দীর্ঘদিন পর গত এক বছর ধরে শাকিব খানের নতুন করে সিনেমার বৃহস্পতি বেশ তুঙ্গে। গত বছর ঈদে ‘প্রিয়তমা’ আলোচিত হয়। এবারের ঈদে মুক্তি পেয়েছে তাঁর সিনেমা ‘রাজকুমার’। প্রথম দিন থেকেই বেশ সাড়া ছবিটির। তাই শাকিব খানের কাছে এবারের ঈদের আনন্দ বেশি থাকারই কথা। একসময় মুক্তি পাওয়া নিজের ছবি দেখতে ঈদের দিন গোপনে ঢাকার যেকোনো একটি প্রেক্ষাগৃহে ঢুকে যেতেন শাকিব খান। কিন্তু অনেক বছর ধরে সে কাজটি আর করেন না। এখন নিজের ফেসবুক পেজে ছবি দেখার আহ্বান জানিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে বাসায়ই সময় কাটান এই তারকা।
জানা গেছে, এবারও ঈদের নামাজ শেষ করে এসে বাবা, মা, সন্তান ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে বাসায় সময় দিয়েছেন শাকিব খান। তবে ঈদের কয়েক দিন আগে থেকে ছবি মুক্তির খুশির মধ্যেও কিছুটা অস্বস্তির মধ্যে সময় কাটিয়েছেন ঢালিউডের এই নায়ক।
আর সেটি তাঁর সাবেক (শাকিবের দাবি অনুযায়ী) স্ত্রী শবনম বুবলীর কারণেই। শাকিবের ঘনিষ্ঠদের একজনের কাছ থেকে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে বেসরকারি একটি টেলিভিশনে বুবলী সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে বুবলী তাঁর নিজের ঈদের সিনেমার খবরের পাশাপাশি শাকিব খানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে, আলাদা থাকা, তাঁর সন্তান বীরের প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। সেই সাক্ষাৎকারই মন খারাপ করে দিয়েছে শাকিবের।
ওই অনুষ্ঠানে শাকিব প্রসঙ্গে উপস্থাপকের এক প্রশ্নে বুবলী বলেছেন, ‘আমাদের ডিভোর্স হয়নি। আমি ও শাকিব আইনগতভাবে এখনো স্বামী-স্ত্রী। একটি দাম্পত্য সম্পর্কে অনেক ভুল-বোঝাবুঝি হয়। আমরা টাইম নিচ্ছি।’
শাকিব থেকে আলাদা থাকার ব্যাপারেও বুবলী বলেছেন, ‘মানুষের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি হতেই পারে। আমরা আরও সময় নিচ্ছি। বাবা-মায়ের দূরত্বটা এখনো মনে করে না আমার সন্তান বীর। ও আমাদের বাবা-মা-ই মনে করে। আমাদের মাঝে মাঝে স্পেসও দেয়। ও বুঝে নেয়, বাবা-মা একসঙ্গে সময় কাটাচ্ছে।’
ওই সাক্ষাৎকার প্রকাশের পর থেকেই শাকিব খান বিরক্ত বুবলীর ওপর। বুবলীর এসব কথার কারণে তাঁকে উদ্দেশ্য করে শাকিব খান মন্তব্যও করেছেন তাঁর কয়েকজন ঘনিষ্ঠজনের কাছে। শাকিবের এমন এক ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, শাকিব মন্তব্য করেছেন এভাবে, ‘এদের কোনো কাজ নাই। আমি তো সবকিছু আগেই পরিষ্কার করে দিয়েছি। কেন এরা দুদিন পরপর নতুন ইস্যু বানায় এসব নিয়ে। আমি খুবই বিরক্ত।’
শুধু তাই-ই নয়, বুবলীর এসব কথায় অপু বিশ্বাসও শাকিব খান ও তাঁর পরিবারের ওপর অভিমান করেছেন। শাকিব ও অপুর পরিবারের ঘনিষ্ঠজনের কাছ থেকে জানা যায় এমনকি বাইরেও এটি প্রচার আছে, অনেক দিন থেকেই অপু বিশ্বাসের সঙ্গে শাকিব খানের সম্পর্ক ভালো। শুধু তাই-ই নয়, শাকিবের মা-বাবাও অপু বিশ্বাসকে পছন্দ করেন। শাকিবের বোন মানে ননদের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক অপু বিশ্বাসের। প্রায় শাকিব খানের গুলশানের বাসায় সন্তান আব্রাহামকে সঙ্গে করে এই অভিনেত্রীকে যেতে দেখেন অনেকেই। এসব কথা বেশ কয়েকবার প্রথম আলোর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে স্বীকারও করেছেন অপু বিশ্বাস। তবে অপুর মতো বুবলীকে শাকিব খানের বাসায় অতটা যাতায়াতের ব্যাপারটি তাঁদের ঘনিষ্ঠজনদের কেউ-ই নিশ্চিত করেননি।
এদিকে বেসরকারি টেলিভিশনে শাকিবকে জড়িয়ে বুবলীর দেওয়া সাক্ষাৎকারের কিছু অংশের কারণে বেশ মন খারাপ নাকি অপু বিশ্বাসেরও। এ কারণে ঈদের দিন অপু বিশ্বাস শাকিবের বাসায় যেতে চাননি। অভিমান করে বাসায় ছিলেন। পরে শ্বশুর-শাশুড়ির অনুরোধে শাকিবের বাসায় গিয়েছিলেন তিনি। শাকিব-অপুর এক ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, না যাওয়া পর্যন্ত শাকিবের বাবা না খেয়ে নাকি অপুর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। পরে সেখান থেকে কেউ একজন এসে অপু ও আব্রাহামকে শাকিবের বাসায় নিয়ে যান।
এ ব্যাপারে অপু বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সবকিছু খুলে বলতে চাননি। হাসতে হাসতে উল্টো এই প্রতিবেদককেই প্রশ্নে করেন,‘আপনি কোথা থেকে জানলেন এসব?’ এরপর তিনি বলেন, ‘রাগ-অভিমানের কিছু নাই। আমার মা-বাবা বেঁচে নেই। শ্বশুর-শাশুড়িকেই আপন মা-বাবার মতো পেয়েছি। আমার ননদ প্রিয় বান্ধবীর মতো। এটাই তো আমার জন্য সুখের, আনন্দের পরিবার।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাছে সন্তান, সন্তানের বাবাসহ আমার পরিবারই সবচেয়ে বড় ও আপন। তাঁদের মান-সম্মান যাতে নষ্ট না হয়, সেটাই আমাকে করতে হবে। আমি করিও। তা ছাড়া আমি তো অস্তিত্বসংকটে নেই। আমাকে তো প্রমাণ করে সম্পর্কের জায়গা দেখাতে হবে না।’ এ ব্যাপারে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আব্রাহাম তার দাদার বাড়িতে ঈদের দিনটা খুব মজা করেছে। আত্মীয়স্বজনও এসেছিলেন। সবাইকে নিয়ে আনন্দঘন দিন কেটেছে আমাদের। ওখান থেকে রাত এগারোটার পর আমার বসুন্ধরার বাসায় ফিরেছি।’