গতকাল শাকিব খানের বিরুদ্ধে ‘ধর্ষণের’ অভিযোগ করেন ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার অন্যতম প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ। ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ চিত্রনায়কের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের ঘটনা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এই ঘটনায় অবশেষে মীমাংসার পথ খুঁজতে একটেবিলে বসলেন শাকিব ও প্রযোজক। এক ঘণ্টা ধরে চলে এই আলোচনা।
প্রযোজকের দাবি, শাকিব নিজেই উদ্যোগী হয়ে তাঁর সঙ্গে মীমাংসায় বসতে চেয়েছেন। আজ বিকেল পাঁচটা থেকে এক ঘণ্টা ধরে চলে এই মীমাংসা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মীমাংসায় কী হলো, জানতে চাইলে প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ বলেন, ‘আমরা বসেছিলাম। কিন্তু ঘটনার এখনো কোনো মীমাংসা হয়নি। তবে শাকিব আমাকে আলোচনার মাধ্যমে আশ্বাস দিয়েছেন, হয়তো তিনি ছবি করে দেবেন অথবা তিনি বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত দেবেন। তখন আমি তাঁকে বলেছি, অনেক পুরোনো হয়ে গেছে। এখন আর আমি ছবিটি করব না। তখন শাকিব খান নিজ থেকেই বলেছেন, ‘‘আমরা প্রযোজক খুঁজে সিনেমাটির কাজ শেষ করব।”’ প্রযোজক দাবি করেন, শাকিব খান ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি আছেন। তিনি এ সময় জানান, তাঁর সিনেমায় লগ্নিকৃত অর্থের পরিমাণ দুই কোটি টাকা।
ঘটনার মীমাংসায় উপস্থিত ছিলেন প্রযোজক সমিতির নেতা খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা বিকেল ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত মীমাংসার জন্য বসেছিলাম। আমরা মীমাংসার লক্ষ্যে বসেছিলাম, আজ আমাদের আলোচনা সবে শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো মীমাংসা হয়নি। এটুকুই।’ তাঁর কাছে জানতে চাই, প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ যে অভিযোগ করেছেন, সেটা নিয়ে আলোচনায় কী কথা হয়েছে? খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা আজই মাত্র বসেছি। সেখানে অভিযোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। আমরা এখন শুধু মীমাংসার লক্ষ্যে কথা বলছি। আমরা কালও বসব। আমরা চেষ্টা করব, ঘটনার মীমাংসা করার।’
মীমাংসায় উপস্থিত ছিলেন শাকিব খান। তাঁকে ফোন দিলে নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। খোরশেদ আলমের কাছে জানতে চাই, ধর্ষণের এই ঘটনা নিয়ে শাকিব খান কী বলেছেন? এমন প্রশ্নে এই প্রযোজক নেতা বলেন, ‘সবাই তো মীমাংসা চান, সে জন্যই আসছেন। সেসব নিয়েই শাকিব কথা বলেছেন। তিনি একটা সমাধান চান। সে লক্ষ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। আজ এটুকু নিয়েই কথা হয়েছে।’
রহমত উল্ল্যাহর অভিযোগ, ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার দৃশ্যধারণের সময় এক নারী সহপ্রযোজককে ‘ধর্ষণ’ করেন শাকিব খান, এরপর তিনি দেশে পালিয়ে আসেন। এই ঘটনা নিয়ে ছয় বছর পর গতকাল বুধবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে শাকিবের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন প্রযোজক। অভিযোগে প্রযোজক উল্লেখ করেন, শাকিব খানের বিরুদ্ধে সেই ভুক্তভোগী অস্ট্রেলিয়া পুলিশের কাছে একটি লিখিত অভিযোগও করেছিলেন। সেই অভিযোগে নিজেকে একজন সাক্ষী হিসেবে দাবি করেন রহমত উল্ল্যাহ।
প্রথম আলো থেকে প্রযোজকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ঘটনাটা বেশ আগে ঘটেছিল। এত দীর্ঘ সময় পর কেন শিল্পী সমিতিতে অভিযোগ করলেন? এমন প্রশ্নে রহমত উল্ল্যাহ বলেন, ‘শাকিব খান দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলেন তিনি সিনেমাটি করে দেবেন। এর মধ্যে করোনা শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু সিনেমা নিয়ে কোনো কথা হচ্ছিল না। কোনো উপায় না দেখে আমি শেষ পর্যন্ত অভিযোগ করেছি।’