মা ভালো না থাকলে কিছুই ভালো লাগে না। দুই বছর আগে প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছিলেন আরিফিন শুভ। ঢালিউডের জনপ্রিয় এই চলচ্চিত্র তারকার মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। গতকাল বুধবার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরিফিন শুভর মা খাইরুন নাহার মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ সকাল ৮টা ১৬ মিনিটে শুভ তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আমার মা আল্লাহর কাছে চলে গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ২১ জানুয়ারি দুপুরে মা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর পর থেকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে মা জীবনের শেষ যুদ্ধটা করেছে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে সেটা শেষ হয়েছে ২৪ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে।
বাদ ফজর ঢাকার কলোনি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও জামেউল উলুম মাদ্রাসা কমপ্লেক্সে জানাজা শেষে মাকে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগেও আপনারা সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করেছেন এবারও আপনারা আমার মাকে দোয়ায় রাখবেন, ইনশা আল্লাহ।’
সাত বছর ধরে আরিফিন শুভর মা অসুস্থ ছিলেন। ২০১৭ সালের ১৪ এপ্রিল মুক্তি পায় আরিফিন শুভ অভিনীত সিনেমা ‘ধ্যাততেরিকি’। সিনেমা মুক্তির একদিন আগে শুভ যখন সিনেমার প্রচারে একটি টেলিভিশনের অফিসে, তখনই খবর আসে, মায়ের অসুখ বেড়েছে। সব ফেলে কারওয়ান বাজার থেকে শুভ ছুটলেন ময়মনসিংহে। সেদিন রাত দেড়টায় মাকে নিয়ে ঢাকায় ফেরেন। এর পর থেকে মায়ের অসুখ কখনো কমেছে, আবার কখনো বেড়েছে। এমনও হয়েছে ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমার ফার্স্ট লুক উন্মোচন অনুষ্ঠানের শুরুতে দেখা নেই আরিফিন শুভর।
যে সিনেমার জন্য প্রায় ১১ মাস পরিশ্রম করলেন, সেই সিনেমার ফার্স্ট লুকের অনুষ্ঠানে শুভ কেন দেরিতে উপস্থিত, তা নিয়ে যখন আলোচনা, ঠিক তখনই শুভ জানালেন, দুই দিন ধরে তাঁর মা হাসপাতালে, তিনি সেখান থেকেই এলেন। সময় যাচ্ছে, শুভর মায়ের অসুস্থতাও বাড়ছে, প্রথম আলোকে এমনটাই জানিয়েছিলেন শুভ।
গত বছরে ফেব্রুয়ারিতে শুভ জন্মদিনটা মাকে নিয়ে কাটিয়েছিলেন শ্যামলীর একটি হাসপাতালে। সর্বশেষ, গত ২১ জানুয়ারি দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়েন শুভর মা খাইরুন নাহার। এর পর থেকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
আরিফিন শুভ ২০০৫ সালে মডেলিং দিয়ে শোবিজে ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর ২০০৭ সালে প্রথম মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘হ্যাঁ-না’ নাটকে অভিনয় করেন। আর ২০১০ সালে খিজির হায়াত খান পরিচালিত ‘জাগো’ সিনেমার মাধ্যমে তাঁর বড় পর্দায় অভিষেক হয়। তিনি ‘ছুঁয়ে দিলে মন’, ‘অগ্নি’, ‘তারকাঁটা’, ‘নিয়তি’, ‘মুসাফির’, ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘সাপলুডু’ ও ‘মিশন এক্সট্রিম’, ‘মুজিব’-এর মতো সিনেমা উপহার দিয়েছেন। সামনে তাঁর আরও কয়েকটি সিনেমা মুক্তির কথা রয়েছে।