আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে বটতলা থিয়েটার প্রদর্শন করে নাটক ‘রাইজ অ্যান্ড শাইন’। ঢাকার বেইলি রোডের ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে এদিন দুটো প্রদর্শনী ছিল শ্রমিকদের জন্য উন্মুক্ত। প্রদর্শনীতে ১০ জন রিকশাশ্রমিক নাটকটি উপভোগ করেন। নাটক শেষে তাঁরা অভিনেতাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তাঁদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। এক শ্রমিকের ভাষ্য ছিল এমন, ‘স্বামী যদি হয় মাদকাসক্ত, তাহলে সেই নারীর জন্য সংসার চালানো অনেক কষ্টের। এ রকম বাস্তব চিত্র নাটকে দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভাল লাগছে।’ নাটক দেখে খুশি কেউ কেউ জানিয়েছেন যে জীবনে প্রথমবার তাঁরা মঞ্চনাটক দেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করলেন।
নাটকের কাহিনি একটি কারখানার কর্মজীবী যুবতীকে নিয়ে, যার জীবনযাপন ফাঁদের ভেতর আটকা। স্বামী, শিশুসন্তান, কারখানার চাকরি ও হতদরিদ্র বাসগৃহ—সব মিলিয়ে দৈনন্দিন নানা টানাপোড়েন তাকে এক অসহায় আবর্তে বেঁধে রেখেছে। রোজ সকালে দলে দলে যেসব নারীকে আমরা রাস্তা পার হতে বা ফুটওভার ব্রিজে উঠতে–নামতে দেখি, তেমনই এক নারীর প্রতিদিনের জীবনাচার, সংসারের ঘ্যানচক্কর, চুপচাপ সয়ে যাওয়া জীবন, মাল্টিন্যাশনাল ক্রেতার জন্য তৈরি পোশাকের কারখানায় কষ্টকর ওভারটাইম, উদাসীন স্বামীর বদমেজাজ এবং একদিন সব ছেড়ে জ্বলে ওঠার চেষ্টার গল্প নিয়েই নাটক ‘রাইজ অ্যান্ড শাইন’।
ইতালীয় নাট্যকার দারিও ফো ও তাঁর স্ত্রী ফ্র্যাঙ্কা রামে যৌথভাবে এই নাটক রচনা করেন, যার বাংলা রূপান্তর করেন আবদুস সেলিম। নির্দেশনায় ম. সাঈদ। তৈরি পোশাক কারখানার কর্মী মায়ের ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করেন কাজী রোকসানা রুমা। নাটকের অন্য শিল্পীরা হলেন তৌফিক হাসান ভূঁইয়া, শাহনেওয়াজ ইফতি, মাহবুব মাসুম প্রমুখ।
কোরিওগ্রাফি করেছেন সামিনা লুৎফা নিত্রা, আলোক পরিকল্পনা করেছেন মোহাম্মদ আলী হায়দার, মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন ইমরান খান মুন্না ও সংগীত পরিকল্পনা করেছেন লোচন পলাশ।
গতকাল শ্রমিক দিবসে এই নাটকের ১৫ ও ১৬তম প্রদর্শনী হয়। এর আগে দর্শনীর বিনিময়ে প্রদর্শিত এই নাটক পরিচয়পত্র দেখানো সাপেক্ষে তৈরি পোশাকশ্রমিকেরা বিনা মূল্যে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন।