কথা ছিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ‘রক্তজবা’। হঠাৎ জানা গেল, শরীফুল রাজ অভিনীত ছবিটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আইস্ক্রিনে মুক্তি পাচ্ছে। এ ছাড়া ঈদে বিঞ্জে মুক্তি পাবে তাঁর সাত পর্বের ওয়েব সিরিজ ‘ইনফিনিটি ২’।
রাজ কোথায়
আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ না হলেও শরীফুল রাজ ও পরীমনি দুজনেই এখন আলাদা থাকেন। সন্তানের কারণে হঠাৎ হঠাৎ তাঁদের দেখা হয়ে যায়। এই যেমন ১০ জুন সন্তানের মাসিক জন্মদিনে দুজনের দেখা হয়েছিল। কিন্তু ১৮ জুন বাবা দিবসে সন্তানের কাছে ছিলেন না রাজ। কোনো ধরনের শুটিংয়েও নেই তিনি। তাহলে কোথায় রাজ?
২০ জুন সন্ধ্যায় খোঁজ নিতে ফোন করা হলে রাজ জানালেন, তিনি আছেন টেকনাফে। বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। তবে তাঁরা বিনোদন অঙ্গনের কেউ নন। কী করছিলেন? ‘ব্লাডি ড্যাডি’ দেখছি, বলেই হেসে ফেললেন। হাসছেন কেন? ‘না না, এমনি হাসছি। সিনেমার নামটা ইন্টারেস্টিং তো, তাই।’ ছবিটি দেখে কেমন লাগছে, জানতে চাইলে বললেন, ‘মাত্র শুরু করলাম। কয়েকটা দৃশ্য দেখলাম। ১৫-২০ মিনিটের হবে। ট্রেলার দেখে গল্পটা আমার কাছে ইন্টারেস্টিং লেগেছে।’
পরীর সঙ্গে দেখা প্রিয় ছবি
নিয়মিতই সিনেমা দেখেন শরীফুল রাজ। তবে সিনেমা দেখার ক্ষেত্রে কোনো রিভিউ তাঁকে আকৃষ্ট করে না। একা একাই ছবি দেখা বেশি পছন্দ। রাজ বললেন, ‘একা দেখতে ভালো লাগলেও যত দিন পরীর সঙ্গে ছিলাম, একসঙ্গে দেখতাম। দুজনের পছন্দও কাছাকাছি ছিল। ওর আর আমার সিনেমা দেখার সময়টা দারুণ কাটত। ভীষণ উপভোগ করতাম। বাসায় থাকলে আমরা প্রায়ই ছবি দেখতাম।’
পরীমনির সঙ্গে দেখা শরীফুল রাজের সবচেয়ে পছন্দের চলচ্চিত্র ‘প্যাসেঞ্জার’। একা একা যখন ছবি দেখেন, তখন পরীমনিকে মাঝেমধ্যে মিস করেন বলেও জানালেন। তবে এ-ও বললেন, ‘১০-১২ বছর তো একা একাই ছবি দেখছি, ওই অভ্যাস আবার শুরু হলো আরকি।’
দেশ-বিদেশের প্রচুর ছবি দেখা হয়েছে। এর মধ্যে তাঁর পছন্দের তালিকায় আছে ‘পারফিউম’। সেরা পাঁচ ছবির অন্য চারটি হচ্ছে ‘ইনডিসেন্ট প্রোপোজাল’, ‘গডফাদার’, ‘রং দে বাসন্তী’ ও ‘দেবদাস’। সেরা পাঁচ বাংলাদেশি ছবির মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে ‘ভাত দে’। অ্যাকশন সিনেমা পছন্দের কারণে ছোটবেলায় চিত্রনায়ক রুবেলকে ভালো লাগত বলেও জানালেন। এই নায়কের ‘লড়াকু’ তাঁর ভীষণ পছন্দের ছবি। এর বাইরে ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘বাবা কেন চাকর’ ও ‘সত্যের মৃত্যু নাই’ বারবার দেখতেও তাঁর ভালো লাগে।
প্রসঙ্গ ‘ইনফিনিটি ২’
সাত পর্বের ওয়েব সিরিজ ‘ইনফিনিটি ২’-এর ট্রেলার এরই মধ্যে মুক্তি পেয়েছে। ছবিটি সম্পর্কে জানাতে একটি সংবাদ সম্মেলনও করা হয়। রাজ বললেন, ‘যিনি ছবিটা বানিয়েছেন, তিনি আমার খুব কাছের একজন মানুষ। প্রযুক্তিজ্ঞান বেশ ভালো। চেষ্টা করছেন ভালো কিছু করার। আমার মনে হয়, অ্যাকশন সিরিজে এটা আমাদের বিনিয়োগ। আমরা যদি বড় ব্যানারে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে সফল হব। কাজটা দারুণ না হলেও ভিন্নধর্মী কিছু একটা হয়েছে, অনেকে পছন্দও করবে।’
বন্ধুর সঙ্গে ‘রক্তজবা’
বিয়ের আগে শরীফুল রাজ ও পরিচালক নিয়ামুল মুক্তা ঢাকার নিকেতন এলাকায় থাকতেন। দীর্ঘদিন একই বাসায় থাকলেও পরিচালক বন্ধুর প্রথম চলচ্চিত্র ‘কাঠবিড়ালি’তে দেখা যায়নি রাজকে। তবে ওই চলচ্চিত্রে ক্যামেরার পেছনের অনেক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। পরিচালক বন্ধুর দ্বিতীয় চলচ্চিত্র রক্তজবাতে নায়ক হয়েছেন রাজ। এই ছবিতে নুসরাত ইমরোজ তিশার বিপরীতে অভিনয় করেছেন রাজ।
রাজ বললেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে মনে হচ্ছে, এবার ঈদেও আমি আছি। কোথাও না কোথাও দর্শক আমাকে দেখতে পাবেন।’ ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি না পাওয়ায় খারাপ লাগছে কি না, জানতে চাইলে বললেন, ‘মন খারাপ হয়নি। হয়তো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এটাই ভালো সিদ্ধান্ত মনে করেছেন। তবে আমার চাওয়া, সঠিক প্রচারটা যেন করে কর্তৃপক্ষ। কারণ, ছবির গল্পটা অসাধারণ।’
মুক্তির অপেক্ষায় আছে রাজ অভিনীত ‘দেয়ালের দেশ’ ও ‘কাজল রেখা’। বছরের শেষ দিকে ছবি দুটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে বলে জানালেন রাজ।
দুই ছবি নিয়ে আগ্রহ
ঈদে প্রেক্ষাগৃহে নিজের কোনো ছবি মুক্তি না পেলেও দুটি ছবি দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন রাজ। প্রচার-প্রচারণার কারণে আগ্রহটা আরও বেড়েছে বলে জানান তিনি। একটি শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’, অন্যটি আফরান নিশোর ‘সুড়ঙ্গ’। রাজ বললেন, ‘প্রিয়তমা’ ছবিতে শাকিব ভাইয়ের ফার্স্টলুক দেখে তো জাস্ট ওয়াও লেগেছে। আমার মনে হয়, একজন ফিল্মস্টারের ওই ধরনের এন্ট্রি, ওই রকম ধামাকা দরকার।
‘সুড়ঙ্গ’ নিশো ভাইয়ের প্রথম সিনেমা। এর আগে ফিকশন, ওটিটি করার পর এবার ফিল্ম করেছেন। সব মিলিয়ে দুটি সিনেমা নিয়ে আমি খুব আশাবাদী। মনে হয় এবার দারুণ কিছু হবে। এমনিতে আমি নিয়মিত প্রেক্ষাগৃহে বসে সিনেমা দেখি। এবারও ব্যতিক্রম হবে না।’