ সাল থেকে নিয়মিত কাজ করছি। কেবল তিন বছর হলো। জীবনে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি, আবার অনেক কিছুই বদলে গেছে। আমি খুবই ভাগ্যবান যে এমন একটা পেশায় যুক্ত হতে পেরেছি, যেটা করে আমার ভালো লাগছে।
শুধুই কি ভালো লাগা? মন্দ লাগা কিছু নেই?
কাজটা পছন্দের। দেখা যায়, একটা পেশায় মানুষ বছরের পর বছর কাজ করে যায়, যেটা তার পছন্দের না। আমার ক্ষেত্রে সেটা হয়নি, এটাই বড় কথা। আমি খুবই আশাবাদী মানুষ। আমার মনে হয়, আমাদের কাজের জায়গা ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হচ্ছে। অনেক ভালো ভালো কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সঠিক সময়ে সঠিক সুযোগটা সবারই কাজে লাগানো উচিত। দৃঢ় বিশ্বাস ও ধৈর্য ধরে কাজ করে গেলে, যেকোনো পেশা, যেকোনো জায়গা, যেকোনো পরিস্থিতিতেই ভালো কাজটা বের করে আনা সম্ভব। আমি সেই চেষ্টাই করছি।
অবসর পান?
যেমন আজ আমার অফ ডে ছিল। সপ্তাহে অন্তত এক দিন অফ নিই। সেদিন সবচেয়ে বেশি ব্যস্ততা থাকে। নিজের জন্য সময় রাখার চেষ্টা করি। বিকেলে হাঁটি বা সিনেমা দেখি বা বই পড়ি। এটুকুই আমার নিজের জন্য করা।
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং যে করেন না, বন্ধুরা অসামাজিক বলে না?
ফেসবুক নেই, তবে ইনস্টাগ্রাম আছে। আমি কাজে এটাকে ব্যবহারের চেষ্টা করি। মানুষের সঙ্গে খুব বেশি ইন্টার্যাক্ট করি না, এটা আমার পছন্দ না। অবসর থাকলে নিজের মতো করে সময় কাটাই। এসবে আমি আগের মতোই আছি। খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। খুব একটা বন্ধু নেই আমার। যে কজন আছে, তারা যে যার কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত। যখন কাজ করতাম না, তখনো যে খুব ইন্টার্যাক্ট করতাম, তা না।
নিজের কাজ দেখেন?
বেশির ভাগ সময় যখন জ্যামে বসে থাকি, তখন দেখি।
ছাত্রজীবনের কথা মনে পড়ে?
তখন বিটিভির নিয়মিত দর্শক ছিলাম। সপ্তাহে এক দিন সিনেমা হতো। সেটার জন্য বসে থাকতাম। ঢাকার বাইরে থাকতাম। বাবার পোস্টিং ছিল ঢাকার বাইরে। কবে শুক্রবার আসবে, সে জন্য অপেক্ষা করে থাকতাম। বাড়িতে ডিশ ছিল না। ওই সময়, বলা চলে, আমি একেবারে বন্ধুহীনভাবে বড় হয়েছি।
তখনকার টিভি আর এখনকার টিভির কাজে পার্থক্য দেখতে পান?
যুগে যুগে প্রযুক্তি বদলে গেছে। আমরা বদলেছি, পরিবেশ বদলে গেছে, কাজও বদলে গেছে। এখনকার মানুষের চিন্তা–ভাবনা, নৈতিকতা একেক রকম। সমাজে এখন যা ঘটছে, পর্দায় তো সেসবই দেখা যাবে, তাহলেই তো রিলেট করা যাবে। সেটাই স্বাভাবিক। ভালো-মন্দ আগেও ছিল, এখনো আছে।
জনপ্রিয়তা উপভোগ করেন?
আমার কত ভক্ত বা আদৌ আছে কি না, আমি জানি না। আমি জানি না, কোথায় কী হচ্ছে। আমি আমার কাজটা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। আমার যে কাজ করতে ভালো লাগে, সেটা যদি আরও দশজন মানুষের ভালো লাগে, সেটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। আমি একটু অন্তর্মুখী ধরনের। তবে আমার মনে হয়, মানুষ আমাকে যদি দূর থেকে পছন্দ করে, সেটাই আমার বেশি ভালো লাগবে।