শমী কায়সার নামটা শুনলেই নব্বই দশকের কথা মনে পড়ে যায়। ওই সময়ের ব্যস্ত এই অভিনেত্রীকে এখন ব্যবসা–বাণিজ্যবিষয়ক সভা, সেমিনার, উদ্যোক্তা সম্মেলন আর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কথা বলতেই বেশি দেখা যায়। যে নাটক দিয়ে তাঁর এত পরিচিতি, সেখানে তাঁর উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তবে নতুন খবর, শমী কায়সারকে আবার চলচ্চিত্রের মাঠে দেখা যাবে। তবে অভিনেত্রী নয়, প্রযোজক হিসেবে। সরকারি অনুদানের সিনেমা ‘দিগন্তে ফুলের আগুন’ দিয়ে নিজের অঙ্গনে ফিরছেন তিনি।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অনুদানপ্রাপ্ত ছবি ‘দিগন্তে ফুলের আগুন’। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করছেন ওয়াহিদ তারেক। এই ছবির আগে তিনি ‘আলগা নোঙর’ নামের একটি চলচ্চিত্র বানিয়েছেন। জানা গেছে, ‘দিগন্তে ফুলের আগুন’ ছবির মাধ্যমে পান্না কায়সারের দৃষ্টিকোণ থেকে শহীদুল্লা কায়সারকে আবিষ্কার করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার ইস্কাটনের একটি বাড়িতে শুরু হয়েছে এই ছবির শুটিং।
ছবিতে শহীদুল্লা কায়সার ও পান্না কায়সারের চরিত্রে অভিনয় করছেন মোস্তফা মন্ওয়ার ও বিদ্যা সিনহা মিম। অভিনয়শিল্পী নির্বাচনেই অনেক সময় লেগেছে বলে জানান শমী কায়সার। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাসযোগ্য কাস্টিংয়ের জন্য সময়টা লেগে যায়। কোন কোন চরিত্রের জন্য কাকে কাকে নেব, এসব নিয়ে নিজেদের মধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে। অনেকেই আমাদের ভাবনায় ছিল। পান্না কায়সার চরিত্রে মিম এসেছে, অনেক খুশি হয়েছি। শহীদুল্লা কায়সারের চরিত্রে মন্ওয়ারকে খুঁজে পেতেও আমাদের অনেক সময় লেগেছে। আমার মনে হয়, ভালো কাস্টিং হয়েছে।’
পান্না কায়সার ও শহীদুল্লা কায়সার চরিত্রে মিম ও মন্ওয়ারকে কেন উপযুক্ত মনে হলো? জানতে চাইলে শমী বলেন, ‘পান্না কায়সার সাদামাটা গ্রামের এক মেয়ে, একটু লম্বা, শারীরিক গড়নটা যেমন, সেটার সঙ্গে মিম অনেকখানিই যায়। আর মিমের অভিনয়দক্ষতাও আছে। শহীদুল্লা কায়সারের চরিত্রে মন্ওয়ারকে নেওয়ার বিষয়ে আমাদের ভাবনায় ছিল, ব্যক্তিত্বের যে গভীরতা দরকার, তা তার মধ্যে যথাযথভাবে আছে।’
শমী কায়সার প্রযোজিত ছবিতে অভিনয় করতে পেরে উচ্ছ্বসিত মিম। জানান, ‘মাস দুয়েক আগে শমী আপু ফোন করলেন। গল্পটা শোনালেন। তাঁর মায়ের চরিত্রে আমি ছাড়া কাউকে দেখছেন না শুনে আমি তো অবাক! যে শমী আপুকে ছোটবেলা থেকে দেখে বড় হয়েছি, যাঁর অভিনয় প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করেছে, ব্যক্তিত্বে অনুপ্রাণিত হয়েছি, সেই শমী কায়সারের মায়ের চরিত্র! চোখ বন্ধ করেই হ্যাঁ বলে দিয়েছি।’
তিন দশকের অভিনয়জীবনে নানা চরিত্রে দর্শকের সামনে হাজির হয়েছেন শমী কায়সার। নাটক ও চলচ্চিত্রের অনেক পরিচালকের সঙ্গেও রয়েছে কাজের অভিজ্ঞতা। বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণসংক্রান্ত কাজেও জড়িত ছিলেন। প্রশ্ন ছিল, মা–বাবার জীবনের গল্প নিয়ে নির্মীয়মাণ চলচ্চিত্রটির পরিচালনা কি তিনি নিজেই করতে পারতেন না? ‘ডিরেক্টর হওয়ার জন্য যে মেধার দরকার, তা আমার নেই। আমি গল্প, চিত্রনাট্য আর অভিনয়টাই বুঝি। এটাও বুঝি, কোন গল্পটা কী রকম হওয়া উচিত। এটা মনে করি, যাঁর ডিরেকশন দেওয়া উচিত, তাঁরই সেটা দেওয়া ভালো। আমি এক্সপেরিমেন্ট করতে চাই না। এ ধরনের গল্পে তো আরও নয়। এই ছবি বানাতে হলে বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভালোভাবে বুঝতে হবে। এই জায়গায় তারেক সাংঘাতিকভাবে পরিষ্কার,’ বলেন শমী কায়সার।