‘জানতাম না সে আমাকে পছন্দ করে’

ওই সময় আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে গিয়েছিল। ফোনও হারিয়ে ফেলেছিলাম। নিজের নম্বরটিও পরিবর্তন করতে হয়েছিল। এ কারণে কারোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। এখন নতুন করে ফেসবুকে নিয়মিত হয়েছি আবার। সবার ফোন নম্বরও জোগাড় করছি। আস্তে আস্তে সবার সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে।

বিয়ের পরপর কাজের জন্য অনেকই ফোন করতেন। এমনকি আমি যখন অন্তঃসত্ত্বা, তখনো বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ের জন্য কেউ কেউ আমাকে ফোন করেছেন। সে সময় নতুন বিয়ে, কাজের চেয়ে নতুন সংসারকে প্রাধান্য দিয়েছিলাম। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে ছিলাম। শ্বশুর নেই, শাশুড়িকে দেখভাল থেকে শুরু করে সংসারটা গোছাচ্ছিলাম। তা ছাড়া করোনার মধ্যে কাজের তেমন আগ্রহও ছিল না। সব মিলে ফোন নম্বর পরিবর্তন করতে হয়েছিল, যাতে আমার কর্মক্ষেত্রে কারোর সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝি না হয়।

দুই পরিবারের একেবারেই সীমিতসংখ্যক সদস্য নিয়ে আমার বিয়েটা হয়েছে। তা ছাড়া ফেসবুক হ্যাক ও ফোন হারানোর কারণে যোগাযোগের সব রাস্তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। করোনার কারণে কোনো অনুষ্ঠানও করা যায়নি। সবকিছু মিলে জানানোর পথ ছিল না। বিয়ের পর মনে হলো, বিয়ে যেহেতু হয়েই গেল, তাহলে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সবাইকে জানাব। অনুষ্ঠানও করা যাবে।

মা হয়ে গেছি (হাসি), বিয়ের অনুষ্ঠান তো আর করা যাবে না। তবে অবশ্যই আমার মিডিয়ার বন্ধু, সহশিল্পী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে একটা গেট টুগেদার করার ইচ্ছা আছে। সেটা বাচ্চার প্রথম জন্মদিন বা আমাদের বিয়েবার্ষিকী ধরেও হতে পারে।

ভালো আছে। ওর বয়স ১ মাস ২৬ দিন। মেয়ের নাম রেখেছি আনাহিতা রহমান আলিফ। খুব চটপটে। কোলে বসে সারাক্ষণ অস্থির থাকে। বাবুকে নিয়েই এখন আমার ব্যস্ততা বেশি। বাচ্চা এখন আমার কোলেই আছে। আমরা মায়ের বাড়িতে এসেছি। কয়েক দিন পর শ্বশুরবাড়িতে যাব।

কাজের জন্য এরই মধ্যে কেউ কেউ নক দেওয়া শুরু করেছেন। বাচ্চা হওয়ার কারণে অনেকটা মুটিয়ে গেছি। ফিট হতে হবে। অবশ্য সেই প্রস্তুতিও শুরু করতে যাচ্ছি। আগামী সপ্তাহ থেকে নাচের ক্লাস শুরু করব। শরীর ঠিক রাখতে আমি কখনোই জিম করি না। নেচেই মেকআপ করি। নাচলে এক দিকে শরীর ভালো থাকে, অন্য দিকে নাচের অনুশীলনও হয়ে যায়। সব মিলে আশা করছি, আগামী বছরের শুরুর দিকেই কাজে ফিরতে পারব। নতুনভাবে আসতে চাচ্ছি।

না, কোনো বাধানিষেধ নেই। শ্বশুরবাড়ি থেকে আমার কাজের ব্যাপারে পজিটিভ। মিডিয়ার কাজের ব্যাপারে তারা আমাকে আরও উৎসাহিত করে।

আতিকুর রহমান আগে ফ্যাশন ফটোশুটে মডেল হতো। সে সময় বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হতো। দেখা হলে ‘কেমন আছ, ভালো আছি’—এতটুকুই কথাবার্তা হতো। ওই সময় তাঁর সঙ্গে আমার প্রেম, ভালো লাগা, ভালোবাসার বিষয় ছিল না। আমি জানতাম না যে সে আমাকে পছন্দ করে। অনেক দিন পর ২০২০ সালে এসে আমাকে না জানিয়ে আমার মায়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এরপর আমার মা–বাবা তাঁর সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করেন। পারিবারিকভাবে ওই বছরের ১২ মে আমাদের বিয়ে হয়।