সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল, ঋতুপর্ণার সঙ্গে প্রযোজনাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও চূড়ান্ত কথাবার্তা হয়েছিল। জুলাইয়ে পরিচালক রাশিদ পলাশ জানিয়েছিলেন, তাঁর পরিচালনায় তৈরি ‘তরী’ সিনেমার একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করবেন ভারতের ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। কয়েক মাসের ব্যবধানে পাল্টে গেছে সিদ্ধান্ত। আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে ‘তরী’ সিনেমার পরিচালক জানালেন, ঋতুপর্ণা নন, ওই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়েছে শ্রীলেখা মিত্রের সঙ্গে। ভিসাপ্রক্রিয়া শেষে আগামী বছরের জানুয়ারিতে ঢাকায় আসবেন। এরপর শুটিংয়ে অংশ নেবেন।
ঋতুপর্ণাকে বাদ দেওয়ার নেপথ্য কারণ কী, জানতে চাইলে পরিচালক রাশিদ পলাশ বলেন, ‘ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের চিত্র অনেকটাই পাল্টে গেছে। আমাদের প্রযোজনা–প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই মুহূর্তে ঋতুপর্ণাকে নিয়ে কাজ করতে চাইছেন না। কারণ হিসেবে আমাদের শুটিং লোকেশন যেখানে, সেখানে তাঁর যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব না।’
কেন নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়? এমন প্রশ্নে রাশিদ পলাশ বলেন, ‘প্রথমত বাংলাদেশে ঋতুপর্ণার পরিচিতি অনেক বেশি। তাঁকে অনেকেই চিত্রনায়ক ফেরদৌসের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে জানেন। এদিকে ফেরদৌস আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য, এটাও একটা বড় কারণ হিসেবে দেখা গেছে। আমাদের শুটিং হবে এমন একটি জায়গায়, সেখানে সাধারণ মানুষের আনাগোনা অনেক বেশি। এ রকম একটা পরিবেশে ঋতুদির মতো একজন অভিনয়শিল্পীর কোনো অসম্মান হোক, তা আমরা কেউ চাই না। তবে এটাও ঠিক, শ্রীলেখা মিত্রও একজন বড় মাপের শিল্পী। আমাদের গল্পের যে চরিত্র, তার সঙ্গে তিনিও ভালোভাবে মানানসই। এ ছাড়া অনেকে এমনটাও বলছেন, ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় শ্রীলেখা দিদি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সপক্ষে সরব ছিলেন। সবাই তাই মত দিয়েছেন, শ্রীলেখা মিত্রকে “তরী” সিনেমার রানী চরিত্রের জন্য চূড়ান্ত করতে। আমরাও তা–ই করলাম।’
পরিচালক জানালেন, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে দিনাজপুরে ‘তরী’ সিনেমার প্রথম লটের কাজ শুরু হয়। মার্চের প্রথম সপ্তাহে সেই কাজ শেষ হয়। আগামী বছরের জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে ছবিটির দ্বিতীয় ও শেষ লটের শুটিং শেষ করা হবে।
নির্মাতা জানান, চিত্রনাট্যে ঋতুপর্ণার চরিত্রের যে পরিধি ছিল, সেটি আরও বাড়ছে শ্রীলেখাকে ভেবে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ও ভারতের বর্তমান যে সম্পর্ক, তাতে ভিসা জটিলতায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে কি না, জানতে চাইলে পলাশ বলেন, ‘প্রযোজনাপ্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে ভিসাপ্রক্রিয়া শুরু করেছে। আশা করছি কোনো জটিলতা হবে না।’ ‘তরী’ সিনেমার গল্প লিখেছেন আহাদুর রহমান। চিত্রনাট্য করেছেন গোলাম রাব্বানী। প্রযোজনায় আছে পুণ্য ফিল্মস।