চিত্রনায়ক শরীফুল রাজ সিলেট শহরেই স্কুল ও কলেজজীবনের দিনগুলো কাটিয়েছেন। বহুদিন পর আজ সোমবার কৈশোর ও যৌবনের স্মৃতিবিজড়িত শহরে এলেন। সদ্য মুক্তি পাওয়া নিজের অভিনীত দুটি চলচ্চিত্র ‘পরাণ’ ও ‘হাওয়া’ নিয়ে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া জানাই ছিল এ আগমনের উদ্দেশ্য।
সিলেটের পাঁচ তারকাবিশিষ্ট গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে গত ২৯ জুলাই ‘হাওয়া’ সিনেমা মুক্তির মধ্য দিয়ে সিলেটে প্রথমবারের মতো সিনেপ্লেক্সের যাত্রা শুরু হয়। ‘হাওয়া’র পাশাপাশি এখানে ‘পরাণ’ সিনেমাও প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রতিদিন বেলা তিনটা ও সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় দুটি প্রদর্শনী চলছে। আজ সিনেপ্লেক্সে সিনেমা দেখতে আসা দর্শকদের সঙ্গে শরীফুল রাজ কথা বলেন। এ সময় দর্শকদের ভালোবাসায় তিনি সিক্ত হন।
সিনেমার দর্শকদের প্রতিক্রিয়া জানার আগে বেলা সোয়া তিনটার দিকে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সঙ্গে সিনেপ্লেক্সের সামনে চিত্রনায়ক শরীফুল রাজ কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, সিলেটে পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখার মতো ভালো সিনেমা হল কিংবা পরিবেশ ছিল না। গ্র্যান্ড সিলেটে সিনেপ্লেক্স চালু হওয়ায় অনেকেই এখন পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখতে পারছেন।
চিত্রনায়ক শরীফুল রাজ বলেন, ‘সিলেটের সিনেমা হলগুলোতেও আমি প্রচুর সিনেমা দেখেছি। নিজে টিকিট কেটে সিনেমা দেখতাম। একটা সময়, আমার জানামতে, এখানে ১৫-১৬টা হল ছিল। এখন অনেকগুলোই নেই। তবে এই সিনেপ্লেক্স উদ্বোধনের পর থেকেই ভেবেছি, আসব। এখানে দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো এখন “পরাণ” চলছে। “হাওয়া”ও ভালো চলেছে। নিজের শহরে সেটা দেখার তাড়না থেকেই সিলেটে আসা।’
‘পরাণ’-এর মধ্য দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে সুদিন ফিরছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে শরীফুল রাজ বলেন, ‘“পরাণ”-এর আগে আমার তিনটা চলচ্চিত্র রিলিজ হয়। আসলে “পরাণ”-এর যে সাকসেস, এই যে মানুষ হুমড়ি খেয়ে দেখছে, দল বেঁধে মানুষ সিনেমা দেখতে আসছে, এটা আশার কথা। এটা শুধু “পরাণ”-এর সাকসেস নয়, পুরো ইন্ডাস্ট্রিরই সাকসেস। “পরাণ”-এর পর রায়হান রাফি “দামাল” নামের আরেকটা ধামাকা নিয়ে আসছে। এই সিনেমা স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল নিয়ে তৈরি করা হয়েছে।’
শরীফুল রাজ সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে নিজেকে ‘ডিরেক্টর ডিপেনডেন্ট আর্টিস্ট’ দাবি করে বলেন, ‘আমি সিলেটে আসি ২০০২-০৪ সালের দিকে। এইডেড স্কুল, মদনমোহন কলেজে আমি পড়েছি। সিলেট আমার প্রিয় শহর। কালচারালি সিলেট অনেক স্ট্রং। সিলেট শহরটা আমার কাছে স্মৃতিবিজড়িত শহর।’
প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহ প্রসঙ্গে শরীফুল বলেন, ‘প্রায়ই আব্বু আমাকে নিয়ে মাজারে যেতেন। সেখানে সালমান শাহর কবর দেখতাম। স্কুলে যাওয়ার সময় সালমান শাহর বাড়ির সামনে দিয়ে যেতাম। এসব আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। সালমান শাহ একজন সুপারস্টার। এমন আধুনিক ও সুদর্শন নায়ক বাংলা সিনেমায় আর কবে আসবে, জানি না! সালমান শাহর শহরে আমার বেড়ে ওঠা, এটাই অনেক কিছু। সালমান শাহকে এখনো মানুষ ভালোবাসে, লালন করে, ধারণ করে। আমার প্রিয় নায়ক তিনি।’
চিত্রনায়ক শরীফুল রাজের পর ‘পরাণ’-এর নির্মাতা রায়হান রাফি কথা বলেন। রায়হান বলেন, ‘আমিও সিলেটের সন্তান। বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জে। নানুর বাসাও সিলেটে। যদিও আমি সিলেটে বড় হইনি। সিলেট নিয়ে একটা টান আমার ছিল। সিলেটে পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখার পরিবেশ ছিল না। এখন এই সিনেপ্লেক্স হওয়ায় পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তবে সিলেটে প্রচুর মানুষ সিনেমা দেখতে চায়। সিলেটে আরও কয়েকটি ভালো মানের সিনেমা হল হওয়া উচিত।’
রায়হান রাফি বলেন, ‘আমি সব সময় সাহসী সিনেমা বানাতে পছন্দ করি। মানুষ আমার সিনেমা গ্রহণ করেছে, এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’