টানা কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও ছায়ানট আয়োজন করেছে নৃত্য উৎসব। গতকাল শুক্রবার ছায়ানট মিলনায়তনে এ উৎসবের আয়োজন করেছে। শীতের সন্ধ্যায় নানান ধারার নাচের এ আয়োজনটি ছিল অনবদ্য। নয়নজুড়ানো সেই নাচ দেখতে নৃত্যানুরাগীরা সমবেত হয়েছিলেন ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে।
একক ও দলীয় পরিবেশনায় দর্শনার্থীরা একসঙ্গে উপভোগ করেছেন শাস্ত্রীয় নাচের পাঁচটি ধারার নৃত্য। মণিপুরি নাচের আশ্রয়ে শুরু হয় ছায়ানটের এই নৃত্য উৎসব। এরপর ওড়িশি, গৌড়ীয় নৃত্য ও ভরতনাট্যমের এগিয়ে যায় আয়োজন। কত্থক নৃত্যের মাধ্যমে শেষ হয় ঢাকা ও সিলেটের শিল্পীদের অংশগ্রহণকৃত উৎসবটি।
এর আগে ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলীর স্বাগত ভাষণের মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন হয়। স্বাগত কথনে অংশ নেন ছায়ানটের শিক্ষক বেলায়েত হোসেন খান। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকৃত শিক্ষার জন্য সংস্কৃতির যোগ জরুরি। সংগীতের, নৃত্যের চর্চা যত প্রসার পাবে সমাজ তত অগ্রসর হবে। নৃত্য দেহের সংগীত মন্তব্য করে তাঁরা বলেন, চোখ, হাত, পা, সারা দেহ সঞ্চালনের শৈল্পিক রূপটি নৃত্যের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায়। আদিকাল থেকে যে শিল্পকলাটি লক্ষ করা গেছে, সেটি নৃত্যশৈলী। তাই এ শরীরী সঞ্চালনের মধ্য দিয়ে কোনো ঘটনা ও উপলব্ধির প্রকাশ নৃত্যশিল্পীরা করে থাকেন। মুক্তিযুদ্ধের পর কয়েক দশক ধরে নৃত্যের চর্চার বিকাশ ও বিস্তার এ ভূখণ্ডে ঘটতে দেখা যায়। ছায়ানট নৃত্যের ধ্রুপদি রূপের চর্চা করে আসছে। ধ্রুপদি নৃত্যের যে চারটি ধারা, তার প্রকাশ এ উৎসবের মধ্য দিয়ে দেখা যাবে।
সিলেটের একাডেমি ফর মণিপুরি কালচার অ্যান্ড আর্টসের শিল্পীদের ‘সূর্য প্রণাম’ শীর্ষক মণিপুরি পরিবেশনা দিয়ে শুরু হয় উৎসব। এরপরের পরিবেশনা ছিল ঢাকার শিল্পী বাবরুল আলম চৌধুরীর ‘শিব স্তুতি’। এরপর নৃত্য পরিবেশন করেন সামিনা হোসেন। তামান্না রহমানের পরিচালনায় দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যম নৃত্যশীলন কেন্দ্র। এ ছাড়া নৃত্য পরিবেশন করেন ধৃতি নর্তনালয় ও ছায়ানটের শিল্পীরা।
দলীয়ভাবে কত্থক নৃত্য পরিবেশন করে কত্থক নৃত্য সম্প্রদায় ও রেওয়াজ পারফরম্যান্স স্কুল। একক নৃত্য পরিবেশন করেন মাসুম হসাইন।