ছোট পর্দার নিয়মিত মুখ মাখনুন সুলতানা মাহিমা। টেলিভিশন নাটকের বাইরেও কাজ করেছেন ওটিটিতে। ‘নিকষ’ ও ‘তনয়া’ দিয়ে এসেছেন আলোচনায়। তবে ছোট পর্দায় নয়, মাহিমার অভিনয় শুরু সিনেমা দিয়ে। ২০১৬ সালে আহসান সারোয়ারের ‘রং ঢং’ সিনেমার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান অভিনেত্রী। কিন্তু সেন্সর জটিলতায় আটকে যায় এটি। প্রায় চার বছর সেন্সরে আটকে থাকার পর গত বছর মুক্তির অনুমতি পায় সিনেমাটি। আজ শুক্রবার দেশের পাঁচ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি।
এই সিনেমার শুটিংয়ের সময় মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছিলেন মাহিমা। যখন সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে, তখন তিনি স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। অপেক্ষা করতে করতে একসময় সিনেমাটির আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। এ সময় অনেকেই তাঁর কাছে সিনেমাটির কথা জানতে চাইতেন। কিন্তু কাউকে কিছু না জানাতে পেরে কষ্ট হতো খুব। তবে এত বছর পর হলেও ‘রং ঢং’–এর মুক্তিতে উচ্ছ্বসিত মাহিমা।
প্রথম আলোকে মাহিমা বলেন, ‘“রং ঢং” দিয়েই প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন অভিনয়ের তেমন কিছুই জানতাম না। তবে টিমে অনেক সিনিয়র অভিনেতা ছিলেন, তাঁরা অনেক সহযোগিতা করেছেন। বলা যায়, আমার অভিনয়জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তালিম এখান থেকেই নিয়েছি।’
এই সিনেমার গান ‘বয়স ষোলোতে প্রেম’ ইউটিউবে মুক্তি পায় ২০১৬ সালে। অনলাইনে ব্যাপক সাড়া ফেলে গানটি। এখন পর্যন্ত এটি দেখা হয়েছে ৬৭ লাখ বারের বেশি। গানটির সাফল্য টেনে মহিমা বলেন, ‘সিনেমা আটকে গেলেও তখন গানটি মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর এটি ব্যাপক সাড়া পায়। গানটি সবাই অনেক পছন্দ করে। এখনো অনেকের সঙ্গে দেখা হলে অনেকেই জিজ্ঞেস করেন, “তোমার ওই গানের সিনেমাটা কবে আসবে?” হয়তো সে সময় তেমন ভালো অভিনয় করতে পারিনি। এরপরও সবাইকে হলে এসে সিনেমা দেখার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
এ সিনেমায় কাকতালীয়ভাবে যুক্ত হয়েছিলেন মাহিমা। তাঁর বাবা সিরাজুম মুনির থিয়েটার অভিনেতা, সময়–সুযোগ মিলে গেলে নাটকে অভিনয় করেন। ছোট ভাই ইয়াসিনও শিশুশিল্পী হিসেবে তখন নিয়মিত কাজ করছিলেন। বাবা ও ছোট ভাই এতে অভিনয়ের জন্য চূড়ান্ত হয়েছিলেন। আর ভাইয়ের জন্য চিত্রনাট্য আনতে বড় বোনের সঙ্গে নিকেতনে নির্মাতার অফিসে যান মাহিমা। তাঁকে দেখে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ব্যস, এভাবেই শুরু হয়ে যায় অভিনয়ের পথচলা। এ সিনেমায় পরিবারের তিন সদস্য অভিনয় করেছেন।
চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘রং ঢং’। সিনেমায় দেখা যাবে, চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির কিছু নবীনের প্রতারিত হওয়ার গল্প। তেমনই একটি চরিত্রে রয়েছেন ‘মীরাক্কেল’ অভিনেতা জামিল হোসেন। যিনি গায়ক হওয়ার জন্য আসেন। কিন্তু একপর্যায়ে নিঃস্ব হয়ে যান।
এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, স্বাধীন খসরু, ফারুক আহমেদ, সোহেল মণ্ডল, জামিল হোসেন, রাকিব হোসেন প্রমুখ।
ব্ল্যাকশাইন লিমিটেডের ব্যানারে নির্মিত এ সিনেমার সংগীত পরিচালনা করেছেন ফুয়াদ নাসের বাবু, পান্থ কানাই, মাহমুদুল হাসান রোমান্স, শামিম আলম বুলেট ও তাসনুব।
গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন পান্থ কানাই, কিশোর, সুমিত, জামিল হোসেন ও আদি।
দেশের পাঁচটি মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তি পাচ্ছে ‘রং ঢং’। ঢাকায় স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা ও সনি স্কয়ার শাখা, লায়ন সিনেমাস, যমুনা ব্লকবাস্টার সিনেমাস ও রাজশাহীর গ্র্যান্ড রিভারভিউ সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি।