বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। এবার এক হয়েছে আলফা আই, চরকি ও স্বনামধন্য ভারতীয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ ফিল্মস। এই তিন প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হতে যাচ্ছে বড় পর্দার দুটি সিনেমা।
সেই সিনেমাগুলোর মধ্যে একটির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে আজ। রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বিকেল পাঁচটায় আয়োজন করা হয় এক সংবাদ সম্মেলনের। ১১ ডিসেম্বর আসবে আরেকটি সিনেমার ঘোষণা।
আজ জানানো হয়েছে জনপ্রিয় নির্মাতা রেদওয়ান রনির নতুন সিনেমার খবর। নির্মাতা হিসেবে খানিকটা দম নেওয়ার পর নতুন সিনেমা ‘দম’ নিয়ে আসছেন তিনি। এই সিনেমায় মূল ভূমিকায় দেখা যাবে দুই বাংলার পরিচিত তারকা চঞ্চল চৌধুরীকে।
খানিকটা বিরতির পর নির্মাণে ফেরা নিয়ে পরিচালক রেদওয়ান রনি বলেন, ‘সত্য ঘটনা আমাকে সব সময়ই অনুপ্রাণিত করে। অনেক বছর পর চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষুধা মেটানোর জন্য এই গল্পটাই আমাকে তাড়িত করছিল। সাধারণ মানুষের ভয়াবহ মানসিক শক্তি তাকে যেকোনো ভয়ংকর বিপদ থেকে বাঁচিয়ে তুলতে পারে নিমেষেই। “দম” চলচ্চিত্রে এই গল্পটাই বলার চেষ্টা করছি।’
দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনার সিনেমাটি নিয়ে রেদওয়ান রনি আরও বলেন, ‘কাজটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুই বাংলার সিনেমার কান্ডারিরা। এসভিএফ, আলফা ও চরকি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’
‘দম’ সিনেমার মূল চরিত্রে অভিনয় করবেন চঞ্চল চৌধুরী। পরিচালক রেদওয়ান রনির সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা প্রায় ২০ বছরের কাছে। এমনটাই বলছিলেন অভিনেতা নিজে।
এই সিনেমায় অভিনয় নিয়ে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘রনির সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কটা অনেক দিনের। সে একসময় নিয়মিত নির্মাণ করেছে। কিছুদিন নিজে নির্মাণ না করলেও নির্মাণপ্রক্রিয়ার মধ্যেই ছিল। এবারের সিনেমার গল্প যখন রনি আমাকে শুনিয়েছে, তখন আমি হতবাক হয়েছি। অসাধারণ একটা গল্প।
আমার চরিত্রটা বেশ চ্যালেঞ্জের। সেই সঙ্গে অনেক আয়োজন ও বিগ ক্যানভাসের সিনেমা “দম”। আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে একই সঙ্গে চরকি, এসভিএফ, আলফা আইয়ের মতো বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আমাদের এই সিনেমার সঙ্গে আছে। এই সিনেমাটা দুই বাংলা মিলিয়ে নতুন কোনো দিগন্তের সূচনা করবে।’
আলফা-আই স্টুডিওজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল বলেন, ‘আলফা-আই স্টুডিওজ সব সময় বাংলাদেশের বিনোদনজগতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। একটি অগ্রগামী চিন্তার প্রোডাকশন হাউস, আমরা আগেই বুঝতে পেরেছিলাম যে বাঙালি দর্শক ভালো মানের কনটেন্ট দেখতে চান। আমরা প্রতিবারই সেটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এবার আলফা, এসভিএফ ও চরকির এক হয়েছি বাংলা চলচ্চিত্রের বাজারকে উন্নত করতে এবং বিশ্বব্যাপী দর্শকের কাছে পৌঁছাতে।’
ভারতের অন্যতম বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ ফিল্মস, ২৮ বছর ধরে যারা একাই বদল করে চলেছে বাংলা সিনেমার ইতিহাস! ‘রেইনকোট’, ‘চোখের বালি’, ‘অটোগ্রাফ’, ‘২২শে শ্রাবণ’-এর মতো অনেক সিনেমা দিয়ে তারা বাংলা সিনেমার ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে।
এসভিএফের পরিচালক ও সহপ্রতিষ্ঠাতা মহেন্দ্র সোনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের বিনোদনশিল্পের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে এসভিএফ। আমরা শুধু চলচ্চিত্র নির্মাণ করছি না, বাংলা সিনেমাকে উদ্যাপন করে আমরা একটি সম্প্রদায়, একটি সংস্কৃতিকে লালন করছি। আমাদের লক্ষ্য বাংলা ভাষার সিনেমাকে আন্তর্জাতিক মানে তৈরি করে বিশ্বের প্রতিটি কোনায় পৌঁছে দেওয়া।’
চরকির ইনভেস্টর ও স্ট্র্যাটেজি প্রেসিডেন্ট যারেফ হোসেন বলেন, ‘শুরু থেকেই চরকির লক্ষ্য ছিল সারা বিশ্বের বাংলাভাষীদের কাছে মানসম্পন্ন কনটেন্ট পৌঁছে দেওয়া। এবার চরকি ও আলফা আই, এসভিএফ একসঙ্গে সেই মিশনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এক হয়েছে। আমাদের বিনোদনশিল্পের কাজকে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়ার এটি একটা বড় সুযোগ ও উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হতে চলেছে।’
এই প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা, পরিচালক সৈয়দ আহমেদ শাওকী, চরকির কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা।