ফেরদৌস ও ঋতুপর্ণা
ফেরদৌস ও ঋতুপর্ণা

ঋতুপর্ণাকে কেন রাজনীতিতে চাইলেন ফেরদৌস

চিত্রনায়ক থেকে সংসদ সদস্য, ফেরদৌসকে এখন রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ ও সেমিনার নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। একই সঙ্গে চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আয়োজনে তাঁর উপস্থিতি আগের চেয়ে বেশি। ঢাকার পাশাপাশি কলকাতার চলচ্চিত্রে অভিনয় করা ফেরদৌসের সেখানকার নায়িকা ঋতুপর্ণার সঙ্গে রয়েছে দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ফেরদৌস কলকাতায় গেলে বা ঋতুপর্ণা ঢাকায় এলে দুজনেই দুজনের বাসার অতিথি হন। এবার ঋতুপর্ণা এসেছেন ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানের অতিথি হতে। একই অনুষ্ঠানে ছিলেন ফেরদৌসও। সেই অনুষ্ঠানে একপর্যায়ে ঋতুপর্ণাকে রাজনীতিতে দেখার ইচ্ছা পোষণ করেন ফেরদৌস।

ফেরদৌস ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত

অভিনয়ের পাশাপাশি ফেরদৌস বেশ কয়েক বছর ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। আওয়ামী লীগের হয়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে তো চিত্রনায়ক ফেরদৌস এখন সংসদ সদস্য। তিনি মনে করেন, রাজনীতির মাধ্যমেই সমাজ পরিবর্তনে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ সম্ভব! সেই বিশ্বাস থেকে এবার পশ্চিমবঙ্গের দীর্ঘদিনের সহ-অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনকেও তাঁর দেশে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানালেন!

ফেরদৌস ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত

গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসেন ঋতুপর্ণা। উদ্দেশ্য আগামী এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ‘সুচিত্রা সেন আন্তর্জাতিক বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব-২০২৪’-এর সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া। এদিন জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা ছাড়াও অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন নায়ক-সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ। দুজনের বন্ধুত্বের বয়স প্রায় দুই যুগ!

ভারতীয় পরিচালক বাসু চ্যাটার্জির ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে বাংলাদেশি ফেরদৌসের। এই একটি চলচ্চিত্র তাঁকে দুই বাংলায় দারুণ একটা অবস্থান করে দেয়। এরপর ঢাকা ও কলকাতায় সমানতালে কাজ করতে থাকেন। কাজের সূত্রে ওপার বাংলার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের সঙ্গে চমৎকার বন্ধুত্ব তৈরি হয়। পেশাদার সম্পর্ক ছাপিয়ে তা দুই পরিবারের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরেই একে অপরের বাড়িতে অতিথিও হন। ফেরদৌস ও ঋতুপর্ণা প্রথম অভিনয় করেন ‘ওস্তাদ’ নামের একটি চলচ্চিত্রে। এরপর তাঁরা জুটি হয়ে কলকাতায় ৩০টির মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস সংসদ সদস্য হওয়ার পর প্রথমবার বাংলাদেশে এলেন ভারতীয় এই অভিনেত্রী। তাঁকে বরণ করলেন দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’ দিয়ে! ঋতুপর্ণার হাতে তুলে দিলেন স্বর্ণের একটি নৌকা। সেই সঙ্গে পরামর্শ দিলেন, আগামী দিনে যেন ঋতুপর্ণাও নিজের দেশে রাজনীতিতে সক্রিয় হন!

ঋতুপর্ণাকে রাজনীতিতে দেখতে চান জানিয়ে ফেরদৌস এদিন বলেন, ‘মানুষের সেবক হওয়ার মতো সব গুণ ঋতুপর্ণার মধ্যে আছে। আমি চাইব, তিনি যেন আমার দেখানো পথে হেঁটে রাজনীতিতে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে এই ক্ষমতাটুকু না দিতেন, তাহলে কিন্তু মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারতাম না। আমি চাই, ভারত সরকার এটা যেন ভালোভাবে দেখে। তাহলে আমরা দুই বন্ধু মিলে দুই দেশের সম্পর্ক-মৈত্রী আরও দৃঢ় করতে পারব।’

ঋতুপর্ণাকে নৌকা দিয়ে বরণ করে নেওয়ার বিষয়ে ফেরদৌস বলেন, ‘ঋতুপর্ণার সঙ্গে আমার ২৫ বছরের পথচলা। আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি, মানুষের পাশে থেকে তিনি কীভাবে সহযোগিতা করেন। মানুষের কল্যাণ করার জন্য একটা মানুষের মধ্যে যেসব গুণ থাকতে হয়, ঋতুপর্ণার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। তাঁর ভালো কাজগুলো আমাকে অনেক বেশি প্রভাবিত করেছে। সে জন্যই হয়তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা ১০ আসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসনে নৌকা প্রতীক আমার হাতে তুলে দিয়েছেন। ঋতুপর্ণা এ দেশে এসেছেন, তাই তাঁকে আমাদের নৌকা দিয়ে বরণ করে নিয়েছি।’