কদিন ধরেই টানা বৃষ্টি। বলা যায়, ঘর থেকেই বের হওয়ার উপায় নেই। এর মাঝে বৃষ্টি থামলেই ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেন চিত্রনায়ক নাঈম। আজ যেমনটা ঘটেছে। বৃষ্টি নেই দেখে স্ত্রী শাবনাজ ও মেয়েকে নিয়ে চলে যান বাসার পুকুরপাড়ে। উদ্দেশ্য মাছ ধরা। বড়শি ফেলতেই যেন চমকে উঠলেন চিত্রনায়ক নাঈম। প্রথমেই ধরা দিল বড় একটি রুই মাছ। নাঈমের এই চমকে অবাক শাবনাজ। কত কেজি ওজনের মাছ ধরলেন নাঈম?
মাছ ধরা তাঁর নেশা। ছোটবেলা থেকে সুযোগ পেলেই ঢাকার বাইরে ছুটে চলে যেতেন বড়শি নিয়ে। বড় বড় মাছ নিয়ে বাসায় ফেরা ছিল নিত্যঘটনা। এখনো সুযোগ হলে মাছ ধরার জন্য ছুটে চলেন।
নাঈম বলেন, ‘এখন বর্ষাকাল। বৃষ্টি কমবেশি হচ্ছেই। কত সময় আর বসে থাকা যায়। একসময় বৃষ্টি একটু কমে, দুপুরের দিকে মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। চা খাওয়া আর সময় কাটানো। কিন্তু আমি তো বড়শি ফেলেই চমকে উঠেছি। মাছ উঠবে, ধরতে পারব কি না ভাবছিলাম। এর মধ্যেই একটি রুই ধরা পড়ল। সেই মাছ থেকে তো শাবনাজ অবাক। প্রথমেই এত বড় মাছ ধরে ফেলেছি।’
মাছ ধরার সময় শাবনাজ ও তাঁদের মেয়ে নামিরা পাশেই বসে ভিডিও করছিল। কত কেজির রুই জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরে বাসায় নিয়ে মাপা হয়েছে। ৬ কেজির বেশি, ৭ কেজির মতো।’ পরে আরও অনেকগুলো মাছ ধরেছেন।
নাঈমের কাছে জানতে চাইলাম, কবে থেকে মাছ ধরার শখ মাথায় চেপেছে? কিছুটা সময় নিয়ে এই নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়ক বলেন, ‘৮৫ সাল থেকে বলতে গেলে নিয়মিত মাছ ধরা হয়। ৫/৬ বছর টানা মাছ ধরেছি। মাছ ধরার জন্য অনেক জায়গায় সদস্য পর্যন্ত হয়েছি। একসময় ধানমন্ডি লেকে মাছ ধরতাম। সিনেমায় অভিনয় শুরুর পরে আর পাবলিক প্লেসে মাছ ধরা হতো না। তখন অনেকেই ঘিরে ধরত। কিন্তু বিশেষ কিছু স্থানে মাছ ধরতাম।’
কেউ বিদেশ থেকে কিছু আনতে চাইলেও নাঈম প্রথমেই জানান মাছ ধরার কোনো সামগ্রী। তাঁর কাছে আধুনিক মাছ ধরার বড়শি, ছিপ থাকলেও এখনো তিনি ম্যানুয়েল বড়শি ব্যবহার করেন। জানালেন, ৩০ থেকে ৪০ বছর আগের বড়শি তাঁর সংগ্রহে আছে। পুরোনো এসব বড়শিতে মাছ ধরার পেছনেও রয়েছে আরেক কারণ।
নাঈমের ভাষায়, ‘আমার প্রতিটা বড়শির পেছনে অনেক স্মৃতি রয়েছে। পুরোনো বড়শি আমাকে স্মৃতিকাতর করে। অতীতের দিনগুলোর কথা মনে করে দেয়। মাছ ধরি আর সেই সময়গুলো মনে করি। এভাবেও আমার ভালো সময় কাটে। মাছ ধরতে আমার সব সময় ভালো লাগে।’ জানালেন পুরোনো বড়শি দিয়েই এর আগে ১৪ কেজি ওজনের কাতলা মাছ ধরেছিলেন। সেটাই ছিল সবচেয়ে বেশি ওজনের মাছ ধরা। মাছ ধরার ফাঁকে সেসব গল্পই মেয়েকে শোনান।
বর্তমানে পরিবার নিয়ে টাঙ্গাইলে গ্রামের বাড়িতে সময় কাটাচ্ছেন। জানালেন, ঈদুল আজহার সব সময়টা গ্রামের বাড়িতেই কাটান। মাঝেমধ্যে ঢাকায় থাকলেও গ্রামের বাড়িতেই সবচেয়ে ভালো সময় কাটে এই তারকা দম্পতির।