টিভি নাটকে মোটে এক বছরের ক্যারিয়ার। অল্প সময়ের ব্যবধানে একের পর এক আলোচিত নাটকে অভিনয় করে দর্শকমহলে পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি হালের টিভি নাটকের উদীয়মান অভিনেত্রী নাজনীন নীহা। ২০২৩ সালে পবিত্র ঈদুল ফিতরে লাভ সেমিস্টার দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক ঘটে তাঁর।
প্রবীর রায় চৌধুরী পরিচালিত এ নাটকে নীহার অভিনয় প্রশংসা কুড়িয়েছে। প্রথম নাটকে অভিনয়ের সুবাদে দর্শকের ভালোবাসার সঙ্গে পুরস্কারও ঝুলিতে ভরেছেন তিনি। মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০২৩-এ তারকা জরিপে সেরা নবাগত অভিনয়শিল্পীর পুরস্কার পেয়েছেন নীহা।
গত ২৪ মে ঢাকার ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারের ‘দ্য গ্রেস’ মিলনায়তনে জমকালো আয়োজনে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে। পুরস্কারের জন্য নীহার নাম ঘোষণার পর মঞ্চের সামনে উপস্থিত দর্শকেরা করতালি দিয়ে তাঁকে অভিবাদন জানান।
পুরস্কার গ্রহণের সময় অশ্রুসজল হয়ে পড়েন। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে গলা ধরে এসেছিল এই তরুণ অভিনেত্রীর। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নাটকের প্রযোজক, পরিচালক, পরিবারের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন তিনি। নীহার এই আবেগ ছুঁয়ে যায় মিলনায়তনে উপস্থিত সবাইকে।
গত শনিবার প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে নীহা বললেন, ‘তখন মনে হয়েছিল, মানুষের এত ভালোবাসা পেয়েছি। এতটা ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য কি না। পুরস্কার পেয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলাম। তখন আমার হৃদয়ে বাবা, মা আর ছোট বোনের মুখটা ভাসছিল।’
উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠ মাড়ানোর আগেই অভিনয়ে নাম লেখান নীহা। এর আগে কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্রে তাঁকে দেখা গেলেও অভিনয়ে আসার পরপরই রাতারাতি পরিচিতি পেয়েছেন। এ পর্যন্ত সাতটির বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন। বেশির ভাগ নাটকেরই ভিউ কোটি ছাড়িয়েছে।
তবে প্রথম কাজটি প্রত্যেক শিল্পীর কাছেই বিশেষ। সেই কাজটা নিয়ে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে মনোনয়ন পেয়ে অভিভূত হয়েছিলেন ঢাকায় জন্ম নেওয়া নীহা। তাঁর ভাষ্যে, ‘প্রত্যেক শিল্পীরই মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের স্বপ্ন থাকে। আমি প্রথম নাটকের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলাম, সেটাই অনেক বড় প্রাপ্তি ছিল। পুরস্কার পাব, এটা ভাবিনি।’
‘পুরস্কারটি পেয়ে ভালো লাগা কাজ করছে। এটি (পুরস্কার) সামনে আরও ভালো কাজের জন্য অনুপ্রাণিত করবে। সঙ্গে দায়িত্বও বেড়ে গেল,’ বলছিলেন এই তরুণ অভিনেত্রী।
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের ২৫তম আসর বসেছিল এবার। রজতজয়ন্তীর আয়োজনটি আরও জমকালো ছিল। এবারের আসরের কান্ডারি ছিলেন নন্দিত উপস্থাপক হানিফ সংকেত; মূল উপস্থাপক হিসেবে হাজির ছিলেন তিনি। উপস্থাপকের সহকারী হিসেবে মঞ্চে ছিলেন নীহা। হানিফ সংকেতের মতো নন্দিত উপস্থাপকের সঙ্গে কাজ করতে পারাটা সৌভাগ্যের বলে মনে করেন নীহা।
গত ঈদুল ফিতরে অভিনয়ের এক বছর পূর্ণ করেছেন নীহা; দ্রুততম সময়ের মধ্যে দর্শকের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। দর্শকের ভালোবাসাকে সঙ্গী করে সামনে এগিয়ে যেতে চান।
দর্শকের ভালোবাসায় অভিভূত হওয়ার পাশাপাশি ভয়ও পান বলে জানান নীহা। তাঁর ভাষ্যে, ‘এটা যেন ধরে রাখতে পারি। এত কম সময়ে ভালোবাসা দিচ্ছে, ফলে আমার প্রতি দর্শকের প্রত্যাশাও বেশি। আরও ভালো করতে হবে। সেই জায়গা থেকে চেষ্টা করছি। মানুষমাত্রই ভুল হয়। জানি না কতটুকু ঠিকঠাকমতো করতে পারছি। আরও শিখতে চাই।’
ঈদুল আজহায় দুটি নাটকে পাওয়া যাবে তাঁকে।