নির্দেশক প্রথমেই বললেন, নাটকের গল্প নিয়ে কিছুই বলবেন না। তাতে নাকি দর্শকেরা আগাম একটা ধারণা নিয়ে আসেন। তাই নাটকের গল্প শোনা হয়নি। কেবল নাটকটি ঘিরে নির্দেশকের অনুভূতি শোনা হলো। ঢাকা থিয়েটার মঞ্চে আনছে সেলিম আল দীনের নাটক ‘পুত্র’। আজ সন্ধ্যা সাতটায় জাতীয় নাট্যশালায় প্রথম মঞ্চায়ন। পরের দিন হবে আরও একটি। তার আগে নাটকটি নিয়ে কথা হলো। বুধবার রাত, শিল্পকলা একাডেমির ১ নম্বর মহড়াকক্ষে চলছিল মহড়া।
নির্দেশক শিমূল ইউসুফ বলছিলেন, ‘পুত্র সেলিম আল দীনের শেষ দিকের নাটক। এখানে সেলিম আল দীনের কিছু ব্যক্তিগত ব্যাপার শিল্পের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে এসেছে। নিজের যে কষ্টগুলো ছিল, যে পুত্রশোক ছিল, সেগুলো শিল্পের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে এসেছে। তাঁর একটি পুত্রসন্তান হয়েছিল। ২০ মিনিট পর সে মারা যায়। সেই সন্তানের শোকটা আমি পুত্র নাটকে দেখেছি। পারুল ভাবির (সেলিম আল দীনের স্ত্রী) যে কষ্ট ছিল, সেটা আমি আবছার ভেতর দেখতে পাই। সিরাজ মাইট্টালকে আমার মনে হয় সেলিম আল দীন। তিনি নিজের জীবনকেই এই গল্পের মাধ্যমে বলে দিয়েছেন।’
মহড়া চলতে থাকে। ফাঁকে ফাঁকে নির্দেশক বুঝিয়ে দিচ্ছেন কী করতে হবে তা। আমানকে বললেন, ‘শরীরটাকে ভাঙতে হবে। বডি ল্যাঙ্গুয়েজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ আমানকে দেখা যাবে সিরাজরূপে। মহড়ার ফাঁকেই খেয়াল করি, আবছা চরিত্রে অভিনয়কারী সামিউন জাহান দোলার চোখে পানি। এক ফাঁকে জেনে নিই, ‘কেমন ছিল চরিত্রটি নির্মাণের যাত্রা?’ বলেন, ‘এখনো তো মা হইনি। তাই অতটা বুঝব না। কিন্তু কাছের যাঁরা চলে গেছেন আর ফিরবেন না, তাঁদের কথা মনে করে যে কষ্ট লাগে, তা অনুভব করার চেষ্টা করি।’
পাশেই বসা ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের প্রাণপুরুষ নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ। বলছিলেন, ‘সেলিম আল দীনের এই নাটকের কাহিনি দেখলে মনে হবে যেন কোনো মেলোড্রামাটিক সামাজিক নাটক। কিন্তু সংলাপ, চরিত্রায়ণ দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন কতটা গভীরে মানুষের সম্পর্কগুলোকে ছুঁতে চেয়েছেন তিনি।’
নাটকটির শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন ঢালী আল মামুন। আলোক পরিকল্পনায় নাসিরুল হক খোকন। শিমূল ইউসুফের সুরারোপে আবহ সংগীত করেছেন ক্যাকটাস ব্যান্ডের সাকী ব্যানার্জি। মঞ্চে দেখা যাবে এশা ইউসুফ, মিলু চৌধুরী, আসাদুজ্জামান আমান, সামিউন জাহান দোলা, সাজ্জাদ আহমেদ রাজীব, রফিকুল ইসলাম, সউদ চৌধুরী, শাহজাদা সম্রাট চৌধুরী, তারেক আহমেদসহ অনেককে।