পরীমনির ফেসবুক প্রোফাইলে এখন আর লেখা নেই ‘ম্যারিড উইথ শরীফুল রাজ’। একই অবস্থা শরীফুল রাজের বেলাতেও। অথচ দিন কয়েক আগেও এই দুই তারকাকে ঘিরে চর্চিত হয়েছে নানা গল্প। দুজনকে কেউ কেউ আবার বিনোদন অঙ্গনের ‘আদর্শ স্বামী-স্ত্রী’র তকমা দেওয়াও শুরু করেন। মাত্র এক বছরের দাম্পত্য জীবনে ফেসবুকে তাঁদের পোস্ট করা বিভিন্ন মুহূর্তের স্থিরচিত্র, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মনে ভালো লাগা এনে দেয়। সবই এখন অতীত। গত দুই দিনে তাঁদের দুজনের বক্তব্যে এটা পরিষ্কার, তাঁরা এখন দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা। হঠাৎ কী এমন হলো, তাঁদের আলো ঝলমলে সংসার তাসের ঘরের মতো ভেঙে গেল?
পরীমনি ও শরীফুল রাজ দুজনের ফেসবুক পোস্টের দিকে তাকালে এটা পরিষ্কার, দুজন এখন দুজনের নামটিও শুনতে পারছেন না। একে অপরকে সহ্য করতে না পারা এই দুই তারকা গেল বছরের শুরুতে বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আনার পর কত ধরনের কথার ফুলঝুরি যে ছুটিয়েছেন, তার হিসাব নেই। তখনই আলাপ প্রসঙ্গে জীবনসঙ্গী হিসেবে পরীমনি কেমন, জানতে চাইলে রাজ তখন বলেন, ‘সে কখনোই আমাকে ছেড়ে যাবে না, আমিও না। ভাবছি, দুজনের কবরটাও একসঙ্গে হবে।’ পরীমনি বলেছিলেন, ‘তার সঙ্গে মিশতে গিয়ে দেখলাম, আমরা দুজনই পাগল। দুজনই ভাবলাম, আমাদের সারা জীবন একসঙ্গে থাকা উচিত। তাই কোনো কিছু না ভেবেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই আমরা।’
চরকি প্রযোজিত ‘গুণিন’ চলচ্চিত্রের শুটিং করতে গিয়ে পরীমনি ও শরীফুল রাজের পরিচয়। এরপর প্রেম, তারপর বিয়ের সিদ্ধান্ত। বিয়ের পরই তাঁরা বিয়ের খবরটি প্রকাশ্যে আনেন। আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের ঘোষণার সময় পরীমনি বলেছিলেন, ‘গুণিন’-এর শুটিং করতে গিয়ে এক অন্য রকম রাজকে আবিষ্কার করেন তিনি। এরপর প্রেম, তারপর পরিণয়। এমন কথার বছর পার হয়নি। একসঙ্গে সারা জীবন থাকা ও কবরের বিষয় দূরে থাক, দুজনের দেখাদেখিই বন্ধ দুই দিন ধরে।
আলাদা হয়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে পরীমনির ভাষ্য, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই সমস্যা হচ্ছিল। সমস্যা কাটিয়ে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে একসঙ্গে থাকার চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারলাম না। তার (রাজ) যে আচার-আচরণ, তাতে একসঙ্গে থাকার পরিস্থিতি নেই। তাই বাধ্য হয়ে বাসা ছেড়ে আলাদা হয়ে গেলাম।’ ঢাকাই সিনেমার আলোচিত এক নায়িকাকে ঘিরে সংসারে অশান্তি—এমন ইঙ্গিত দিয়ে কিছুদিন আগে একটি পোস্ট করেন পরীমনি। সেটি নিয়ে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। পরীমনি ও রাজের মধ্যে বেশ কয়েক দিন থেকেই সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। কিছুদিন আগে এ চিত্রনায়িকাই ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে তা সামনে এনেছিলেন। তিনি অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিমের সঙ্গে রাজকে জড়িয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। তাঁদের দুজনের দীর্ঘ ফোনালাপ নিয়ে অনেক কথা বলেন। পরীমনি সে সময় রাজ-মিমের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এসব বন্ধ করো।’
পরীমনি ও শরীফুল রাজ দুজনের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরেছে কয়েক মাস আগে। সন্তান পৃথিবীতে আসার পরও কয়েক মাস ভালো ছিলেন। এরপর টুকটাক কথা-কাটাকাটি হতো। তারপর সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ কমে যাওয়ার কারণে দুজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। দুজনের প্রতি অবিশ্বাসও তৈরি হয়। সন্দেহ করা শুরু করেন একে অপরকে। তারপরও বারবার চেষ্টা চলে সম্পর্ক চালিয়ে নেওয়ার। কিন্তু একেবারেই যখন সম্ভব হচ্ছিল না, তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, এই ধরনের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার চেয়ে আলাদা থাকা ভালো।
পরীমনির ফেসবুকে দেওয়া পোস্টের পাশাপাশি শরীফুল রাজের কথায়ও স্পষ্ট, এই সম্পর্ক আর জোড়া লাগবে না। সম্পর্ক জোড়া লাগবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না, আর হবে না।’