একগুচ্ছ সিনেমায় যুক্ত হয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। বাংলাদেশের প্রথম ওয়েব ফিল্ম ধারাবাহিক ‘মুন্সিগিরি’তে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। সেন্সর পেয়েছে তাঁর অভিনীত ‘পাপপুণ্য’ ছবিটি। সম্প্রতি মুম্বাইতে ‘বঙ্গবন্ধু’ ছবির শুটিং শুরু করেছেন তিনি। বুধবার ভারতের মুম্বাই থেকে তিনি ভাগাভাগি করলেন সেখানে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা।
ইতিহাসের অংশ হতে পেরে কেমন লাগছে?
এটা ভালো লাগার মতোই একটা ঘটনা। ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। একটা আদর্শিক জায়গা, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, বাংলাদেশ—সবকিছু মিলেই। বঙ্গবন্ধুকে আমরা ভালোবাসি। তিনি তো কোনো দেশের বা গোষ্ঠীর নন, তিনি সারা বিশ্বের। এই বায়োপিকের মাধ্যমে তাঁকে বিশ্বের কাছে আরও একবার ছড়িয়ে দেওয়া যাবে। যদিও তাঁর জীবন ও কর্মের যে বিস্তৃতি, সেটা একটা বায়োপিকে তুলে ধরা সম্ভব নয়।
‘বঙ্গবন্ধু’ ছবির পরিচালক শ্যাম বেনেগালের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা বলুন।
তিনি ভারতের অনেক বড় একজন পরিচালক। এই ইন্ডাস্ট্রি অনেক বড়, তাঁদের অ্যারেঞ্জমেন্ট বিশাল। তবু সবকিছু আশ্চর্য রকম গোছানো। সবাই হাইলি প্রফেশনাল। যাঁর যা কাজ, তিনি শতভাগ নিখুঁতভাবে সেটা চেষ্টা করছেন। সেটা হোক কস্টিউম ব্যবস্থাপক বা মেকআপ আর্টিস্ট। আমার মেকআপ নিতে ৩-৪ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। এত বড় দলের সঙ্গে কাজ করেও কমফোর্ট ফিল করছি। শ্যাম বেনেগাল এই বয়সেও আমাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। যত্ন করে কাজের ডিটেইল বের করে নিচ্ছেন। মনেই হচ্ছে না যে এত বড় ডিরেক্টরের সঙ্গে কাজ করছি। ঘাড়ে হাত রেখে গলা ধরে দৃশ্য বুঝিয়ে দিচ্ছেন। শট ওকে হলে প্রশংসা করছেন। এসব তুলনাহীন।
বাংলাদেশে নির্মিত হচ্ছে প্রথম ওয়েব সিনেমা সিরিজ ‘মুন্সিগিরি’, যার প্রধান চরিত্রে গোয়েন্দা হিসেবে অভিনয় করছেন আপনি। এই প্রথম আমাদের দেশি গোয়েন্দা গল্প নিয়ে চরকি এটা করছে। এই ছবি থেকে আপনার প্রত্যাশা কী?
আমরা সব সময়ই চেয়েছি, আমরা আমাদের গল্প বলব। আমি যে চরিত্রে অভিনয় করব, সেটা যেন আমাদের গল্প হয়। কাউকে ফলো করে বেশি দূর এগোনো যায় না। ওটিটিতে সবাই যার যার গল্প নিজের মতো করে বলছে। তাকদির নামে একটা প্রোডাকশনে কাজ করেছি। যাঁরা দেখেছেন সবাই বলতে বাধ্য হচ্ছেন, এটা বাংলাদেশের গল্প। এই প্রজেক্টে যুক্ত হতে পেরে, চরকির সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি আনন্দিত।
‘তাকদির’ সিরিজে কাজ করে অনেক প্রশংসা কুড়িয়েছেন। টিভি, বড় পর্দার মতো ওটিটিও জয় করলেন। এটা আপনাকে কেমন আনন্দ দিচ্ছে?
কাজ করি এ জন্যই। আমরা একটা নন প্রফেশনাল মিডিয়াতে কাজ করি। এখানে অনেক ঘাটতি, অর্থনৈতিক জোগানের, সিস্টেমের। তবু আমরা নিজেদের মতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। নানা ধরনের জটিলতার মধ্য দিয়ে কাজ করতে হয়। এর মধ্যেও যদি কোনো কাজ প্রশংসিত হয়, ভালো লাগে। আগে কোনো কাজ করলে দেশের দর্শকের কথা মাথায় রেখে করা হতো। এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওপেন হওয়ার সুযোগ থাকে। অনলাইনের কল্যাণে জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের নিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছে।
আগের কাজটিকে ছাপিয়ে যেতে পারবেন কি না, এ নিয়ে অস্বস্তি হয় আপনার?
এটা তো নিজের সঙ্গে নিজের চ্যালেঞ্জ। কোনটা করব, কোনটা করব না, এ নিয়ে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হয়। এ জন্য ছয় মাস, এক বছর অপেক্ষা করে কাজে ঢুকি। আয়নাবাজি রিলিজের পরের তিন মাস কাজই করিনি। কারণ আমাকে আগে ওই জায়গা থেকে বের হতে হবে, তারপর নতুন চরিত্রে প্রবেশ করতে হবে। এ জন্য কম কাজ করি, বেছে করি।