শীতের নির্জীব প্রকৃতি ছেড়ে সহসা জেগে ওঠা প্রকৃতির রূপ, রস, বর্ণ সর্বোপরি সৌন্দর্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা সেজেছিলেন বসন্তের সাজে। ঢাকের তালে বসন্তনৃত্যের রঙিন পরিবেশনা ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে ঋতুরাজকে বরণের উৎসব উদ্যাপন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
বুধবার ঋতুরাজ বসন্তকে বরণের আয়োজন শুরু হয় রমনা পার্কে, ঢাকের তালে বসন্তনৃত্যের মাধ্যমে। রমনায় শতায়ু অঙ্গনের পাশে ২২৫ জন নৃত্যশিল্পীর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বসন্তবরণের আয়োজন। রমনার প্রাণ–প্রকৃতির রং আর শিশুশিল্পী ও নৃত্যশিল্পীদের পরিবেশনা যেন মিলেমিশে একাকার।
আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
রমনার এ আয়োজনে তাঁকে স্বাগত জানান বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক। অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রধান অতিথি বলেন, ‘আজকের বসন্ত উৎসব আমরা যেন যুগ–যুগান্তর ধরে উদ্যাপন করতে পারি। আমাদের পরবর্তী বংশধরেরা যাতে এই বসন্ত উৎসব উদ্যাপন করতে পারে, উপভোগ করতে পারে, সেই দায় আমরা পরবর্তী প্রজন্মের ওপর রেখে যাচ্ছি। জীবনের মূল্যে পাওয়া দেশটিকে ভালোবাসতে হবে।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ। সভাপতির বক্তব্যে একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের এই প্রজন্মরাই সংস্কৃতির আলো ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবে। এই ফাল্গুন বাঙালির ঐতিহ্যের অংশ। আমরা বাঙালি সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরছি। আমাদের বৈশাখ, আমাদের ফাল্গুন, চৈত্রসংক্রান্তি বাঙালির আনন্দ–উল্লাসের ভাষা, বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যের ধারা। আমরা কোনোভাবেই তা হারাতে দেব না। আমাদের এই প্রজন্মই তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দেবে।’
বসন্তনৃত্য পরিবেশনার পর ঢাকের তালে শুরু হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। রমনা থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পর্যন্ত তিন শতাধিক শিল্পী এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন। রমনা পার্ক প্রদক্ষিণ করে মৎস্য ভবন হয়ে শোভাযাত্রা বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়। বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে বসন্তনৃত্য পরিবেশিত হয় একাডেমি প্রাঙ্গণে। উন্মুক্ত মঞ্চের এ আয়োজনে শুরুতেই পরিবেশিত হয় দলীয় নৃত্য ‘ঢাক নৃত্য’।
পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি নৃত্যদল। এরপর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি নৃত্যদল পরিবেশন করে দলীয় নৃত্য ‘শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা’। এরপর দলীয় সংগীত ‘আনন্দলোকে’ পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি শিশুসংগীত দল।
এরপর দ্বৈত সংগীত পরিবেশন করেন নওশিন তাবাসসুম স্মরণ ও মোমিন বিশ্বাস। পর্যায়ক্রমে ছিল একক ও দলীয় নৃত্য, গান, আবৃত্তি পরিবেশনা।