চিত্রনায়িকা মৌসুমীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। দেশের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেক প্রত্যাখ্যান মামলায় মৌসুমীর বিরুদ্ধে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। গ্রেপ্তারসংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৬ অক্টোবর দিন ধার্য হয়েছে।
জানা গেছে, একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১ লাখ ৬ হাজার ২১১ টাকার চেক প্রত্যাখ্যানের অভিযোগে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর ঢাকার একটি আদালতে চিত্রনায়িকা আরিফা পারভিন জামান মৌসুমীর বিরুদ্ধে মামলা করেন প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তাঁকে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন। আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাঁর গুলশানের বাসায় সমন পাঠানো হয়। সেখান থেকে সমন ফেরত গেলে ২৮ এপ্রিল তাঁর বসুন্ধরা আবাসিকের বাসায় আবার সমন পাঠানো হয়। সমন জারির পর মৌসুমী আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় ২৪ জুলাই তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
মৌসুমী এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় তাঁর চিত্রনায়ক স্বামী ওমর সানীর সঙ্গে।
তিনি প্রথম আলোকে বললেন, ‘এর চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ টাকার, যেমন এক কোটি, দুই কোটি, তিন কোটি, পাঁচ কোটি টাকার মতো শতাধিক ঋণখেলাপিকে আমি চিনি। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে তারা পরিশোধ করেনি। সেখানে মৌসুমীর কয়েক লাখ টাকার ঋণের বিষয়টি মামলা পর্যন্ত নিয়ে গেছে! এটা মৌসুমীকে অসম্মান ও অপদস্থ করা ছাড়া আর কিছুই নয়। নামটা যেহেতু মৌসুমী, তাই ভাইরাল করার চেষ্টা করল। সামান্য কিছু টাকার জন্য মৌসুমীকে যদি অসম্মান করা হয়, তাহলে অন্য কোটি কোটি ঋণখেলাপির নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না কেন!’
ঘটনা প্রসঙ্গে ওমর সানী বলেন, ‘মার্সিডিজ গাড়ি বাবদ মৌসুমী ঋণ নিয়েছিল। ৮ কি ১১টা চেকও দেওয়া আছে। মৌসুমী দেশের বাইরে যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমি তাদের বলেছি, আমি তো গুলশানে থাকি না। বসুন্ধরায় থাকি। চিঠি ওখানে পাঠিয়ে দিয়েন। এরপর বলল ঠিক আছে, পাঠিয়ে দিয়েছি। এরপরও তারা গুলশানের সেই ঠিকানায় চিঠি পাঠায়। এরপর আমি বলেছি, আমাদের একটা বিপর্যয় ঘটেছে। টাকার কিস্তিটা আরেকটু কমিয়ে দিলে ভালো হয়। এই যেমন ৩০, ৪০, ৫০ বা ৬০ হাজার টাকা—যখন যা পারি দিয়ে দেব। আপনারা চেক স্থগিত করেন। আমাকে কিছুদিন সময় দেন। এক লাখ টাকা আমার পক্ষে এই মুহূর্তে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, ওই সময়ে মৌসুমী ও আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নিয়েও জটিলতা হয়। তাই লেনদেন বন্ধ ছিল। মৌসুমী যে চেকগুলো দিয়েছিল, সেই অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ ছিল। সবকিছু বুঝিয়ে বলার পরও তারা কোনো কথা শোনেনি। আমি চেয়ারম্যান বরাবর চিঠিও লিখেছি। আমাকে উল্টো বলেছে, গাড়ি হস্তান্তর করেন। আমার সঙ্গে তারা ভালো আচরণও করেনি। একটা পর্যায়ে আমাকে বলে যে উনি (মৌসুমী) পালিয়ে গেছেন। এরপর আমি বলেছি, স্টুপিডের মতো কথা বলেন কেন? এই সামান্য টাকার জন্য মৌসুমী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে! আমি ওর হাজব্যান্ড, আমি বারবার বলছি, আপনারা এসব ভাববেন কেন।’
এখন আপনারা কী করবেন জানতে চাইলে ওমর সানী বললেন, ‘এখন আমি আইনগতভাবে সমাধানের চেষ্টা করব। যে গাড়িটা আছে, তা বিক্রি করে আমি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি। আবারও বলছি, আমি মনে করি, এটা মৌসুমীকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য করেছে।’