ঈদে বেশ কিছু নাটকে শোনা গেছে তাঁর গান। নিজের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ঘরের স্টুডিও থেকেই রেকর্ড করছেন নতুন নতুন গান। ‘ছোটকাকু’ সিরিজ দিয়ে সম্প্রতি অভিনয়েও হাতে খড়ি হয়ে গেল। এসব নিয়েই বিনোদনের সঙ্গে কথা বললেন সোমনূর মনির কোনাল।
ঈদ কেমন কাটল?
ঈদ আর আমার জীবনে কোনো অর্থ রাখে না। আব্বা চলে যাওয়ার পর থেকে উৎসবের দিনগুলোতে মনে হয়, দিনটা দ্রুত চলে যাক।
করোনার মধ্যেই আপনার বেশ কিছু গান প্রকাশিত হয়েছে। ঘরবন্দী অবস্থায় কাজ করতে অসুবিধা হয় না?
কিছু করার ছিল না। ঘরে বসেই বেশির ভাগ গানে কণ্ঠ দিয়েছি। বিধিনিষেধ উঠে গেলে হয়তো আবারও স্টুডিওতে গিয়ে কাজ করতে পারব।
আপনি অনেক বেশি সিনেমার গানে ঝুঁকে পড়েছেন। পুরোদস্তুর প্লেব্যাক সিঙ্গার হয়ে যাচ্ছেন?
২০০৯ সালে সেরাকণ্ঠ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার তিন দিন পর থেকে আমি সিনেমায় গান করতে শুরু করি। এখনো করে যাচ্ছি। তবে আমি তো সব রকম গানই করি। আমার কাজ গান করা, প্লেব্যাক বা কোন মাধ্যমের জন্য গাইছি, সেটা মুখ্য নয়।
ফেসবুকে দেখলাম উকুলেলে বাজাচ্ছেন। শিখেছেন কার কাছে?
ইউটিউবে সব টিউটোরিয়াল আছে। সেখান থেকেই শিখেছি। তবে ইনডেপথ শিখতে হলে গুরুর কাছে শিখতে যেতেই হবে। নাচ, গান, যন্ত্র—এগুলো গুরুর কাছেই শেখা উচিত।
এই দুর্যোগে আপনার গুরু কেকা মুখার্জির খবর নিয়েছিলেন?
তাঁর সঙ্গে আমার যোগাযোগটা সব সময়ই ছিল। এখনো আছে। আমার জন্য সুখবর হচ্ছে, তিনি পাকাপাকি কুয়েত থেকে ভারতে ফিরেছেন। অনলাইনে তাঁর কাছে আবারও শিখতে শুরু করেছি, যেখানে শেষ করেছিলাম, সেখান থেকে আবার। মহামারি কমলে সশরীর হয়তো যাব তাঁর কাছে। তিনি আমাকে নতুন কিছু এক্সারসাইজ দিয়েছেন। সেসব মেনে এখন কণ্ঠ ব্রাশআপ করছি।
ঈদে বেশ কিছু গান এল। সবচেয়ে ভালো লেগেছে কোনগুলো?
শনির দশা নাটকের ‘হৃদয়ের আয়না’, হোম পলিটিকস নাটকের ‘সংসার হলো এক মায়া’, আলো নাটকের ‘তোমার অগোচরে’।
অভিনয়েও অভিষেক হয়ে গেল। তা–ও আফজাল হোসেনের মতো নির্মাতার হাত ধরে।
‘ছোটকাকু’ সিরিজের বকা খেয়ে বগুড়ায় নাটকে আমি একজন পপুলার সিঙ্গার। নাটকে দেখা যায় আমার গানের শুটিং চলছে। সেটা করতে গিয়ে তিনি আমার দুটি মিউজিক ভিডিও করে দেন। বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে তিনি একটি ল্যান্ডমার্ক, একটা বটগাছের মতো। বটগাছের নিচে গেলে বোঝা যায় গাছটা কতটা ছায়া দেয়। তাঁর পরিচালনায় প্রথমবারের মতো অভিনয় করি। শুরুতে তো আমি করতেই চাইনি। তিনিই আমাকে অভয় দিয়ে বলেছিলেন, ‘তুই পারবি।’ সংলাপ মুখস্থ করানোসহ সবকিছুই তিনি আমাকে দিয়ে করিয়ে নিয়েছেন। তাঁর হাত ধরে অভিনয়ের হাতে খড়ি হলো, এটা আমার জন্য অনেক বড় ঘটনা।
ভাই অর্কর ক্যামেরায় আপনার একটি মিউজিক ভিডিও দেখলাম।
অর্কর নির্দেশনার অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে বিদেশি সিনেমা-সিরিজ দেখার অভিজ্ঞতা, মিউজিক সেন্স তার খুব ভালো। পরিচালনার জন্য লাইট, ক্যামেরা, ফ্রেমিং—এসবে তার ন্যাক আছে। ফরাসি শিল্পী এদিথ পিয়াফের ‘লা ভি অঁ রোজ’ গানটি বাংলা করে গাইলাম, ভাই-বোন মিলে কাজটা করে ভালোই লাগল। এমনকি বিধিনিষেধে বাসা থেকে যতগুলো ভিডিও করতে হয়েছে, প্রায় সব কটি সে–ই করে দিয়েছে।
বিধিনিষেধ উঠে গেলে সবচেয়ে জরুরি কোন কাজটি করবেন?
থিসিসের কাজ করতে হবে। সেটা নিয়ে দৌড়ঝাঁপ আছে। তা ছাড়া বাড়িতে থাকতে থাকতে একদম হাঁপিয়ে উঠেছি। একটু বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছে আছে।