অপু-বুবলী দুজনেই এখন আমার কাছে অতীত: শাকিব খান

একটি হিরের নাকফুল আর পুরোনো একটি ছবিকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো বাগ্‌যুদ্ধে মেতেছেন অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী। এ দুই ঘটনারই কেন্দ্রে যেহেতু শাকিব খান, তাই তাঁর সঙ্গে এসব নিয়ে কথা বলেছে ‘বিনোদন’।

অপু বিশ্বাস, শাকিব খান এবং বুবলী
প্রশ্ন

কেমন আছেন?

ভালো আছি।

প্রশ্ন

এ মুহূর্তে কী নিয়ে ব্যস্ত?

জিমে সময় দিচ্ছি। নতুন ছবির প্রি-প্রোডাকশন চলছে। এর মধ্যে ‘আগুন’ ছবির শুটিংও করছি।

প্রশ্ন

নতুন ছবির কাজ শুরু করবেন কবে?

শিগগিরই শুরু করব। তাই প্রি-প্রোডাকশনে আমাদের বেশি সময় যাচ্ছে। টেবিলওয়ার্ক শেষ করে তবে ছবির শুটিংয়ে নামব।

প্রশ্ন

শবনম বুবলীকে হিরের নাকফুল উপহার দেওয়া নিয়ে অনলাইনে অনেক কথা হচ্ছে। ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে যেহেতু আপনি, তাই এ বিষয়ে ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং অন্য সবাই আপনার বক্তব্য জানতে চান।

ডায়মন্ডের নাকফুল তিনি উপহার পেতেই পারেন। ১টা কেন, ১০টাও পেতে পারেন। তাঁর আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবেরা আছেন। তবে সবাইকে আশ্বস্ত করে একটা কথা বলতে চাই, কোনো ধরনের ডায়মন্ড নাকফুল আমি তাঁকে উপহার দিইনি। সত্যি কথা বলতে, তাঁর সঙ্গে আমার কোনো ধরনের যোগাযোগ নেই। উপহার দেওয়া কিংবা উইশ করা—কোনোটাই আমার পক্ষ থেকে হয়নি। সন্তানের প্রয়োজনে সে আমাকে বা আমি তাকে লিখলেও, তা শুধু শেহজাদকে কেন্দ্র করে যতটুকু দরকার ততটুকুই হয়, এর বাইরে আর কোনো কিছুর প্রশ্নই আসে না।

‘অন্তরাত্মা ’ ছবির সেটে শাকিব খান
প্রশ্ন

জন্মদিনের পরদিনই বুবলী তাঁর ফেসবুক পেজে তাজমহলে আপনার সঙ্গে একটি স্থিরচিত্র পোস্ট করে লিখেছেন, ‘যে জায়গাটায় আমরা দাঁড়িয়ে আছি, এটি সম্রাট শাহজাহান এবং মমতাজের শোবার ঘর। বিয়ের পর শুটিংয়ে দুজনেই খুব ব্যস্ত ছিলাম, কিন্তু তার ফাঁকেও খুব অল্প সময়ের জন্য ভারতের উত্তর প্রদেশে আগ্রায় অবস্থিত ভালোবাসার সবচেয়ে বড় নিদর্শন তাজমহল দেখতে নিয়ে গিয়েছিলেন উনি আমাকে।’ ঘটনাটি যদি একটু পরিষ্কার করে বলতেন।

ছবিটি বেশ কয়েক বছর আগের। ‘নাকাব’ সিনেমার শুটিং সময়ের। ২০১৮ সালের শুরুর দিকে ‘নাকাব’ সিনেমার শুটিং করছিলাম। কপিরাইট ইস্যু নিয়ে তিন সপ্তাহ শুটিং বন্ধ থাকায় আমিও অবসর পাই। সেই সময়ে ব্যক্তিজীবন নিয়ে আমি বেশ টানাপোড়েনে ছিলাম। তাই আজমির শরিফ ঘুরে আসার পরিকল্পনা করি। বুবলীর সঙ্গে যেহেতু তখন যোগাযোগ হতো, একটা সম্পর্ক ছিল, সে আমাকে অনুরোধ করেছিল তাকে নিয়ে যেতে। যেহেতু আজমির শরিফে যাওয়ার পথে আগ্রার তাজমহল, সেই সুযোগে সেখানেও ঘুরে আসা হয়। ছবিটি তখনই তোলা, তা-ও প্রায় বছর পাঁচেক হবে। পাঁচ বছর আগের এই ছবি পোস্ট করে বুবলী কী বোঝাতে চাইছে, তা সে নিজেই ভালো জানে।

শাকিব খান ও বুবলী
প্রশ্ন

অপু বিশ্বাসের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক ভেঙে গেছে। আপনার কথাবার্তা শুনে এখন মনে হচ্ছে, বুবলীর সঙ্গেও কোনো ধরনের সম্পর্ক আপনার আর নেই।

চলচ্চিত্র অঙ্গনে আমার অগ্রজ একজন জনপ্রিয় নায়ক, আমার প্রথম সংসারের সময়ই বলেছিলেন, আমাদের দেশে এ অঙ্গনের দুজনের মধ্যে সংসার করাটা বেশ ডিফিকাল্ট। তারপরও একটা কথা বলতে চাই, মানুষ সম্পর্ক করে সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে। সংসার ভাঙার জন্য কেউই সম্পর্ক করে না। আমিও তেমনটাই ভেবে করেছি। কিন্তু সম্পর্কটা করতে গিয়ে একটা সময় দেখলাম, তা আর হেলদি জায়গায় নেই। চেষ্টা হলো, কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হলো। তারপর মনে হলো, আনহেলদি কোনো সম্পর্ক নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। এমনকি আমার মনে হয়, মা-বাবার আনহেলদি সম্পর্কের মাঝখানে সন্তান বেড়ে ওঠার চেয়ে আলাদা করে বেড়ে ওঠাটাই তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো।

সিনেমার দৃশ্যে অপু বিশ্বাস ও শাকিব খান। ছবি: সংগৃহীত
প্রশ্ন

শোনা যায়, অপু বিশ্বাসের সঙ্গে আপনার এখন ভালো যোগাযোগ। আপনার বাসায়ও তাঁর নিয়মিত যাতায়াত। তার মানে কি আবার আপনারা এক হচ্ছেন?

এমন সম্ভাবনা একেবারেই নেই। আব্রাহাম খান জয়ের বাবা যেমন আমি শাকিব খান, তেমনি মা হচ্ছেন অপু বিশ্বাস। বাবা হিসেবে সন্তানের সঙ্গে আমার দেখা হয়। জয় মাঝেমধ্যে আমার সঙ্গে থাকে। ওর দাদা-দাদির সঙ্গে থাকে। জয় যেহেতু ছোট, একা আসতে পারে না, তাই জয়কে আনার অছিলায় তার মা আসে। কিন্তু আমাদের মধ্যে সন্তানের বিষয়ের বাইরে আর কোনো কথা হয় না। জয়ের স্কুলেও যাওয়া হয় মাঝেমধ্যে, সেখানেও দেখা হয় আমাদের। শেহজাদ খান বীরের সঙ্গেও আমার দেখা হবে। সে আমার সঙ্গে থাকবে। এখন সে অনেক ছোট, তাই আলাদা করে আমার কাছে রাখতে পারি না, তবে শিগগিরই তারও আসা-যাওয়া হবে আমার বাড়িতে। দাদা-দাদি, ফুফা-ফুফুর আদর পাবে। শেহজাদ যখন স্কুলে যাওয়া শুরু করবে, তখন তার মায়ের সঙ্গেও আমার দেখা হবে—এটা খুবই স্বাভাবিক। তবে একটা কথা নিশ্চিত করে বলতে চাই, অপু বিশ্বাস ও বুবলী দুজনেই এখন আমার কাছে অতীত। তাদের সঙ্গে কোনো অবস্থায় আমার সম্পর্ক জোড়া লাগার সম্ভাবনা নেই। অতীত মানে তারা অতীতই। তারা আমার দুই সন্তানের মা, সন্তানের মা হিসেবে তাদের প্রতি আমার যে সম্মান ও সম্পর্কটা থাকা দরকার, স্রেফ সেটুকুই থাকবে।