‘নৃশংস নৈঃশব্দ্য ভেঙে সুনন্দ সাহস জাগুক প্রাণে প্রাণে’ স্লোগান নিয়ে ১৬ নভেম্বর আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে শুরু হয়েছে বটতলা রঙ্গমেলা ২০১৯। গতকাল শুক্রবার ছিল উৎসবের সপ্তম দিন। আগের ছয় দিনের তুলনায় দিনটি ছিল ব্যতিক্রম, এদিন শিশুরাও মেতেছিল উৎসবে। আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ছিল গতকাল সকাল থেকে বরিশাল শব্দাবলী শিশু থিয়েটার, সিসিমপুরের আঁকিবুঁকি ও চট্টগ্রামের ফুলকির আয়োজন। শিশুদের নিয়ে আয়োজন চলবে আজও।
শুক্রবার ফুলকির পুঁথি পড়া পাখি পড়া প্রযোজনাটি প্রদর্শিত হয় দুপুর ১২টায়। সকালে ছিল শব্দাবলীর আওয়ার কিংডম নাটক। দল বেঁধে শিশুরা দেখতে আসে শিশুদের নিয়ে নানা আয়োজন। এ ছাড়া বিকেলে ছিল তথ্যচিত্র ‘ফেরদৌসী মজুমদার: জীবন ও অভিনয়’–এর প্রদর্শনী, দৃশ্যকলা ও নাট্যকলার যোগাযোগ বিষয়ে ঢালী আল মামুনের মাস্টার ক্লাস এবং সর্বনাম গানের দলের গান।
সন্ধ্যায় বটতলা বিভাগীয় সম্মাননা তুলে দেওয়া হয় চট্টগ্রাম বিভাগের নাট্যজন মিলন চৌধুরীকে এবং অন্তরালের সম্মাননা পান আলোক সহযোগী মীর মোহাম্মদ বাদল। পদাতিক নাট্য সংসদ মঞ্চস্থ করে নাটক ম্যাকবেথ। উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের এই নাটকটি অনুবাদ করেছেন সৈয়দ শামসুল হক এবং নির্দেশনা দিয়েছেন সুদীপ চক্রবর্তী।
আজ শনিবার থাকছে শিশুপ্রহরে নানা আয়োজন। সকালে সিসিমপুরের আঁকিবুঁকি এবং দুপুর ১২টায় থাকবে পুতুলনাট্য। বেলা সাড়ে তিনটায় দেখানো হবে বিভাস চক্রবর্তীর ওপর তথ্যচিত্র এবং বিকেল পাঁচটায় থাকছে শৈবাল বসুর মাস্টার ক্লাস। সন্ধ্যা ছয়টায় ঢাকা থিয়েটার ‘ফিয়ারলেস’ এবং সাড়ে সাতটায় জলপাইগুড়ি কলাকুশলী নাট্যদল শুক নাটকের প্রদর্শনী করবে।
তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত এ উৎসব চলবে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত। ১১ দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবে প্রতিদিন মূল রঙ্গমঞ্চে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে বটতলাসহ বাংলাদেশের দুটি ও বিদেশের আটটি দল নাটক পরিবেশন করছে। বাংলাদেশ ছাড়া উৎসবে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হচ্ছে ভারত, স্পেন, ইরান ও নেপাল। প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বহিরাঙ্গনে নাদিম মঞ্চে থাকছে নাটক, গান, কবিতা, নাচসহ বিভিন্ন আনন্দ আয়োজন। গত বছরের মতো এবারও থাকছে দেশের আটটি বিভাগের আট নাট্যজনকে সম্মাননা প্রদান, যাঁরা খুব নীরবে দীর্ঘদিন ধরে নাট্যচর্চাকে এগিয়ে নিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। সম্মাননার তালিকায় আছেন দেলোয়ার হোসেন (বরিশাল), হেমেন্দ্র চৌধুরী (সিলেট), হরিপদ সূত্রধর (ঢাকা), সবিতা সেনগুপ্ত (রংপুর), গৌরাঙ্গ আদিত্য (ময়মনসিংহ), মিলন চৌধুরী (চট্টগ্রাম), অনিতা মৈত্র (রাজশাহী) ও রোহানি বেগম মেরী (খুলনা)।
নাটক মঞ্চায়নের পর প্রতিদিন বহিরাঙ্গনে নাদিম মঞ্চে দর্শকের মুখোমুখি হন সংশ্লিষ্ট নাটকের নির্দেশক। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে সাতটা পর্যন্ত থাকবে গান, নাটক, কবিতা ও নাচের পরিবেশনা।
২৬ নভেম্বর বিকেল পাঁচটায় অনুষ্ঠিত হবে ‘রঙ্গমঞ্চে বটতলার আলাপ’। এতে নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী অংশ নেবেন। ২৬ নভেম্বর রাত নয়টায় উৎসবের পর্দা নামবে। সমাপনী অনুষ্ঠানের দিন আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হবে খ্যাতিমান অভিনেতা, নাট্যকার, নির্দেশক মামুনুর রশীদকে।