পবিত্র ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া ‘কাজলরেখা’ তৃতীয় সপ্তাহেও প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হচ্ছে। গিয়াস উদ্দিন সেলিম পরিচালিত এই ছবির একটি বিশেষ প্রদর্শনী হয় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্সে ছবিটির সেই বিশেষ প্রদর্শনীতে আফজাল-সুবর্ণা থেকে শুরু করে এ প্রজন্মের অনেক তারকাই উপস্থিত ছিলেন। রাত আটটায় শুরু হওয়া ছবিটির বিশেষ প্রদর্শনী উপভোগ শেষে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সুবর্ণা মুস্তাফা। ফেসবুকে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সুবর্ণা মুস্তাফা লিখেছেন, ছবিতে মিথিলা ও সাদিয়া আয়মানের অভিনয় তাঁকে মুগ্ধ করেছে।
‘কাজলরেখা’ ছবিটি মৈমনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে তৈরি হয়েছে। বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা, বিশেষ করে গারো পাহাড়ের পাদদেশ থেকে প্রবাহিত হাওরাঞ্চলের জীবনের ১০টি পালা দিয়ে সাজানো হয়েছে এ গীতিকা। এই গীতিকার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ময়মনসিংহ অঞ্চলের ইতিহাস-ঐতিহ্য। সিনেমাটির দৃশ্যধারণের জন্যও নির্মাতা বেছে নিয়েছিলেন নেত্রকোনার দুর্গাপুর। দুই বছরেরও বেশি সময় লেগেছে ছবিটির দৃশ্যধারণের কাজ শেষ করতে। ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন শরীফুল রাজ ও মন্দিরা চক্রবর্তী।
‘কাজলরেখা’ উপভোগ শেষে সুবর্ণা মুস্তাফা তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, ‘কাজলরেখা দেখলাম। কত দিন পরে বড় পর্দায় লোকজ কিছু দেখলাম! ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল, সেই “সাত ভাই চম্পা”, “অরুণ বরুণ কিরণমালা”—সবই হলে গিয়ে দেখতাম। কাজলরেখার উপস্থাপন চমৎকার। পালা দিয়ে শুরু, আজাদ আবুল কালাম সূত্রধর। সেই সূত্রধর পুরো গল্প গেঁথে যাচ্ছে বিভিন্ন চরিত্র হয়ে। চমৎকার সংগীত, গান, চিত্রগ্রহণ, শিল্প নির্দেশনা, পোশাক, রূপসজ্জা, সংলাপ, সম্পাদনা, অভিনয় সব ভালো।’
‘কাজলরেখা’ ছবিতে অনেকেই অভিনয় করেছেন। সবার অভিনয় ভালো বললেও দুজনের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করলেন সুবর্ণা মুস্তাফা। ছবিতে ছোটবেলার কাজলরেখা চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাদিয়া আয়মান, আর বড়বেলার কাজলরেখা মন্দিরা চক্রবর্তী। ছবির বিরতিতে মন্দিরাকে দেখা যায়। কাজলরেখা সাদিয়া আয়মানের কথা বলতে গিয়ে সুবর্ণা বললেন এভাবে, ‘অভিনয় সবার ভালো। বিশেষত, সাদিয়া আয়মান এতটাই ভালো যে আমি তাকে সেকেন্ড হাফে অনেক মিস করেছি।’
এদিকে সুবর্ণা মুস্তাফার কাছ থেকে এমন অনুপ্রেরণাদায়ী কথা শুনে আপ্লুত সাদিয়া আয়মান। ফেসবুক পোস্টে মন্তব্যের ঘরে তিনি লিখেছেন,‘আমার এখনো মনে আছে, “মায়াশালিক” দেখার পরও ঠিক এভাবেই আপনি আমাকে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন। “কাজলরেখা” দেখার পর ফেসবুকে এমন পোস্ট আমার মধ্যে ভীষণ ভালো লাগার অনুভূতি এনে দিয়েছে। আপনি আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেন।’
‘কাজলরেখা’ ছবিতে কঙ্কনদাসী চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত প্রায় বেশির ভাগ দর্শক তার অভিনীত চরিত্রের প্রশংসা করেছেন। কোথাও হেসেছেন, কোথাও হাততালিও দিয়েছেন। মিথিলার অভিনয়ও নজরে এসেছে সুবর্ণা মুস্তাফার। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘রাফিয়াত রশিদ মিথিলা এক দুর্দান্ত অভিনয়শিল্পীতে পরিণত হয়েছে। অভিনয় দিয়ে সে সবার মন জয় করে নিয়েছে—তাঁর অভিব্যক্তি, শরীরীভাষা, সংলাপ প্রক্ষেপণ দিয়ে। দুর্দান্ত।’
‘কাজলরেখা’ নিয়ে ভালো লাগার অনুভূতি জানানোর পাশাপাশি ছোট্ট একটা পর্যবেক্ষণও দিয়েছেন সুবর্ণা মুস্তাফা। ফেসবুকে তিনি এভাবেই লিখেছেন, ‘সমালোচনা না, ছবির দৈর্ঘ্য হয়তো ছোট করা যেত। কিন্তু সেটা নির্দেশকের ব্যাপার। কাজলরেখা ছবির জন্য প্রাণঢালা অভিনন্দন গিয়াস উদ্দিন সেলিম।’