জন্মদিনটি ফেসবুকে গোপন করে রেখেছেন অভিনেতা আ খ ম হাসান। দিনটি তিনি ঘটা করে উদ্যাপন করতে পছন্দ করেন না। বিশেষ এই দিনে শুটিং থাকলেও সেটি প্যাকআপ হয়েছে। শুটিং থেকে বাসায় ফেরার পথে ঈদ নাটক, সম্প্রতি গান করা ও বিভিন্ন বিষয়ে কথা বললেন এ অভিনেতা।
শুভ জন্মদিন!
জানলেন কীভাবে, আমি তো দিনটি ফেসবুকে হাইড করে রেখেছি।
জন্মতারিখটি ফেসবুকে গোপন করে রেখেছেন কেন?
আমি কখনোই জন্মদিন পালন করি না। ৩০ বছরের পর জন্মদিন পালন করার কিছু নেই। পরিবারের অন্যদেরও বলে দিয়েছি দিনটিতে কিছু না করতে। অন্য দিনের মতোই দিনটি কাটাই। তবে আমার সন্তানদের জন্মদিন পালন করি।
সম্প্রতি গায়িকা সালমার সঙ্গে আপনার একটি দ্বৈত গান ফেসবুকে প্রকাশ পেয়েছে, কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
হঠাৎ অনুরোধে গান করেছি। আমি তো গানের মানুষ না। গানটি দর্শক পছন্দ করেছেন। অনেক সাড়া পাচ্ছি। মনে হচ্ছে, চেষ্টা সফল হয়েছে। গান গাওয়ার এ চর্চাটা শৈশব থেকেই ছিল। শৈশবের চর্চাটাই দীর্ঘদিন পর কাজে লাগছে।
কখনো গায়ক হওয়ার ইচ্ছে ছিল?
শৈশবে নিজে টাকা জমিয়ে গান শিখেছি, তবলা বাজানো শিখেছি। আরতি ধর নামে একজন আমাকে গান শেখাতেন। একটা মজার গল্প বলি, সেই সময় আমার কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত শুনে নিচতলা থেকে একজন দেখতে এসেছিলেন, কে গায়। আমার মতো চেংড়া ছেলের মুখে রবীন্দ্রসংগীত শুনে অবাক হয়েছিলেন সেই ভদ্রলোক। তখন গান গেয়ে পরিচিতজনদের কাছে অনেক প্রশংসা পেতাম। তখন ইচ্ছা ছিল গায়ক হব। পরে থিয়েটারে চলে আসি। অভিনয় শিখতে থাকি। অনেক পরে বাবু ভাই, চঞ্চল, শামীম ও আমি—চারজন মিলে একটা অ্যালবামও বের করেছিলাম।
কখনো কি মনে হয়েছে, অভিনয় না করে গান করলে ভালো করতেন?
না, কখনোই মনে হয়নি। তবে শুধু গানটাই করে গেলে গান করলে আমি ব্যাপক জনপ্রিয় শিল্পী হতাম। এটা ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে মনে হয়। কারণ, আমি গানের সঙ্গে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, এক্সপ্রেশন খুব ভালোভাবে দিতে পারতাম, শরীরের সঙ্গে একাত্ম হতে পারতাম। দেখেন, আজম খান কিন্তু শুধু দাঁড়িয়ে গাইতেন না। গান করার সময়ও তাঁর মধ্যে অ্যাক্টিং থাকত। জেমসের গানের সঙ্গে মুখের এক্সপ্রেশন কিন্তু অন্য কিছু দাঁড় করায়। মাইকেল জ্যাকসনের গানের সঙ্গে যদি নাচ, এক্সপ্রেশন না থাকত তাহলে আমি শিওর, তিনি মাইকেল জ্যাকসন হতে পারতেন না।
আপনি অভিনয় নিয়ে কি খুশি?
একজন অভিনেতা হিসেবে আমি খুশি—যে কারণে নারায়ণগঞ্জ থেকে আমি ঢাকায় আসতাম, থিয়েটার করতাম। তখন ভবিষ্যৎ কী হবে কোনো ধারণাই ছিল না। উদ্দেশ্যহীনভাবে কাজ করেছি। এত টাকা আয় করব, জনপ্রিয় হব, এটা জীবনেও কোনো দিন ভাবিনি। সব হয়েছে, এটা সৌভাগ্য মনে করি।
শুরুতে আপনি সিরিয়াস চরিত্রে অভিনয় করেছেন, এখন বেশির ভাগ কমেডি চরিত্রে দেখা যায়, গল্পগুলোতে ভেরিয়েশন আনতে পারেন কতটা?
আমি কিন্তু আগে অনেক সিরিয়াস চরিত্রে অভিনয় করেছি। মাঝে কমেডি করেছি। এবার ঈদে অনেকগুলো নাটকে আমার গল্প একদম অফট্র্যাকের। আবার আমার মঞ্চের কাজগুলোও অনেকেই দেখেননি। লাভলু ভাইয়ের কমেডি চরিত্রও করেছি আবার সিরিয়াস নাটকেও কাজ করেছি।
কখনো কি মনে হয়েছে, একই চরিত্র বারবার করছেন কি না?
এটা আর থাকবে না। অঞ্জন আইচের কানামাছি সিনেমায় সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছি। ভিন্ন রকম নাটক করছি। ভারত থেকে সিনেমার প্রস্তাব দিয়েছিল, চরিত্র পছন্দ না হওয়ায় করিনি। এগুলো আসলে সময়ের ব্যাপার। একসময় কমেডি করেছি। এখন তো বিভিন্ন রকম ওটিটি প্ল্যাটফর্মের কাজ আসছে। সেখানে ভিন্ন গল্পেই দর্শক দেখবেন।
ক্যারিয়ারে কোনো বিষয়ে আক্ষেপ আছে?
অভিনয় করতে করতে গান করছি, কী আক্ষেপ থাকবে (হাসি)? আমার কোনো আক্ষেপ নেই। তবে ভবিষ্যতে পরিচালনায় না এলে হয়তো আক্ষেপ থাকতে পারে। সময় বুঝে পরিচালনা করতে চাই।
শুনলাম ঈদে আপনার অভিনীত ৩০টির অধিক নাটক প্রচারিত হবে?
আগের কিছু নাটক করা ছিল। সেগুলো মিলে বেশিও হতে পারে।